ঝিনাইদহ-যশোর মহসড়ক ৬ লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্প উপস্থাপন আজ

ঝিনাইদহ-যশোর মহসড়ক ৬ লেনে উন্নীতকরণের প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। আজ মঙ্গলবার (২৪ নভেম্বর) প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে উপস্থাপন হওয়ার কথা রয়েছে।

একনেকে পাশ করা হলে চলতি বছর থেকে ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর।

ঝিনাইদহ-যশোর মহাসড়ক উইকেয়ার ফেজ-১, (এন-৭) উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ৪ হাজার ১৮৭ কোটি ৭০ লাখ টাকা।

সরকারের নিজেস্ব তহবিল থেকে ১ হাজার ৪৮২ কোটি টাকা এবং বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন হবে ২ হাজার ৭০৫ কোটি ৬৫ লাখ টাকা।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) থেকে জানা যায়, ওয়েস্টান ইকনোমিক করিডোর এন্ড রিজিওনাল এনহ্যান্সমেন্ট (উইকেয়ার) প্রোগ্রামের আওতায় ২০২০ সালের ২৭ মে ৫০০ মিলিয়ন ইউএস ডলার ঋণের জন্য বিশ্বব্যাংক ও সরকারের মধ্যে সমন্বয় হয়েছে।

এই ঋণের মধ্যে ৩১৮ দশমিক ৫০ মিলিয়ন ইউএস ডলার সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের ঝিনাইদহ-যশোর মহাসড়ক ৬ লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পে এবং বাকী ১৮১ দশমিক ৫০ মিলিয়ন ইউএস ডলার এলজিইডির সড়ক উন্নয়নে ব্যয় করা হবে।

প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, ভোমড়া-সাতক্ষীরা-নাভারণ-যশোর-ঝিনাইদহ-বনপাড়া-হাটিকামরুল এলাইনমেন্টটি ওয়েস্টার্ন ইকনোমিক করিডোরের গুরুত্বপূর্ণ রুট, যার মোট দৈর্ঘ্য ২৬০ কিলোমিটার। ওয়েস্টার্ন ইকনোমিক করিডর এন্ড রিজিওনাল এনহ্যান্সমেন্ট প্রোগ্রামের আওতায় বিশ্বব্যাংক ও এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের (এআইআইবি) ঋণ সহায়তায় ২৬০ কিলোমিটার সম্পূর্ণ করিডোর উন্নয়ন করা হবে।

করিডরটিকে মোট ৪টি অংশে ভাগ করা হয়েছে, যার মধ্যে ভোমড়া-সাতক্ষীরা-নাভারণ ৫৮ কিলোমিটার, যশোর-ঝিনাইদহ ৪৮ দশমিক ৫০ কিলোমিটার, ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া ৬৬ কিলোমিটার ও কুষ্টিয়া-বনপাড়া-হাটিকুমরুল ৮৭ দশমিক ৫০ কিলোমিটার। এই ৪টি অংশের মধ্যে ভোমড়া-সাতক্ষীরা-নাভারণ ও যশোর-ঝিনাইদহ অংশ উন্নয়নে বিশ্বব্যাংক এবং ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া ও কুষ্টিয়া-বনপাড়া-হাটিকুমরুল অংশ উন্নয়নে এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি) ঋণ সহায়তা দেবে।

প্রকল্পের মূল কার্যক্রম হচ্ছে- ১৫১ দশমিক ৪ হেক্টর ভূমি অধিগ্রহণ ও পুনর্বাসন, ৪৮ দশমিক ৫০ কিলোমিটার পেভমেন্ট নির্মাণ, ১ হাজার ৬৪৭ দশমিক ২৯ মিটার ফ্লাইওভার, ১৯৮ দশমিক ১২ মিটারের ৪টি ব্রিজ, ১৯৮ দশমিক ১০ মিটারের ৫৫টি কালর্ভাট, ১২টি পদচারী ওভারব্রিজ, ১টি আন্ডারপাস, ১ হাজার ৭৮৭ জনমাস নির্মাণ।

প্রকল্প বাস্তবায়ন তদারকির জন্য পরামর্শক সেবা, ইন্টেলিজেন্ট ট্রান্সপোর্টেশন সিস্টেস এবং অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল সিস্টেম ডিজাইনের জন্য পরামর্শক সেবা, প্রজেক্ট ইমপ্লিমেন্টেশন ইউনিট (পিআইইউ) সাপোর্টেও জন্য পরামর্শক সেবা, পুনর্বাসন কাজ বাস্তবায়নের জন্য এনজিও সেবা, ফেইজ-১ এর ডিজাইন রিভিউ এবং ফেইজ-৩ এর ফিজিবিলিটি স্টাডি ও ডিটেইলড ডিজাইন প্রণয়নের জন্য পরামর্শক সেবা, পরিবেশগত ও সামাজিক ব্যবস্থাপনার জন্য পরামর্শক সেবা এবং অভ্যন্তরীণ অডিটের জন্য পরামর্শক সেবা দেওয়া।

এ বিষয়ে প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের সাবেক ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সিনিয়র সদস্য শামীমা নার্গীস দেশ দর্পণ’কে বলেন, ‘প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে ওয়েস্টার্ন ইকনোমিক করিডোরের ২৬০ কিলোমিটারের মধ্যে ঝিনাইদহ-যশোর অংশের ৪৮ দশমিক ৫০ কিলোমিটার সার্ভিস লেনসহ ৬ লেনে উন্নীত করা হবে।

পরবর্তীতে ধাপে ধাপে অবশিষ্ট অংশগুলো উন্নয়ন সহজ হবে। এছাড়া দেশের উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে বেনাপোল, ভোমড়া স্থলবন্দর ও মোংলা সমুদ্রবন্দর এবং এশিয়ান হাইওয়ে, সার্ক হাইওয়ে করিডোর, বিমসটেক রোড করিডোর ও সাউথ এশিয়ান সাব-রিজিওনাল ইকনোমিক কো-অপারেশন (সাসেক) রোড করিডোরের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নসহ প্রকল্প এলাকার আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন হবে।

২৪ নভেম্বর, ২০২০ at ০০:০০:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এসএন/তআ