ববি শিক্ষার্থীদের উপর হামলা ঘটনায় : উত্তপ্ত বরিশাল, জনদুর্ভোগ

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপর হামলার বিচার দাবীতে দ্বিতীয় দফায় ১৩ ঘণ্টার আল্টিমেটাম শেষে ফের বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়ক অবরোধ করেছে শিক্ষার্থীরা। শনিবার (২০ ফেব্রুয়ারী) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে তারা ফের সড়ক অবরোধ করে। এদিকে দুই শ্রমিককে গ্রেফতারের প্রতিবাদে বাস চলাচল বন্ধ রেখে নগরীর রূপাতলী বাস টার্মিনাল এলাকায় সড়কে অবস্থান নিয়েছে শ্রমিকরা। সড়ক অবরোধ ও বাস চলাচল বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়েছেন প্রায় ৬ রুটের যাত্রী সাধারণ। এছাড়া শ্রমিকরা সড়কে অবস্থান করায় নগরীর বিভিন্ন স্থানে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। তবে যে কোন ধরণের অরাজকতা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিপুল সংখ্যক পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিএমপি’র কর্মকর্তারা।

গত মঙ্গলবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত অভিযোগের প্রেক্ষিতে শুক্রবার (১৯ ফেব্রুয়ারী) রাতে রনি ও ফিরোজ নামের দুই শ্রমিককে আটক করে কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় তারা জড়িত ছিলেন বলে জানিয়েছেন কোতয়ালী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ নুরুল ইসলাম। তবে আন্দোলনকারীরা বলছেন, শ্রমিক গ্রেফতারের ব্যাপারে তারা অবগত নন। তাদের তিন দফা দাবি আদায়ে আন্দোলন চলছে এবং দাবি পূরণ হলেই তারা আন্দোলন প্রত্যাহার করবেন বলে জানান।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, গত মঙ্গলবার মধ্যরাতে তাঁদের ওপর হামলার পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আহত শিার্থীরা হামলাকারীদের নামের তালিকা দিলেও প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে মামলা না করে অজ্ঞাতদের আসামি করে থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়। আবার সে অভিযোগে ঘটনার সঠিক বিবরণ না দিয়ে শুধু জখমের কথা উল্লেখ করা হয়। যা শিার্থীরা প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তারা।

এদিকে বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়ক অবরোধ করায় দুই দিকে কয়েকশ’ যানবাহন আটকে পড়েছে। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা, পায়রা বন্দর ও কুয়াকাটাগামী যাত্রীরা।

অপরদিকে গতকাল শুক্রবার রাতে ফিরোজ ও রনি নামের দুই পরিবহন শ্রমিককে গ্রেফতার করা হলে আজ শনিবার সকাল থেকে রুপাতলী বাসস্ট্যান্ড থেকে সব রুটের বাস চলাচল বন্ধ রেখেছে শ্রমিক ইউনিয়ন। এছাড়া বরিশাল বাস মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ শ্রমিকরা সড়কে অবস্থান নিয়ে গ্রেফতারকৃত শ্রমিকদের মুক্তির দাবীতে নানা শ্লোগান দিচ্ছেন। এ বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে রুপাতলী সহ নগরীর সকল স্থানে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে এবং যানবাহন চলাচল না করায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।

বিএমপি’র সিনিঃ সহকারী পুলিশ কমিশনার মোঃ রাসেল জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। শিক্ষার্থী ও শ্রমিকদের আন্দোলন প্রসংগে তিনি বলেন, যে কোন ধরণের নাশকতা বা অরাজক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার নগরীর রূপাতলী এলাকায় বিআরটিসি বাস কাউন্টারের স্টাফ কর্তৃক বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন শিার্থীকে লাঞ্ছিতর ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সেদিন দুপুর দেড়টা থেকে প্রায় ২ ঘণ্টা সেখানকার বাস টার্মিনালে অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে রফিক নামের অভিযুক্ত স্টাফকে পুলিশ গ্রেপ্তার করলে অবরোধ তুলে নেয় তারা।