ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে প্রার্থীদের প্রতিশ্রুতি আর প্রচার-প্রচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে পৌর এলাকা। ছেয়ে গেছে শহরের অলি-গলিসহ সকল সড়ক। যেদিকে তাকানো হয়, সেদিকেই চোখে পড়বে সারি সারি ঝুলানো পোস্টার। করোনা আর শীতকে পিছনে ফেলে এগিয়ে চলেছে সকল প্রার্থীদের সমর্থনে প্রচার প্রচারণা।
ভোটের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই বাড়ছে নির্বাচনী উত্তাপ। চায়ের স্টলসহ সকল জায়গাতেই চলছে প্রার্থীদের নিয়ে আলোচনা আর জল্পনা-কল্পনা মাইকিং। প্রার্থীর স্থানীয় ভোটারদের সাথে গণসংযোগ এবং হ্যান্ডবির বিলি ছাড়াও পৌর এলাকার রাস্তা-ঘাট, ড্রেনসহ যাবতীয় উন্নয়ন ছাড়াও পৌর নাগরিকদের দিচ্ছেন বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি।
এবারে পৌর মেয়র পদে ৪ জন প্রার্থী বর্তমান মেয়র ও নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আশরাফুল আলম আশরাফ তার উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য পৌরসভার অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার অহবান জানিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন। দিন রাত গণসংযোগ, উঠান বৈঠক আর সভা-সমাবেশের মাধ্যমে ব্যস্ত সময় পার করছেন তিনি। নৌকা প্রতীকের কর্মী সমর্থকদের নির্বাচনী প্রচারণায় সবগরম হয়ে উঠেছে বিভিন্ন এলাকা।
স্থানীয় আওয়ামীলীগ থেকে শুরু করে পৌর শহরের উন্নয়নে এক জোট হয়ে শিক্ষক, ব্যাবসায়ীসহ সর্বস্তরের মানুষ প্রকাশ্যে ভোট চাচ্ছেন নৌকার পক্ষে এ সময় তারা তুলে ধরছেন কালীগঞ্জ পৌরসভার উন্নয়নের চিত্র। পুরুষের পাশাপাশি মহিলা নেত্রীরাও তাদের কর্মীদের নিয়ে ছুটছে ভোটারদের কাছে। এমনকি নৌকার বিজয়ী করতে স্থানীয় সাংসদ আনোয়ারুল আজিম আনার ও সাংসদ কন্যা স্থানীয় ছাত্রলীগের নেত্রি মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন দিন-রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।
এদিকে বিএনপির ধানের শীষের প্রার্থী মাহবুবার রহমান এবং ইসলামী শাষনতন্ত্র আন্দোলনের হাতপাখার নুরুল ইসলাম প্রচার-প্রচারণায় মাঠে রয়েছেন। অপরদিকে স্বতন্ত্র নারিকেল গাছ প্রতিকের এনামুল হক ইমান এর পক্ষে কোন প্রচার প্রচারণা কিংবা গণসংযোগ নেই বললেই চলে। এছাড়াও নির্বাচনে সাধারন আসনের ৯ টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা সবাই নিজ নিজ প্রতীকে ভোট দিতে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ভোট প্রার্থনা করছেন।
পৌর এলাকায় এক বিএনপির নেতা বলেন, বর্তমান মেয়রের সময়ে পৌসভায় যথেষ্ট উন্নয়ন হয়েছে। তাই উন্নয়নের দিকে তাকিয়ে নৌকার জোয়ার উঠেছে ভোটারদের মাঝে। পৌরসভার উন্নয়নের স্বার্থে এবার নৌকা মার্কায় ভোট দিব।
যুবলীগ নেতা উপজেলার ভাইচ চেয়ারম্যান শিবলী নোমানী বলেন, বিগত পাঁচ বছর আগে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী গত পৌর নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হয়েছিল। কিন্তু পরে মেয়রের মৃত্যুতে ২০১৯ সালের ২৮ ফেব্রয়ারী এ পৌরসভার মেয়র পদের উপ-নির্বাচনে মেয়র হন পৌর আ’লীগের সাংগাঠনিক সম্পাদক ও আশরাফুল আলম আশরাফ। তিনি বিগত দুই বছরে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে পৌর এলাকায় সার্বিকভাবে যে উন্নয়ন করেছে তাতে পৌরবাসী নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে একটি আধুনিক পৌরসভা বিনির্মাণে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আশরাফুল আলম আশরাফের বিকল্প নেই।
আগামী ২৮ ফেব্রয়ারী ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএন) মাধ্যমে শেষবারের মতো কালীগঞ্জ পৌরসভায় ভোটগ্রহণ হবে। নির্বাচনে মেয়র পদে ৪ জন। ৯ টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ৫০ জন এবং সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদের মধ্যে পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে পুরুষ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডে সংরক্ষিত মহিলা বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় কাউন্সিলর পদে নির্বাচিত হয়েছেন।
উপজেলা নির্বাচন অফিসার আলমগীর হোসেন ভোরের কাগজকে জানান, কালীগঞ্জ পৌরসভায় মোট ভোটার সংখ্যা ৪০ হাজার ৫ শত ৭৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২০ হাজার ৪০০ জন এবং মহিলা ২০ হাজার ১শত ৭৭ জন। ৯ ওয়ার্ডে ভোট কেন্দ্র ২১ টি।
ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২১ at২১:১১:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/বিএইসবি/এমআরএইস