বিজিবি মোতায়েনের পরেও স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে ফেরিঘাটে ঘরমুখো মানুষের ঢল

স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে ফেরিঘাটে ঘরমুখো মানুষের ঢল থামাতে শিমুলিয়া ফেরিঘাটে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) মোতায়েন করা হয়েছে। তবে আজ রবিবার (৯ মে) সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ফেরিঘাটে বিজিবি মোতায়েন করা হয়নি।

এদিকে, শিমুলিয়া ফেরিঘাটে আজও ঘরমুখো মানুষের ভিড় রয়েছে। তবে পাটুরিয়া ফেরিঘাটে শনিবারের চেয়ে আজ যাত্রী এবং যানবাহনের চাপ একেবারেই কমে গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ফেরিঘাটে ঘরমুখো মানুষের চাপ সামলাতে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। বিজিবি সদস্যরা লোকজনকে ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। কিন্তু ঘরমুখো মানুষ বিজিবি সদস্যদের কথার তোয়াক্কা করছেন না। তারা ফেরির আশায় ঘাটেই ভিড় করছেন। বিভিন্নভাবে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন শিমুলিয়া ঘাট পৌঁছাচ্ছেনে। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে শিমুলিয়া ফেরিঘাটে হাজার হাজার মানুষের ভিড় ছিল। সকাল থেকেই অটোরিকশা, মাইক্রোবাস, প্রাইভেট কার, মোটরসাইকেল, ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সা যোগে ঘরমুখো লোকজন শিমুলিয়া ফেরি ঘাটে এসে জড়ো হয়। ফেরি ঘাটে এসে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে শত শত মানুষ হুড়মুড় করে দৌড়ে ফেরিতে উঠে পড়ে। লাশবাহী এবং জরুরি পচনশীল পণ্যবাহী যানবাহন পারাপারের জন্য এই ফেরি চালু রাখা হলেও যাত্রীর চাপের কারণে যানবাহন ফেরিতে উঠতে পারেনি।

বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শিমুলিয়া ফেরিঘাটে মানুষের ভিড় বেড়েই চলছে। শিমুলিয়া ফেরিঘাটে বিজিবি সদস্যদের নজর এড়িয়ে লোকজন ভাগ্যকুল, মাঝিবাড়িসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকা দিয়ে ফেরিঘাটে পৌঁছে যাচ্ছেন। প্রচন্ড রোদ উপেক্ষা করে লোকজন ঘাটের পল্টুনের উঠে ফেরির অপেক্ষায় রয়েছে। ফেরিতে যাত্রী পারাপার করা হবে না বলে জানানোর পরেও কেউই ফেরিঘাট ছাড়ছে না।

অপরদিকে, ব্যস্ততম মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ফেরিঘাটে আজ সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত বিজিবি মোতায়েন করা হয়নি। ঘাটের সামনে স্থানীয় পুলিশ সদস্যরা তাবুতে বসে অলসভাবে সময় কাটাচ্ছেন। এর কারণ হচ্ছে, ব্যস্ততম এই ফেরিঘাটে আজ রবিবার যানবাহন ও ঘরমুখো মানুষের চাপ একেবারেই নেই। সকাল থেকেই এই ঘাটে অল্প কিছু মানুষ ও কয়েকটি যানবাহন পৌঁছে। তবে পুলিশের বাধার মুখে কিছুক্ষণ পর ব্যক্তিগত যানবাহনগুলো আবার ফিরেও যায়।

স্থানীয়রা জানায়, শনিবার পাটুরিয়া ফেরিঘাটের হাজার হাজার মানুষের ভিড় ছিল। গভীর রাত অব্দি এই ভিড় আরও বাড়তে থাকে। রাতের একপর্যায়ে এসব যাত্রীদের কয়েকটি ফেরির মাধ্যমে পার করে দেওয়া হয়। এর ফলে অল্প সময়ের মধ্যেই পাটুরিয়া ফেরি ঘাটে মানুষের ভিড় কমে যায়। এছাড়া ফেরিঘাটে বিজিবি মোতায়নের খবর এবং ভোগান্তির খবর গণমাধ্যমে প্রকাশের পর লোকজন এই ফেরিঘাট ব্যবহার না করে বিকল্প উপায়ে অন্য রাস্তা দিয়ে চলাচল করছে।

অন্যদিকে, আরিচার পাটুরিয়া ফেরিঘাটে পৌঁছানোর জন্য মহাসড়কের ধরলা ব্রিজসহ দুটি পয়েন্টে বিজিবি ও পুলিশ মোতায়েনের পর ফেরিঘাটে যানবাহন এবং লোকজনের যাওয়া কমেছে। এসব কারণেই পাটুরিয়া ফেরিঘাটে আর কোনো যাত্রী ও যানবাহনের ভিড় নেই।

এদিকে, রাজধানীর বিভিন্নস্থানে যানবাহনে পুলিশ সকাল থেকেই তল্লাশি চালাচ্ছে। উত্তরামূখী যানবাহনগুলোকে বিভিন্ন চেকপোষ্টে থামিয়ে যাত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে এবং কোথায় যাচ্ছে তা জানতে চাচ্ছে পুলিশ। যেসব যানবাহনের যাত্রীদের যুক্তি সঠিক মনে হয়না তাদেরকে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তবে গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি একেবারেই মানার কোনো বালাই নাই। অর্ধেক যাত্রী পরিবহনের কথা থাকলেও কোনো পরিবহন তা মানছে না। যাত্রীদের মধ্যেও এ ব্যাপারে কোনো সচেতনতা লক্ষ্য করা যায়ানি।

বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়কে যানবাহনের চাপ গতকালের চেয়ে আরও বেড়েছে। আমিনবাজার থেকে দূরপাল্লার কিছু বাস যাত্রী নিয়ে চলাচল করছে। ঢাকা-গাজীপুর মহাসড়কেও যানবাহনের চাপ রয়েছে। টঙ্গী থেকে জয়দেবপুর চৌরাস্তার বিভিন্ন স্থান থেকে বিভিন্ন রুটের আন্তঃজেলা বাস চলাচল করছে। সকাল থেকে জামালপুর, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, শেরপুর সহ বিভিন্ন রুটের বাস যাত্রী নিয়ে চলাচল করছে বলে জানা গেছে। এছাড়া সাভার, আশুলিয়া, বাইপাইল, এলাকা থেকেও যাত্রী নিয়ে দূরপাল্লার বাস চলাচল করছে বলে জানা গেছে।