সোমবার থেকে সারাদেশে লকডাউন

করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সোমবার থেকে সারা দেশে ১ সপ্তাহের জন্য লকডাউন দিয়েছে সরকার। শনিবার (৩ এপ্রিল) নিজ সরকারি বাসভবনে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে লকডাউনের কথা জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

তিনি আরও জনান, প্রয়োজনে লকডাউনের সময় আরও বাড়তে পারে। তবে শিল্পকারখানা চালু থাকবে, শিফট অনুযায়ী কাজ হবে। তবে শর্তসাপেক্ষ চালু থাকতে পারে।

যারা কথা দিয়ে কথা না রেখে দূরপাল্লায় দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করছে, তাদের উদ্দেশে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন দুর্যোগের মধ্যে জনগণের দুর্ভোগ বাড়াবেন না। করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার দ্রুত বেড়ে যাওয়ায় সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং মাস্ক পড়া জরুরি কর্তব্য বলে মনে করে সেগুলো পালন করার আহবান তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় সরকার ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে কিন্তু এখনো অনেকেই মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধির প্রতি অনীহা দেখাচ্ছে, যা প্রকারান্তরে ভয়াবহ পরিস্থিতি নিয়ে আসতে পারে। নিজেদের সুরক্ষায় সবাই সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করাই এখন মূল কাজ।

এর আগে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে ১৮ নির্দেশনা জারি করেছে সরকার। সীমিত পরিসরে গত ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত এই লকডাউন জারি করেছিল সরকার। গণপরিবহনে ৫০ শতাংশ সিট ফাঁকা রাখার কথা বলা হয়েছে। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী ৩১ মার্চ থেকে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলাচল করার আহ্বান দিয়েছিল সরকার। এতে অফিস যাতায়াত করা যাত্রীদের ভোগান্তি তৈরি হয়। বাসের সংকটে অনেক যাত্রীকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় দাড়িয়ে থাকতে হয়েছে।

গত বছর করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় ২৬ মার্চ থেকে অঘোষিত লকডাউন দিয়েছিল সরকার। এক সপ্তাহের জন্য লকডাউন দিলেও পরে তা কয়েকদফা বাড়ানো হয়।

করোনাভাইরাস পরিস্থিতির অবনতির কারণে সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত কয়েক দিন ধরেই প্রতিদিন ছয় হাজারের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে। গতকাল শুক্রবার একদিনে শনাক্ত সাত হাজারের কাছাকাছি পৌঁছায়। গতকাল মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৫০ জন। শনাক্তের হার ছাড়িয়েছে ২৩ শতাংশ।

গত বছরের মার্চে সংক্রমণ শুরুর পর থেকে এতটা খারাপ পরিস্থিতি আর দেখা যায়নি। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গত বছরের ২৫ জুন থেকে ৪ জুলাই পর্যন্ত ১০ দিন সংক্রমণ বেশি ছিল। সে সময় দৈনিক গড়ে ৩ হাজার ৭০১ জনের করোনা শনাক্ত হয়। গড়ে দৈনিক মৃত্যু হয় ৪১ জনের।

গত ১০ মার্চ থেকে দেশে দৈনিক শনাক্ত রোগী বাড়ছে। বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৬ হাজার ৪৬৯ জনের। এই সময়ে করোনায় মারা গেছেন ৫৯ জন; যা গত ৯ মাসের মধ্যে এক দিনে সর্বোচ্চ।