সিলেটে ভূমি নিয়ে বিরোধের জেরে স্কুল ছাত্র নিহত

বিশ্বনাথের আলোচিত চাউলধনি হাওরে রাস্তা নির্মাণ নিয়ে বিরোধে প্রাণ হারিয়েছেন দশম শ্রেণীর ছাত্র সুমেল মিয়া (১৮)। নিহত সুমেল চৈতন্নগর গ্রামের বাসিন্দা ও শাহজালাল ঘাগুটিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র। আর প্রতিপক্ষ প্রবাসী সাইফুল আলম চৈতন্নগরের পাশের ইসলামপুর গ্রামের বাসিন্দা ও চাউলধনী হাওরের ইজারাদার দশঘর মৎস্যজীবী সমিতির ফাউন্ডার।

এ ঘটনায় সুমেলের বাবা আব্দুল মানিক (৫০), চাচা যুক্তরাজ্য প্রবাসী মনির মিায়া (৪৫) ও চাচাতোভাই সালেহ আহমদ (৩০) গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শনিবার বিকেল ৩টায় উপজেলার চৈতন্নগর গ্রামের চাউলধনী হাওরপাড়ের রাস্তায় এই ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, চাউলধনী হাওরের পাড় দিয়ে চৈতন্নগর ও ইসলামপুরের পাশ দিয়ে ছাতকের লামা টুকেরবাজার পর্যন্ত সরু একটি কাঁচা সড়ক রয়েছে। চৈতন্নগর থেকে নিজবাড়ি পর্যন্ত যাতায়াতের জন্য ওই সড়কটি মাটি দিয়ে নিজ উদ্যোগে বড় করছেন সাইফুল আলম। শনিবার চৈতন্নগরের নজির আহমদের কৃষি জমি থেকে জোরপূর্বক মাটি তুলে সড়কে দিচ্ছিলেন তিনি। এসময় জমি থেকে মাটি তুলতে বাঁধা দেন নজির আহমদের ছোটভাই মনির মিয়া, আব্দুল মানিক ও ভাতিজা সুমেল মিয়া।

আর এতে হাতাহাতির একপর্যায়ে বন্ধুক দিয়ে গুলি করেন সাইফুল। এসময় বাবা-ছেলে ও ভাতিজাসহ একই পরিবারের ৪ জন গুলিবিদ্ধ হন। পরে তাদের সন্ধ্যায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সুমেলকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার পর থেকে সাইফুল আলম পলাতক রয়েছেন। খবর পেয়ে সন্ধ্যায় সিলেটের ওসমানী নগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম, থানার ওসি শামীম মুসা, ওসি (তদন্ত) রমা প্রসাদ চক্রবর্তি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

নজির আহমদ, আব্দুল মালিক, মনির মিয়াসহ চৈতন্নগর গ্রামের বাসিন্দাদের অভিযোগ, জোরপূর্বক মাটি কাটায় বাধা দেওয়ায় সাইফুল তার ভাই নজরুল আরম নজ্জু, লুৎফুর রহমান, ময়ূর মিয়াসহ ১০/১২ জনকে নিয়ে হামলা চালান। এ সময় সাইফুল তার সঙ্গে থাকা বন্দুক ও পিস্তল দিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি করেন। এতে স্কুলছাত্র সুমেল নিহত ও একই পরিবারের ৪ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন।

তবে, মুঠোফোনে জানতে চাইলে গুলির বিষয়টি অস্বীকার করেছেন সাইফুল আলম। তিনি বলেন, তিনি কোন গুলি করেননি। আর ঘটনাস্থল থেকে তার বাড়িও অনেক দূরে।

ঘটনাস্থলে আছেন জানিয়ে বিশ্বনাথ থানার ওসি শামীম মুসা সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে চারজনকে আটক করা হয়েছে। বাকিদের আটক করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

এপ্রিল ১, ২০২১ at ২৩:০৯:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/একেআর/এমআরএইস