ভাসানচরের উদ্দেশে রোহিঙ্গারা

শুরু হয়েছে স্বেচ্ছায় ভাসানচরে যেতে চাওয়া রোহিঙ্গাদের শরণার্থী শিবির থেকে নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া। বুধবার বিকাল থেকেই ধীরে ধীরে শরণার্থী শিবির ছাড়তে শুরু করেছেন রোহিঙ্গাদের একাংশ। বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত শরণার্থী শিবির ছেড়ে আসা রোহিঙ্গাদের কুতুপালংয়ের ট্রানজিট ও কলেজ মাঠের পয়েন্টে রাখা হয়। সকালে সেখান থেকে ভাসানচরের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে রোহিঙ্গাদের বিশাল বহর।

কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের ৩৪টি ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে নিয়ে যেতে উখিয়া কলেজ মাঠে অস্থায়ী ট্রানজিট পয়েন্ট স্থাপন করা হয়েছে। মাঠে একাধিক কাপড়ের প্যান্ডেল ও বুথ তৈরি করা হয়েছে। সেখান থেকে তাদের ভাসানচরে স্থানান্তরের জন্য প্রয়োজনীয় পরিবহন ব্যবস্থা ও খাদ্যসামগ্রী মজুত করা হয়েছে আগেই। একই সাথে সুশৃঙ্খলভাবে তাদের ভাসানচরে স্থানান্তরের উদ্দেশ্যে কর্মরত রয়েছেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিবীর সদস্যরা।

প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার পর রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর কার্যক্রমকে সামনে রেখে ভাসানচর পরিদর্শনে যায় ২২টি এনজিওর প্রতিনিধি দল। সেখানে যেতে ইচ্ছুক রোহিঙ্গাদের জন্য তাই মজুত করা হয়েছে ৬৬ টন খাদ্যসামগ্রী। সেই সঙ্গে কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামে নিয়ে সেখান থেকে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে নেওয়ার জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে নৌবাহিনীর ১৪টি জাহাজ। প্রথম দুই মাস তাদের রান্না করা খাবার সরবরাহ করা হবে। এরপর নিজ নিজ বাসস্থানেই তারা রান্না করতে পারবেন।

কক্সবাজারের ৩৪টি ক্যাম্পে থাকা ১১ লাখ রোহিঙ্গার মধ্যে প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গাকে বঙ্গোপসাগরের মোহনায় জেগে উঠা ভাসানচর দ্বীপে অস্থায়ীভাবে পাঠানোর উদ্যোগ নেয় সরকার। এ কারণে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে আবাসন প্রকল্প নির্মাণও সম্পন্ন হয়েছে। সেই সঙ্গে জোয়ার ও জলোচ্ছ্বাস থেকে এই ৪০ বর্গকিলোমিটার এলাকা রক্ষা করতে ১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ এবং এক লাখ রোহিঙ্গা বসবাসের উপযোগী ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। নির্মিত হয়েছে সাইক্লোন সেল্টার, শিক্ষা ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা অবকাঠামো।

এর আগে মালয়েশিয়া যেতে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসা তিন শতাধিক রোহিঙ্গাদের বঙ্গোপসাগর থেকে উদ্ধার করে ভাসানচরে আশ্রয় দিয়েছে সরকার।

ডিসেম্বর ০৩, ২০২০ at ১৩:০৯:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/সক/এমএআর