রামেক হাসপাতালের অব্যবস্থাপনায় করোনার সংক্রমণ ও ভোগান্তি বাড়ছেই

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে আইসিইউ ও অক্সিজেন সংকটসহ অপর্যাপ্ত ব্যবস্থাপনার অভাবে করোনার সংক্রমণ ও ভোগান্তি বাড়ছেই। হাসপাতালে ক্রমবর্ধমান করোনা রোগির চাপে ২৫ নম্বর চক্ষু ওয়ার্ডকে করোনা ওয়ার্ড হিসেবে ঘোষণা করা হলেও ওয়ার্ডটি এখনো পুরোপুরি প্রস্তুত হয়নি। কিন্তু রোগি বাড়তে থাকাই অর্ধপ্রস্তুতকৃত এই ওয়ার্ডেই চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

হাসপাতালে আইসিইউ ও অক্সিজেন সংকটসহ পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকলেও থেমে নেই চিকিৎসা। তবে সংকটের সঙ্গে ব্যবস্থাপনাগত ত্রুটিগুলোকেও করোনা রোগিদের কার্যকর সেবা নিশ্চিতের প্রতিবন্ধকতা হিসেবে দায়ী করছেন রোগি ও তার স্বজনসহ সংশ্লিষ্টরা।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে রামেক হাসপাতালে ৮৬ জন করোনা রোগি চিকিৎসা নিচ্ছেন। হাসপাতালে করোনা রোগিদের জন্য মাত্র ১০ টি আইসিইউ ও ১৮ টি ভেন্টিলেটর সুবিধা রয়েছে। কিন্তু বিদ্যমান আইসিইউ এর চেয়ে আইসিইউ লাগবে এমন রোগির সংখ্যা প্রায় দ্বিগুন। এখন প্রতিদিন প্রায় ৮ থেকে ১০ জন রোগিকে সিরিয়ালের জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে। অক্সিজেন এর সংকট রয়েছে। এতে পর্যাপ্ত আইসিইউসহ অক্সিজেনের কারণে রোগিকে যেমন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তেমনি আইসিইউ এর অপেক্ষার প্রহর গুনতে গুনতে রোগি মারাও যাচ্ছে।

করোনা রোগি বাড়তে থাকায় তিন তলায় অবস্থিত চক্ষু ওয়ার্ডটিকে করোনা ওয়ার্ড হিসেবে প্রস্তুত করা হয়েছে। কিন্তু এই ওয়ার্ডে করোনার রোগিদের জন্য খুবই কষ্টকর। কেননা এখানে কোনো লিফটের ব্যবস্থা নেই। একজন করোনা রোগিকে হেঁটে এই তিন তলায় উঠতে হচ্ছে। এতে রোগির শারীরিক অবস্থারও অবনতি হচ্ছে বলে জানা যায়।

এদিকে, হাসপাতালে করোনা রোগির পাশাপাশি অন্যান্য রোগির সংখ্যাও বেড়েছে। কিন্তু সেই অনুযায়ী রোগিদের মাঝে বাড়েনি সচেতনতা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকেও এ বিষয়ে কার্যকর তেমন কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায় নি। হাসপাতালের বর্হিবিভাগ ও জরুরি বিভাগগুলো ঘুরে দেখা যায়, হাসপাতালের মধ্যেও অনেকেই মাস্ক ব্যবহার করছেন না। বর্হিবিভাগের টিকিট কাউন্টার থেকে শুরু করে ডাক্তারদের রুমের বাইরে রোগিদের সিরিয়ালে সামাজিক দূরত্বের কোনো বালাই ছিলো না। এমন চিত্র শুধু বহির্বিভাগ নয়, জরুরি বিভাগের অবস্থাও প্রায় একই।

এ বিষয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী সাংবাদিকদের জানান, রামেক হাসপাতালে করোনা রোগির সংখ্যা বাড়ছে। বর্তমানে প্রায় ৮৬ জন রোগি ভর্তি আছে। এ পরিস্থিতি অবনতির শঙ্কা থাকায় তারা প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এরইমধ্যে ২৫ নং ওয়ার্ডকে করোনা ওয়ার্ড করা হয়েছে। নতুন করে ২২ নং ওর্য়াডকে প্রস্তুত করা হচ্ছে। আজ চালু হয়ে যাবে।

এগুলো শেষ হলে ১৬ ও ৩ নং ওয়ার্ডও প্রস্তুত করা হবে। তবে এটা সত্য ২৫ নং ওয়ার্ডে করোনা রোগিদের উঠা-নামাই সমস্যা হচ্ছে। তবে এ সমস্যা সামনে থাকবে না। রোগিদের মধ্যে যারা একটু সুস্থ তাদেরকেই ২৫ নং ওয়ার্ডে পাঠানো হবে বলেও জানান তিনি।