চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ফারহাদ হোসেন রুবেল নামের এক হাজতি নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় চট্টগ্রাম কারাগারের জেলার মো. রফিকুল ইসলামকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। একইসঙ্গে সহকারী প্রধান কারারক্ষী রফিকুল ইসলাম ও কারারক্ষী নাজিমুদ্দিনকে সাময়িক বরখাস্ত এবং সহকারী কারারক্ষী কামাল হায়দারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হচ্ছে।
রোববার (৭ মার্চ) দুপুরে চট্টগ্রাম বিভাগীয় ডিআইজি (প্রিজন্স) একে এম ফজলুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, এ ঘটনায় খুলনা বিভাগীয় ডিআইজি (প্রিজন্স) ছগীর মিয়াকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এক কারারক্ষীর বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছে বিভাগীয় মামলা।
কারা সূত্রে জানা গেছে, রুবেল নগরের সদরঘাট থানায় দায়ের হওয়া একটি হত্যা মামলার আসামি। তার বাড়ি নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার মীরেরকান্দি গ্রামে। তার বাবার নাম শুক্কুর আলী ভাণ্ডারি। গত ৮ ফেব্রুয়ারি পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। ৯ ফেব্রুয়ারি রুবেলকে কারাগারে প্রেরণ করেন আদালত। কারাগারের ১৫ নম্বর কর্ণফুলী ভবনের পানিশমেন্ট ওয়ার্ডে রাখা হয়েছিল তাকে। ০৬ মার্চ শনিবার ভোর সোয়া ৫টা থেকে ৬টার মধ্যে রুবেল উধাও হয়ে যান।
শনিবার (৬ মার্চ) সকালে নিয়মিত বন্দি গণনাকালে ওই বন্দির (হাজতি নম্বর: ২৫৪৭/২১) অনুপস্থিতির বিষয়টি কারা কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। নজরে আসার পর বিকালে নিখোঁজ বন্দির সন্ধানে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে বাজানো হয় ‘পাগলা ঘণ্টা’।
এদিকে শনিবার সকাল ৬টা থেকে কারা অভ্যন্তরে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাওয়া না যাওয়ায় সকালে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. শফিকুল ইসলাম খান কোতোয়ালী থানায় একটি জিডি করেন। পরে শনিবার (৬ মার্চ) রাতে নগরের কোতোয়ালী থানায় কারাগারের জেলার মো. রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন।
এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের ডেপুটি জেলার জান্নাতুল ফেরদৌসী বেগম বলেন, ‘গতকাল থেকে কারাগারে এখনো তল্লাশি চলছে। কিন্তু নিখোঁজ হাজতিকে পাওয়া যাচ্ছে না।’
প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কারাগারের সবকটি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ চেক করা হয়েছে। কিন্তু কোথাও নিখোঁজ হাজতির কোনো ফুটেজ নেই। তবে ওই হাজতি কারাগারের মূল ফটক দিয়ে বের হননি, সেটা আমরা ফুটেজ চেক করে নিশ্চিত হয়েছি।’
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আইয়ুব উদ্দিন বলেন, ‘নিখোঁজ হাজতির বিষয়ে আমরা এখনও কোনো ক্লু পাইনি।’
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল সুপার শফিকুল ইসলাম খান ও জেলার রফিকুল ইসলামের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ ঘটনায় কারাগারে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তার সন্ধানে কারা অভ্যন্তরে এখনও তল্লাশি চালানো হচ্ছে। তবে, নিখোঁজের ৩০ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এখনও তার কোন হদিস মেলেনি।
মার্চ ৭, ২০২১ at১৬:০৯:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এমএম/এমএসএইস