যশোর আদালতে হত্যা মামলায় তিনজনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ

ছবি: প্রতীকী

যশোরের মণিরামপুর উপজেলার জয়পুর গ্রামের ইস্রাফিল হোসেন হত্যা মামলায় তিনজনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৮ ফেব্রুয়ারী) স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল জজ (জেলা জজ) আদালতের বিচারক সামছুল হক এক রায়ে এ দণ্ডাদেশ দিয়েছেন। দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, অভয়নগর উপজেলার সরখোলা গ্রামের জয়নাল আবেদিন মোল্লার ছেলে ইব্রাহিম মোল্লা, যশোর সদর উপজেলার ঘুনি মাঠপাড়ার সেকেন্দার আলী শেখের ছেলে ইউনুচ আলী শেখ ও কেশবপুর উপজেলার ভাল্লুকঘর গ্রামের এয়াকুব আলী খানের ছেলে ইউনুচ আলী খান।

নিহত ইস্রাফিল ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেল চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তিনি ২০০৯ সালের ২১ ডিসেম্বর দুপুর দুইটার দিকে মণিরামপুর দোলখোলা মোড়ে মোটর সাইকেল নিয়ে ভাড়ার জন্য অপেক্ষায় ছিলেন। একপর্যায়ে অপরিচিত একলোক তা্র মোটরসাইকেল ভাড়া নিয়ে যশোর সদরের দেয়াপাড়া ঘুনি গ্রামের নিয়ে আসেন। সেই থেকে ইস্রাফিল নিখোঁজ ছিলেন। পরদিন তার সজনরা দোলখোল মোড়ে গিয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে জানতে পারেন ইস্রাফিল যশোর সদরের দেয়াপাড়া ঘুনী গ্রামে গিয়েছিলেন। এরপ্র তারা ঐ গ্রামের ইউনুচের বাড়ি যান। ইউনুচের স্ত্রী স্বীকার করেনমোটরসাইকেল চালক ইস্রাফিল দুপুরে খাওয়ার পর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেছে। তবে পরে ইস্রাফিলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এরপর ইস্রাফিলের ছেলে ইউসুফ আলী বাদী হয়ে ইউনুচ, ইব্রাহিম ও মুজিবরকে আসামি করে মণিরামপুর থানায় হত্যা মামলা করেন।

মামলার তদন্তকালে পুলিশ ২০১০ সালের ২৩ জানুয়ারি এ হত্যার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ইউনুচ শেখ ও ইব্রাহিমকে আটক করে। এরপর তারা হত্যার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দিও দেন। তারা জানিয়েছিলেন, টাকা জোগাড় করতেই তারা মোটরসাইকেল ছিনতাই করার পরিকল্পনা করে। তারপর পরিকল্পনা অনুযায়ী ইস্রাফিলকে ভাড়া নিয়ে ঘুনি গ্রামের ইউনুচের বাড়িতে যান।

সেখানে তারা চারজন একসাথে দুপুরে খাবার খান। তবে তারা কৌশলে খাবারের মধ্যে চেতনানাশক দিয়ে ইস্রাফিলকে খাওয়ান। ইস্রাফিল অচেতন হয়ে পড়লে তাকে নিয়ে তারা মুচি খালের পাড়ে নিয়ে শ্বাসরোধ হত্যা করে। তারপর খালের মধ্যে লাশ পুঁতে রেখে পালিয়ে যায়। পরে তাদের স্বীকারোক্তিতে পুলিশ অপর আসামি ইউনুচ খানকে গ্রেফতার করে । সেও হত্যার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেয়।

এরপর ওই তিনজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই নাসির উদ্দিন। দীর্ঘ সাক্ষ্য গ্রহণ ও শুনানী শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিজ্ঞ বিচারক আজ ওই তিন আসামির প্রত্যেককে মৃত্যুদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা করে জরিমানার আদেশ দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, দণ্ডপ্রাপ্ত তিনজনই জামিনে মুক্তি পেয়ে আত্মগোপন করে। এজন্য আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ দিয়েছেন।