সরকারী চাকুরী করা হলো না শিবচরের মেধাবী শিক্ষার্থী শাহাদাতের

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সবে মার্স্টাস শেষ করে চাকুরীর জন্যে বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেছে। ঈদের বাড়ীতে আসার সময় সোমবার ( ৩ মে ) সকাল ৬.৩০ টার দিকে পদ্মার বুঁকে বাল্কহেড আর স্পিডবোটের মুখোমুখি সংর্ঘষে প্রাণ হারায়। শাহাদাত হোসেন মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার দ্বিতীয়খন্ড ইউনিয়নের নেয়ামতকান্দি গ্রামের বাসিন্দা।

পরিবারের লোকজন জানায়, শিবচর উপজেলার দ্বিতীয়খন্ড ইউনিয়নের আদম আলী মোল্লার ছয় ছেলে ও চার মেয়ের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ শাহাদাত হোসেন। সবার ছোট হওয়ায় তার পড়াশুনার দিকে পরিবারের সকলের নজর বেশি ছিল। পরিবার ধর্মীয় অনুশাসনে থাকায় আল-বাইতুল মামুর সিনিয়র মাদ্রাসা থেকে জিপিএ-৪.৮১ পেয়ে দাখিল পরীক্ষায় উর্ত্তীণ হয়।

শিবচরে বহরামগঞ্জ ডিগ্রী কলেজ থেকে মানবিক শাখায় সেখানেও জিপিএ পান ৪.৪০ পেয়ে এইচএসসি পাস করেন । জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তির্ণ হয়ে পড়াশুনার সুযোগ পান। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগ থেকে অর্নাস ও মার্স্টাস শেষ করেছে। শিক্ষা জীবন শেষ করে সরকারী চাকুরীর জন্যে বিভিন্ন দপ্তরে আবেদনও করে যাচ্ছিল শাহাদাত। সোমবারের বাল্কহেড আর স্পিডবোর্টের মুখোমুখি সংর্ঘষে প্রাণ গেলো শাহাদাতের। শাহাদাতের মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না পরিবার।

শাহাদাতের বড় ভাই সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমাদের সব আশা-ভরসা শেষ হইয়া গেলো। আমরা অন্য ভাই-বোন বেশি পড়াশুনা করতে পারে নাই। আমাদের ছোট ভাই, কলিজার টুকরাকে পড়াশুনা করাইছি। সে বড় চাকুরী করে আমাদের মুখ উজ্জ্বল করবে। সেটা আর হলো না। এখন আমরা কি নিয়া বাচুম।

শাহাদাতের বন্ধু শাহিন মিয়া জানান, ছোট থেকে শাহাদাত আর আমি বড় হইছি। ও অনেক মেধাবী ছিল। জগন্নাথ শেকে প্রথম শ্রেণীতে উর্ত্তীণ হয়েছে। এখন সরকারী চাকুরীর জন্যে বিভিন্ন জায়গায় আবেদন করছে। হয়ত করোনা না হলে চাকুরী হয়েও যেতো। এখন আর কোন পরীক্ষা দিতে হবে না। সব কিছুর উর্ধ্বে শাহাদাত।

উল্লেখ্য, সোমবার শিমুলিয়া থেকে ছেড়ে আসা একটি স্পিডবোটের সাথে কাঠালবাড়ী এলাকায় মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। সেই সংঘর্ষে ২৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। গুরুতর আহত উদ্ধার হয় আরো ৫ জন যাত্রী। নিহতের তালিকায় শিবচরের শাহাদাত হোসেনও ছিল।