রাজশাহী নগরীর মতিহারে মাদকের ছড়াছড়ি, বহাল তবিয়্যতে মূল হোতারা

রাজশাহী নগরীর মতিহার থানা এলাকায় মাদকের কারবার বেড়েই চলেছে। পুলিশের কতিপয় কর্মকর্তা ও সদস্যের সাথে চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীদের একটি অংশের বিশেষ সখ্যতা থাকায় মাদকের কারবার বাড়ছে- এমন অভিযোগ দীর্ঘদিনের। তারপরেও এ অবস্থার পরিবর্তনের কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। গত প্রায় ৯মাস পূর্বে বোয়ালিয়া থানায় বদলির আদেশ হয়েছে মতিহার থানার এসআই সাহাবুলের। তারপরও তিনি মতিহার থানাতেই ডিউটি করছেন। তার বিরুদ্ধে পাহাড় অভিযোগের শেষ নেই স্থানীয়দের। এ ব্যপারে একাধিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলেও অজ্ঞাত কারনে তিনি মতিহার থানাতেই রয়েছেন।

এদিকে, একাধিক মাদক মামলার আসামী ডাসমারী এলাকার মৃত মুক্তারের ছেলে পালা। ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি হলেও প্রকাশ্যে সে নিজ এলাকায় দাপটের সাথে মাদকের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। পুলিশ জানলেও তার ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। তার পার্টনার চরের ইমরানের ছেলে আক্কাস। সেও অন্তত ৮-১০টি ওয়ারেন্ট নিয়ে চরেই অবস্থান করছে।

মতিহার থানা এলাকার উল্লেখযোগ্য মাদক কারবারীদের মধ্যে রয়েছে- ডাসমারীর মৃত মুক্তারের ছেলে পালা। তার সহযোগী মাদক কারবারী সাবদুল, কামরুল, সোহেল (জানু), সুমন, রশিদ, সাকিব, শাহজামাল, জাকা ও মিলন। নাজিমের ছেলে মাদক কারবারী জামাল। তার সহযোগীরা হলো- জাকা, জামিল, সাক্কার, রফিক, ছাদেক ও মাসুম। একই এলাকার মালেক, তার স্ত্রী হানুফা, তার ছেলে হাবিল। তেল রফিক ও তার স্ত্রী। ডাসামরী গোরস্থান মোড়ের চান্দু বাবু।

জাহাজ ঘাট এলাকার মৃত ইসাহাকের ছেলে বকুল। মহব্বতের ঘাটের মাদক কারবারী জিল্লুর ছেলে পিন্টু ও টিটু, জাহাঙ্গীর, সজিব, জি¦ন ছাইদুর, রিয়াজ।

সুরাপানের মোড় এলাকার জনৈক অলি, জনি, সুমন। এদের মধ্যে অন্যতম অলি ইয়াবা, হেরোইনের ডিলার হিসেবে কাজ করলেও ধরা ছোয়ার বাইরে। স্থানীয়দের অভিযোগ, ক্ষেত্র বিশেষে কোন কোন মাদক কারবারী নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে থাকে। পুলিশ তাদের বিষয়েও জানে। তার সহযোগীরা হলো, বকুল, জনি, সুমন, প্রিয়া।

চরশ্যামপুর এলাকায় মাদক কারবারীদের নেতা মনিরুল। কিন্তু সে নিজেকে কখনো কখনো এমপি এবং মেয়রের লোক বলেও পরিচয় দিয়ে থাকে। সম্প্রতি মনিরুলের ভাই আসলাম ২০ বোতল ফেনসিডিলসহ ডিবি পুলিশের হাতে আটক হয়। জামিনে বেরিয়ে আবারও চালাচ্ছে মাদকের কারবার। এছাড়া বোন চাম্পা ওই এলাকার বড় মাদক কারবারীদের মধ্যে একজন। (তিনি বর্তমানে কারাগারে) মাদক মামলা রয়েছে তার দুই ভাসতির নামেও।

মাদক কারবারীদের মধ্যে আরো রয়েছে- ওই এলাকার হামিদের ছেলে ইয়াসিন, নেদার মন্ডলের ছেলে রবিউল, আকতার, মিঠু, কামরুল, হালিম, সুজন, সুমন, কাদো, শাহীন, রুপচাঁনসহ শতাধিক খুচরা ও পাইকারী মাদক কারবারী।

এ ব্যাপারে মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, পুলিশের কোনো সদস্য মাদক কারবারে জড়িত থাকলে তাকেও ছাড় দেওয়া হবে না। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এসআই সাহাবুলের বদলির বিষয়টি আমি বলতে পারবো না। এ ব্যাপারে জানতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন তিনি।

জানতে চাইলে মহানগর পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার গোলাম রুহুল কুদ্দুস জানান, এসআই সাহাবুলের বদলির বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিলে বিষয়টি জানতে পারবো।