চৌগাছায় ইটের ভাটার ট্রাক ও ট্রাক্টরের ইঞ্জিনে বগি লাগানো বাহনগুলো চরম বেপরোয়া

যশোরের চৌগাছায় ইটের ভাটায় নিয়োজিত ট্রাক ও ট্রাক্টরের ইঞ্জিনে বগি লাগানো বাহনগুলো চরম বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এসব বাহন ইট ভাটার মাটি, বালু ও ইট বহনে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে সড়কগুলোতে। বেপরোয়া গতিতে চলার কারণে এসব বাহনের চাকায় পিষ্ঠ হয়ে ইতোমধ্যে এক শিশু ও এক নারীর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে।

সূত্র জানায়, উপজেলার বিভিন্ন প্রান্তে অন্তত ১৫ থেকে ১৭ টি ভাটা গড়ে উঠেছে। কিছু কিছু ভাটা সরকারের নিয়ম কানুন মেনে চলেলেও অধিকাংশ ভাটা কোন নিয়মই মানছে না। ইট ভাটার মালিকরা ভাটার কাজের জন্য এসব বাহন ভাড়া করে ভাটার কাজে নিযুক্ত করেছেন। এসব বাহনের নেই কোন বৈধ কাগজপত্র। এমনকি যে চালক এটি চালাচ্ছেন তারও ড্রাইভিং লাইসেন্স আছেন কিনা অনেকের সন্দেহ। অপ্রাপ্ত বয়সের ছেলেরাও বিনাবাধায় চালাচ্ছে এসব বাহন। যে কারণে চৌগাছার প্রতিটি সড়কে থেমে থেমে ঘটছে ছোট বড় দূর্ঘটনা।

গত ২০ ডিসেম্বর বিকেলে উপজেলার সুখপুকুরিয়া ইউনিয়নের রামকৃষ্ণপুর ভায়া আন্দুলিয়া সড়কে ঘটে এমনই এক মর্মান্তিক দূর্ঘটনা। আন্দুলিয়া গ্রামের মৃত কাঠু মিয়ার ছেলে স্কুল ছাত্র আব্দুল্লাহ আল মামুনের (৯) জীবন প্রদীপ নিভিয়ে দেয় মাটি বহনকারী ট্রাক। নিহতের স্বজনরা জানান, পড়ন্ত বিকেলে সে সড়কে বাইসাইকেল চালাচ্ছিল। এসময় দ্রুতগতির মাটি বহনকারী একটি ট্রাক তাকে চাপা দিলে সে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারায়।

২৫ ডিসেম্বর শুক্রবার দুপুরে ভাটায় মাটি কাটার কাজে নিয়োজিত ট্রাক কেড়ে নিয়েছে মমতাময়ী এক মায়ের জীবন। অলৌকিক ভাবে প্রাণে বেঁচে যায় ওই মায়ের কোলে থাকা ৮ মাসের কন্যা শিশু হাফিজা খাতুন। উপজেলার সলুয়া থেকে চাঁদপাড়া গ্রামের যাওয়ার পথে কয়ারপাড়া বাজার সংলগ্নে পৌছালে ভাটার ট্রাক তাদের মোটরসাইকেলকে থাক্কা দেয়। এতে মা নুর নাহার ঘটনাস্থলেই মারা যায়। কিছুটা আহত হয় পিতা হাফিজুর রহমান আর অক্ষত থাকে শিশু হাফিজা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলার সলুয়া, পাশাপোল, পুড়াপাড়া, চাঁদপাড়া, বুন্দলীতলা, দেবীপুর ও উপজেলা সদরের একাধিক ব্যক্তি বলেন, ভাটা মাালিকরা সমাজের বিত্তবান শ্রেনীর, তাদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না। এসব ভাটায় যারা কর্মরত আছেন, তারাও মালিকদের ইন্ধনে ধরাকে সরা জ্ঞান করেন। ফলে ভাটা গড়ে উঠা এলাকাসহ গোটা উপজেলাবাসি এদের কাছে জিম্মি। ভাটার কাজে নিয়োজিত ট্রাক যে সব সড়কে নিয়মিত চলাচল করছে প্রতিটি সড়কের এখন বেহালদশা। ভুক্তভোগী এলাকাবাসি ভাটার কাজে নিয়োজিত সকল বাহনকে একটি নিয়মের মধ্যে চলাচলের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহনে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

ডিসেম্বর, ২৭, ২০২০ at ২০:৫৯:২২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এমআই/এমআরএইস