সংলাপে টেকসই বেড়িবাঁধের পক্ষে একাত্বতা ঘোষণা করলেন মাননীয় মন্ত্রী

জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগকে মাথায় রেখে উপকূলীয় এলাকায় স্থায়ী ও টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবিতে ২ জুন (বুধবার) সন্ধ্যা ৭:০০ টায় বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা লিডার্স ও সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলন এর আয়োজনে অনলাইনে জলবায়ু পরিবর্তন ও দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলে দুর্যোগের ঝুঁকি শীর্ষক জাতীয় সংলাপের আয়োজন করা হয়।

উক্ত সংলাপে অনলাইনে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী মোঃ শাহাব উদ্দিন, এমপি, বিশেষ অতিথি পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম, এমপি, সঞ্চালক হিসাবে অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্র, মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন লিডার্স এর নির্বাহী পরিচালক মোহন কুমার মন্ডল।

সংলাপে বক্তৃতা করেন সাতক্ষীরা-৩ এর মাননীয় সংসদ সদস্য ও সাবেক স্বাস্থ্য মন্ত্রী আ.ফ.ম রুহুল হক, খুলনা-৬ এর মাননীয় সংসদ সদস্য মোঃ আক্তারুজ্জামান বাবু, মাননীয় সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) যুগ্ম সম্পাদক মিহির বিশ্বাস, কাওছার আলম, ৭১ টিভির যুম্ম প্রধান বার্তা সম্পাদক পলাশ আহসান, বাগেরহাট সদর উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রিজিয়া পারভীন, সাতক্ষীরা নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আবুল কালাম আযাদ, জেসমিন প্রেমা, কেইচএন এর মাটিলদাটিনা বৈদ্য প্রমুখ।

বিশেষ অতিথি বলেন, “টেকসই বেড়িবাঁধের জন্য যে সব প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে সেগুলো একনেকে পাশের অপেক্ষায় আছে। আগামী এক বছরের মধ্যে প্রকল্প কার্যক্রম শুরু হবে বলে তিনি নিশ্চিত করেন এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে সরাসরি নির্দেশনা দিয়েছেন বলে তিনি জানান।”

প্রধান অতিথি বলেন, “প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাংলাদেশের নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। আইলার আঘাতে দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূল ক্ষত বিক্ষত হয়। যার ফলে ধংস হয় সম্পদ। আম্ফানেও পানির সংকট দেখা দেয়। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য সরকার বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। সরকার ন্যাশনাল ্এডাপটেশন প্লান বাস্তবায়নের জন্য ৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বাজেট করেছে।

এছাড়া আরো কয়েকটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, শুধু বেড়িবাঁধ নয়, পুরো উপকূলের উন্নয়নে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সুন্দরবন ও নদী সুরক্ষা, খাবার পানি সমস্যার সমাধানসহ অন্যান্য সমস্যাগুলো সমাধানের প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী স্থায়ী বাঁধ করতে তিনি একমত পোষণ করেন। বেড়িবাঁধের পাশে গাছ লাগাতে হবে ফলে বাঁধ মজবুত হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

সংলাপে গৃহীত সুপারিশে বলা হয়, জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগকে মাথায় রেখে স্থায়ী ও মজবুত বেড়িবাঁধ নির্মাণ করতে হবে, যার নিচে ১০০ ফুট, উপরে ৩০ ফুট এবং যার উচ্চতা হবে ৩০ ফুট। বাঁধ রক্ষণাবেক্ষনের জন্য জরুরি তহবিল গঠন ও বাঁধ ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় সরকারকে সম্পৃক্ত করতে হবে। ওয়াপদা বাঁধের ১০০ মিটারের মধ্যে চিংড়ি বা কাঁকড়ার ঘের তৈরিতে সরকারের দেওয়া নিষেধাজ্ঞা দ্রুত কার্যকর করতে হবে।

উপকূলীয় জনগণের নিরাপদ খাবার পানির টেকসই ও স্থায়ী সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। সর্বোপরি উপকূলের উন্নয়নে পৃথক বোর্ড গঠনের সুপারিশ করা হয়।

আরো পড়ুন:
সিলেটে সিটি কর্মচারী ও রিক্সা শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষ

সংলাপে পরিবেশ ও নাগরিক আন্দোলনের প্রতিনিধিরা বলেন, উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষের জীবন-জীবিকা নির্ভর করে বেড়িবাঁধের ওপর। বাঁধের ক্ষতি হলে তাদের সবকিছু ভেসে যায়। বাড়িঘর নষ্ট হয়, ফসলের ক্ষতি হয়। তাই ওই অঞ্চলের মানুষের কাছে জরুরি খাবার না দিয়ে বাঁধটা শক্ত করে বানিয়ে দেওয়ার দাবিটাই প্রধান।