পুলিশ সদস্য স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগ

পুলিশ সদস্য স্বামী মোঃ মহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে শারিরীক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ তুলেছে স্ত্রী সাথী খাতুন। সাথী মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়নের খালিয়া গ্রামের মৃত্যু সাইফার মোল্যার মেয়ে। মোবাইলের মাধ্যমে মহিদুলের সাথে সাথীর পরিচয় প্রেম, বিয়ে, নির্যাতন অত:পর অন্য মেয়ের সাথে স্বামী মহিদুলের প্রেমজ সম্পর্ক তৈরি ও বিয়ে হওয়ার জেরে শারিরীক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয় স্ত্রী সাথী খাতুন বলে অভিযোগ করে। সাথী তার ৪ বছরের নিঝুম নামের একটি মেয়ে সন্তানকে নিয়ে মায়ের বাড়িতে মানবেতর জীবন যাপন করছে।

উপজেলার ঘুল্লিয়া গ্রামে অনুসন্ধানে গেলে জানা যায় সাথীর বাবার মৃত্যুর পর তাদের কোনো জমিজমা না থাকায় মা সাজেদা বেগম দুই ছেলে-মেয়েকে নিয়ে ঘুল্লিয়া গ্রামে বাবার বাড়ী চলে আসে এবং বাবার জমিতে বাড়ি করে বসবাস করছেন। ২০১৬ সালে মোবাইলের মাধ্যমে ঝালকাটি জেলার কঠালিয়া উপজেলার তালগাছিয়া গ্রামের মোঃ ইউনুস হাওলাদারের ছেলে মহিদুলের সাথে সাথীর পরিচয় হয় এবং ১৩ জানুয়ারী ঢাকায় ১ম শ্রেণির ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত/নোটারী পাবলিক এবং কোতয়ালীর মেট্রোবার ভবনের কাজী অফিসে বিবাহ হয়। বিয়ের পর থেকে ভালো চলছিলো নবদম্পতির সংসার।

২০১৭ সালে সাথী কনসেপ্ট করলে এবং অন্য মেয়ের প্রতি স্বামী মহিদুলের নজর পড়লে সাথীর উপর শুরু হয় শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন। দিনে দিনে নির্যাতনের মাত্রা বাড়তে থাকে যা সাথী সহ্য করতে না পেরে ২০১৮ সালে নিজ এলাকা ঘুল্লিয়া মার কাছে চলে আসে এবং কোর্টে একটি যৌতুকের মামলা করে। প্রায় তিনমাস পর কোর্টের মাধ্যমে মামলার মিমাংসা হয় এবং সাথীকে নিয়ে আবার মহিদুল সংসার শুরু করে। কিন্তু মহিদুলের কোন পরিবর্ত হয়নি বলে সাথী আরো অভিযোগ করে জানান, শারিরীক ও মানসিক নির্যাতনের পাশাপাশি অশ্লীলভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। সহ্য করতে না পেরে চলতি মাসের ৪ তারিখে মায়ের কাছে চলে আসে এবং আইনি ব্যবস্থা নিতে দৌড়ঝাপ করছে বলে জানান।

সাথীর মা সাজেদা বেগম বলেন, আমার স্বামীর মৃত্যুর পর স্বামী বা শশুরের কোনো জমিজমা না থাকায় ঘুল্লিয়া বাবার জমিতে বাড়ী করে থাকি। খুব অভাব অনাটনে চলে আমার তিন সদস্য পরিবারের সংসার। নিজেরা চলতে পারিনা তারপর মেয়ে ও নাতনিকে নিয়ে খুব বিপদে আছি।

অভিযুক্ত স্বামী মহিদুল ইসলাম জানান, আমার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। সাথীকে কোন নির্যাতন করা হয়নি। সে বারবার আমার বিরুদ্ধে মামলা করে হয়রানী করার চেষ্টা করছে। দ্বিতীয় বিয়ের কথা জানতে চাইলে মহিদুল বলেন এটা মিথ্যা কথা। আমি আর কোন মেয়েকে বিয়ে করিনি। সাথীকে নিয়ে সংসার করার জন্যই তাকে বিয়ে করেছি এবং বাসা নিয়ে আলাদাও থেকেছি।

বিনোদপুর ইউপি’র চেয়ারম্যান শিকদার মিজানুর রহমান জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই।

এ বিষয়ে মহম্মদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তারক বিশ্বাস বলেন, আমরা কোন অভিযোগ পায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।