উন্নত চিকিৎসার উদ্দেশ্যে খালেদা জিয়ার লন্ডন যাওয়া বিষয়ে আজ সিদ্ধান্ত হয়নি

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য আজ বৃহস্পতিবার বিদেশ নেওয়া হচ্ছে না। যদিও আজকের মধ্যেই বিদেশে নেওয়া হতে পারে বলে বিএনপি মহলে বুধবার রাত থেকেই চলছে গুঞ্জন। বৃহস্পতিবার (৬ মে) বিকেলে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক অবশ্য জানিয়ে দিয়েছেন আজকের মধ্যে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হচ্ছে না। তবে যত দ্রুত সম্ভব সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হবে।

দুপুরে গণমাধ্যমকে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছিলেন, খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার আবেদন সংক্রান্ত ফাইলটি দেখে মতামত দেওয়া হবে। আবেদনটি গতকাল বুধবার রাত ১১টায় আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সচিবের কাছে এসেছে। এখন যথাযথ প্রক্রিয়া শেষ করে সেটি আমার কাছে আসবে। তারপর সেটি দেখে এ বিষয়ে মতামত দিবো।’

এর আগে বিএনপি চেয়ারপারসনের ঘনিষ্ঠ সূত্রে দাবি কর হয়, এ ব্যাপারে সরকার ‘রাজি’ হয়েছে। সূত্র জানায়, সরকার খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করে তার বিদেশ যাওয়ার জন্য মৌখিকভাবে সম্মতি দিয়েছে এবং কোন দেশে খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা যায় সে ব্যাপারে চিন্তাভাবনা চলছে। সিঙ্গাপুর বা লন্ডনে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য যাবেন। সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হলে রাত আটটার দিকে চার্টার্ড বিমানে করে তিনি ঢাকা ত্যাগ করবেন।

এদিকে বৃহস্পতিবার সকালে বিএনপি চেয়ারপারসনের করোনা পরীক্ষার ফল নেগেটিভ আসে বলে তার ঘনিষ্ঠ সূত্রে বলা হয়। এ তথ্যে এ দিন রাত ৮টার মধ্যে বিদেশ যাচ্ছেন খালেদা জিয়া এমন গুঞ্জন আরও হাওয়া পায়।

গত বুধবার বিদেশে পাঠানোর আবেদন নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসায় সাক্ষাৎ করতে যান বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ভাই শামীম ইস্কানদারসহ পরিবারের সদস্যরা। সেই আবেদন পাওয়ার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল তা আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেন পর্যালোচনার জন্য। জামিনে থাকা খালেদা জিয়া বর্তমানে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার শারীরিক নানা জটিলতা দেখা দিয়েছে।

এদিকে, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানো নিয়ে আগে থেকেই তোড়জোড় শুরু করে তার পরিবার। খালেদা জিয়ার পাসপোর্ট নবায়ন থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখাসহ সব কাজ গুছিয়ে আনা হয়েছে। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্যরা বিষয়টি দেখভাল করছেন। ভাই শামীম এস্কানদারকে নিয়ে লন্ডনের উদ্দেশে রওনা হবেন বিএনপি প্রধান। দলটির নির্ভরযোগ্য সূত্র এমন তথ্য নিশ্চিত করেছে।

সূত্র জানায়, শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে চায় পরিবার। এ জন্য গত সোমবার রাতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন।

এর আগে গত ১১ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী বরাবর একটি চিঠিও দেয়া হয়েছে পরিবারের পক্ষ থেকে। তবে অত্যন্ত গোপনীয়তা ও সতর্কতার সঙ্গে সরকারের উচ্চ মহলে যোগাযোগ চলছে। কৌশলগত কারণে দুপক্ষের কেউই এ বিষয়ে মুখ খুলছেন না।

গত ২৭ এপ্রিল রাতে খালেদা জিয়াকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরদিন বিএনপি প্রধানের চিকিৎসার জন্য ১০ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। আর গত সোমবার বিকালে তাকে সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। এর আগে গত ১১ এপ্রিল খালেদা জিয়ার করোনা টেস্টের রিপোর্ট পজেটিভ আসে।

সর্বশেষ ২০১৭ সালের ১৬ জুলাই চিকিৎসার জন্য লন্ডন যান খালেদা জিয়া। সেখান থেকে এক মাসের মধ্যেই ফেরার কথা থাকলেও চিকিৎসায় সময় লাগায় দেশে ফিরতে দেরি হয়। ওই বছর ১৮ অক্টোবর দেশে ফেরেন তিনি।