করোনা রোগীদের এক তৃতীয়াংশ ‘মস্তিষ্কের রোগে’ আক্রান্ত

করোনায় সংক্রামিত প্রতি তিন জনের মধ্যে একজনের দীর্ঘস্থায়ী মানসিক বা স্নায়ুবিক সমস্যা রয়েছে। বুধবার (৭ এপ্রিল) ল্যানসেট সাইকিয়াট্রি জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। খবর সিএনএনের।

দেখা গেছে, চিকিৎসা নিয়ে করোনা মুক্ত হওয়া ৩৪ শতাংশ ব্যক্তিই সংক্রমণের ছয় মাসের মধ্যে স্নায়ুবিক বা মনস্তাত্ত্বিক সমস্যার কারণে চিকিৎসা নিতে বাধ্য হয়েছেন।

করোনার জন্য চিকিৎসা নিয়েছেন এমন ব্যক্তিদের ১৭ শতাংশের মধ্যে মানসিক উদ্বেগ বা দুশ্চিন্তা সমস্যায় রূপ নিয়েছে। এটাই সবচেয়ে বেশি মাত্রায় লক্ষ্য করা গেছে। এর পরেই আছে মেজাজের   তীব্র ওঠা-নামা বা বিগড়ে যাওয়া। ১৪ শতাংশের মধ্যে এ সমস্যা পাওয়া গেছে।

করোনার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিলেন এমন ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে স্নায়ুবিক সমস্যাগুলো আরও তীব্র। তবে যারা শুধু হাসপাতালের বর্হিবিভাগ থেকেই চিকিৎসা নিয়েছিলেন, ভর্তি হতে হয়নি, তাদের মধ্যেও সমমাত্রায় এসব সমস্যা রয়েছে।

এ গবেষণার সঙ্গে যুক্ত অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইকিয়াট্রির একাডেমিক ক্লিনিকাল ফেলো ম্যাক্সিম টাকয়েট বলেছেন, ‌করোনায় অসুস্থতার মাত্রা যতো তীব্র হয়, তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এসব মানসিক বা স্নায়ুবিক সমস্যাও তত তীব্র হয়। হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের ক্ষেত্রে এসব সমস্যার তীব্রতা ৩৯ শতাংশ বেড়ে গেছে। তিনি আরও বলেন, আমাদের গবেষণার ফল এই ইঙ্গিত দেয় যে ফ্লু বা শ্বাসতন্ত্রের অন্যান্য সংক্রমণের চেয়ে করোনার পর মস্তিষ্কের রোগ ও মানসিক সমস্যা বেশি দেখা যায়।

ম্যাক্সিম টাকয়েট বলেন, করোনা থেকে সেরে ওঠা ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে সংক্রমণের ছয় মাস পার হওয়ার পর কী ঘটে, তা এখন গভীরভাবে খতিয়ে দেখতে হবে।

গবেষকেরা বলছেন, তাদের এ গবেষণা করোনা থেকে সেরে ওঠা ব্যক্তিদের স্বাস্থ্যব্যবস্থায় কীভাবে সহায়তা করা যেতে পারে, সে ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।

গবেষণাটির পরিসর ছিল বেশ বড়। ২ লাখ ৩৬ হাজারের বেশি করোনা রোগীর ইলেকট্রনিক স্বাস্থ্যগত তথ্য এ গবেষণায় বিশ্লেষণ করা হয়।

গবেষকেরা দেখতে পান, ফ্লু থেকে সেরে ওঠা ব্যক্তিদের চেয়ে করোনায় আক্রান্ত হওয়া ব্যক্তিদের স্নায়ুবিক ও মানসিক অসুস্থতার ঝুঁকি ৪৪ শতাংশ বেশি। অন্যান্য শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণযুক্ত ব্যক্তির সঙ্গে তুলনা করলে করোনা থেকে সেরে ওঠা ব্যক্তিদের ওপর এসব মানসিক সমস্যা ১৬ ভাগ বেশি।