পেকুয়ায় জমির বিরোধকে কেন্দ্র করে সন্ত্রাসীদের ছুড়া গুলিতে এক গৃহবধু নিহত, গুলিবিদ্ধ ২, আটক ২

কক্সবাজারের পেকুয়ায় জমির বিরোধকে কেন্দ্র করে গভীর রাতে সন্ত্রাসীদের ছুড়াগুলিতে সেলিনা আক্তার (৩৭) নামে এক গৃহবধু নিহত হয়েছে। নিহত গৃহবধু ওই এলাকার ফরিদুল আলমের স্ত্রী। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয় ওই এলাকার মোহাম্মদ সেলিমের পুত্র ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া ছাত্র নাজমুল সাকিব (২৩), একই এলাকার নুরুল আবছারের পুত্র সাইফুল ইসলাম(২৮)।

ত্রিফল নাইনে ঘটনার খবর পেয়ে পেকুয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আহতদের কে উদ্ধার করে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। কর্তব্যরত চিকিৎসক জানিয়েছেন গুলিবিদ্ধদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া ছাত্র সাকিবের অবস্থা আশংকাজনক।

১২ এপ্রিল দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে উপজেলার বারবাকিয়া ইউনিয়নের বুধামাঝির ঘোনা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন,ওই এলাকার সাহাব মিয়ার ছেলে মোঃ হোসেন গং এর সাথে একই এলাকার মৃত জামাল উদ্দিনের পুত্র নুরুল ইসলাম গংদের মধ্যে জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এরই জের ধরে ঘটনার দিন গভীর রাতে মোহাম্মদ হোসেন গং সংঘবদ্ধ ভাবে সন্ত্রাসীদের নিয়ে অবৈধ অস্ত্রের ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে প্রতিপক্ষ নুরুল ইসলামের বসতবাড়িতে হামলা ও তান্ডব চালিয়ে ঘরবাড়ি ভাংচুর করে। তান্ডব শেষে সন্ত্রাসীরা চলে যাওয়ার সময় পাশ্ববর্তী ফরিদুল আলমের বসতঘরে হানা দিয়ে গোয়ালঘর থেকে গরু লুট করতে চাইলে ফরিদুল আলমের স্ত্রী সেলিনা আক্তার বিষয়টি টের পেয়ে ঘুম থেকে উঠে ঘর থেকে বের হওয়ার সাথে সাথে সন্ত্রাসীদের ছুঁড়া এলোপাতাড়ি গুলিতে সেলিনা আক্তারের শরীর ঝরঝরা করে পেলে। ঘটনাস্থলে সেলিনা আক্তারের মৃত্যু হয়।

গুলির আওয়াজ শুনে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্র সাকিব ও সাইফুল বাড়ি থেকে বের হলে তাদেরকেও গুলি করা হয়। এ সময় স্থানীয়রা জড়ো হয়ে মোঃ হোসেনের ছেলে সন্ত্রাসী মাহামুদুল করিম ও মফিজুর রহমানকে আটক করে পুলিশের হাতে সৌপর্দ করে।

নিহত গৃহবধূর স্বামী ফরিদুল আলম বলেন, মধ্যরাতে সন্ত্রাসীরা গুলিবর্ষণ করে নুরুল ইসলামের বসতবাড়িতে তান্ডব চালায়। তান্ডব চালিয়ে চলে যাওয়ার সময় আমার বাড়ির ৪টি গরু লুট করার চেষ্টা করে। ওই সময় আমার স্ত্রী সেলিনা বাড়ি থেকে বের হওয়ার সাথে সাথেই স্ত্রীকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি করে হত্যা করে।আমার ৪টি গরু লুট করে নিয়ে যায়।

একই এলাকার মৃত জামাল উদ্দিনের ছেলে নুরুল ইসলাম বলেন, একই এলাকার মৃত সাহাব মিয়ার ছেলে মোঃ হোসেন, মৃত আবদু রহমানের ছেলে আক্তারুজামান ও ইউপি সদস্য আবু ছৈয়দ টুকুর নির্দেশে মাহামুদুল করিম, মফিজুর রহমান, মামুন ও কাইছারসহ সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসীদের নিয়ে মধ্যরাতে অবৈধ অস্ত্রের ফাঁকাগুলি বর্ষণ করে আমার বসতবাড়িতে তান্ডব চালায়। ভেঙে দেন পুরো বসতবাড়ি। চলে যাওয়ার সময় সন্ত্রাসীরা ফরিদুল আলমের বাড়ির গরু লুট করতে গিয়ে তার স্ত্রীকে গুলি করে হত্যা করে।

এ ব্যাপারে পেকুয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) কানন সরকার বলেন, জায়গা দখল বেদখল নিয়ে সংঘর্ষ হয়। ওই সময় পাশের বাড়ির সেলিনা আক্তার বাড়ি থেকে বের হলে গুলিতে নিহত হয়। ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত করছি। দুইজন আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।

এপ্রিল ১২, ২০২১ at ১৫:২৭:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এমজে/এমআরএইস