দুমকিতে এসএসসি’র ফরম পূরণে অতিরিক্ত অর্থ আদায়

পটুয়াখালীর দুমকিতে এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণে ২থেকে ৩হাজার ৫শ’ টাকা অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। এ ক্ষেত্রে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে কোন রশিদ প্রদান ছাড়াই সেসন চার্জ, কল্যাণ তহবিল, ক্রীড়া, মসজিদ ফি, ইন্টারনেট ফি, জরিমানাসহ খরচের নানা খাত দেখিয়ে এসব অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছে।

উপজেলা শিক্ষা কার্যালয়ের তথ্যমতে, দুমকি উপজেলায় ২৩টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ২৩টি দাখিল মাদ্রাসা রয়েছে। এবার এসএসসি পরীক্ষার সর্বোচ্চ বোর্ড ফি ধরা হয়েছে ১ হাজার ৯৭০ টাকা। ১ থেকে ৭ এপ্রিল পর্যন্ত ফরম পূরণ চলবে। বিলম্ব ফি ১০০ টাকা দিয়ে ১০ এপ্রিল পর্যন্ত ফরম পূরণ করা যাবে।

সোমবার সরেজমিনে শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার দুমকি (আপ্তুননেছা খাতুন) একে মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় ফরম পূরণে ৪ হাজার টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। তবে বিদ্যালয়ের অফিস থেকে ফরম পূরণে ২হাজার ৫০০টাকা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে আদায় করা হচ্ছে সাড়ে ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা।

এদিকে দুমকি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস বলছে, ২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষায় উপজেলায় ২৩টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ২৩টি দাখিল মাদ্রাসায় প্রায় ৪হাজার নিয়মিত ও ৪০০ অনিয়মিত শিক্ষার্থী অংশ নেবে। ১এপ্রিল থেকে ৭এপ্রিল পর্যন্ত ফরম পূরণ চলবে। বিলম্ব ফি দিয়ে আরও ৩ দিন পর্যন্ত ফরম পূরণ করা যাবে। ফরম পূরণে মানবিকের জন্য ১হাজার ৮৫০টাকা, ব্যবসায় শিক্ষার জন্য ১ হাজার ৮৫০ ও বিজ্ঞানের জন্য ১হাজার ৯৭০ টাকা লাগবে এবং অনিয়মিত শিক্ষার্থীদের অতিরিক্ত ১০০ টাকা দিতে হবে বলে বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের এক চিঠিতে বলা হয়েছে।

তবে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দুমকি একে মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অতিরিক্ত টাকা না দিলে শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকদের সাথে দূর ব্যবহার করে বিদ্যালয় থেকে বের করে দেন । এক শিক্ষার্থীর চাচা মো: কামাল হোসেন বলেন, তাঁর ভাতিজার কাছে ফরম পূরণে সাড়ে তিন হাজার টাকা দিতে হয়েছে। একই অভিযোগ করেন, ওই বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর দাদা কদম আলী হওলাদার বলেন, তার নাতনীর ফরম পূরণেও ৪ হাজার টাকা দিতে হয়েছে তবে টাকা নেয়ার কোন রশিদ পাননি তারা। হাসান নামের এক শিক্ষার্থী ২ হাজার ৭শ’ টাকা জমা দিলে তাকে ধমক দিয়ে বের করে দেয়া হয়েছে।

আরেক শিক্ষার্থী সাকিবের বাবা (পেশায় অটোরিস্কা চালক) মো: ফারুক হোসেন জানান, তার ছেলের মেট্রিকের ফরম ফিলাপের জন্য ২হাজার ৫শ’ টাকা যোগার করে প্রধান শিক্ষকের কাছে জমা দিতে গেলে তিনি টাকা রাখেন নাই। ৩হাজার ৮শ’ টাকার কমে ফরম ফিলাপ হবে না বলে তাকে এক রকম স্কুল থেকে বের করে দিয়েছেন।

অতিরিক্ত অর্থ আদায় প্রশ্নের জবাবে দুমকি একে মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: আলমগীর হোসেন বলেন, বোর্ড ফি এর সাথে বকেয়া বেতন, পরীক্ষা ফি, সেসন চার্জ নেয়ায় একত্রে নেয়ায় টাকার পরিমান বেশী মনে হয়। আসলে নির্ধারিত বোর্ড ফি’র অতিরিক্ত টাকা নেয়া হয় না।

এবিষয়ে দুমকি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বদরুন নাহার বলেন, এসএসসি পরীক্ষায় ফরম পূরণে বাড়তি ফি আদায়ের কোনো অভিযোগ তাঁরা এখন পর্যন্ত পাননি। অভিযোগ পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ আবদুল্লাহ সাদীদ বলেন, ‘আমরা মৌখিক অভিযোগ শুনেছি। লিখিত অভিযোগ পেলে যেসব বিদ্যালয় অতিরিক্ত ফি আদায় করছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এপ্রিল ০৬, ২০২১ at ১৮:২৮:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এমজেইউ/এমআরএইস