ঠাকুরগাঁওয়ে কুলিকনদী পারে শিমুলগাছটির ডালে পানকৌড়ির মেলা

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা ঠাকুরগাঁও জেলার রানীশংকৈল উপজেলার কেউটান গ্রাম। গ্রামের ঠিক মাঝখান দিয়ে বয়ে গেছে কুলিক নদী। নদীর ধরে নানা প্রজাতির গাছ-গাছালি। সব গাছ ছাড়িয়ে একটি শিমুল গাছ প্রকৃতিতে যেন নতুন শোভাবর্ধন করেছে।
প্রতিবছর শীত মৌসুমে শিমুল গাছের ডালে হাজারো পানকৌড়ির কলকাকলিতে মুখর হয়ে ওঠে চারপাশ। আর এ দৃশ্য দেখতে প্রতিদিনই দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসে অসংখ্য মানুষ। সরেজমিনে দেখা যায়, কুলিক নদীর ধারে শিমুল গাছটির ডালে শত-শত পানকৌড়ি কিচির-মিচির করছে। যেন পাখিগুলোর নিরাপদ অভয়াশ্রমে পরিণত হয়েছে গাছটি। তাদের কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে উঠছে পুরো এলাকা। সে দৃশ্য দেখতে সেখানে উপস্থিত হয়েছে বেশ কিছু মানুষ।

তবে স্থানীদের অভিযোগ, শিকারের কারণে এবার এখানে একটু কম দেখা মিলছে পানকৌড়িসহ বিভিন্ন পাখির। শিকারীদের বাধা দিলে তারা স্থানীয়দের কথা শোনেন না। পানকৌড়ি শিকার বন্ধের দাবি জানান স্থানীয়রা। ঐগ্রামের বাসিন্দা আনোয়ারুল ইমলাম বলেন, ‘রাতে শিমুল গাছে থাকা পাখিগুলো সকাল হলেই বেড়িয়ে পড়ে খাদ্য অন্বেষণে। আবার সন্ধ্যা হলেই ফিরে আসে গাছটিতে। দেখতে অনেক সুন্দর লাগে।
তিনি আরও বলেন, ‘এক সময় এ গাছটিতে প্রচুর পরিমাণে পাখি আসতো। এখন অনেকাংশে কমে গেছে। তাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিলে আগামীতে পাখি আসা বাড়তে পারে বলে তার ধারণা। গাছের মালিক যাদব রায় বলেন, ‘পাখি আসে বলেই এখানে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ ছুঁটে আসে। দেখে ভালো লাগে। প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকে ওরা যখন চলে যায় তখন বুকটা ফাঁকা-ফাঁকা লাগে।’

ঠাকুরগাঁও জেলার পাখিপ্রেমী রেজাউল হাফিজ রাহী বলেন, ‘পাখিগুলোর কারণে এলাকার সৌন্দর্য বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই শিমুল গাছটি যেন নিরাপদে থাকতে পারে সেজন্য প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’এ ব্যাপারে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক কামরুজ্জামান সেলিম জানান, ‘পাখি আমাদের পরিবেশের ভারসাম্য ধরে রাখে। তাই পাখিদের প্রতি সকলকে সহনশীল হতে হবে। পাখি শিকারিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।’

ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২১ at১৬:০৪:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/এএ/এমএসএইস