সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ হয়ে ছাত্রলীগ নেতাকে গণপিটুনি

গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের টঙ্গী পশ্চিম থানাধীন ৫৫ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম সানি’র নেতৃত্বে একের এক অপরাধমূলক কর্মকান্ড সংগঠিত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এসব বিষয়ে দীর্ঘদিন যাবত এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। তার কর্মকান্ডে অতীষ্ঠ হয়ে মঙ্গলবার (১৭ নভেম্বর) সকাল ১০ঘটিকার সময় এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে গণপিটুনি দেয় ছাত্রলীগ নেতা ও তার সাহযোগীদের।

পুলিশ ও এলাকাবাসি সূত্রে জানা যায়, কলাবাগান কবরস্থান সংলগ্ন বস্তি এলাকায় কয়েকজনের যৌথ মালিকানায় ঘর নির্মাণ করার জন্য প্রায় ৫২ বান্ডিল টিন ক্রয় করে ওই স্থানেই সারিবদ্ধ করে রাখা হয়। অথচ গত সোমবার গভীর রাতে ইব্রাহিম সানি’র নেতৃত্বে সাংগঠনিক সম্পাদক রিপন হোসেন ও পারভেজ হোসেন বেচুসহ ছাত্রলীগ নেতারা নৈশ প্রহরীকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে ভাগিয়ে দেয়। পরে ঘর তৈরির জন্যে রাখা প্রায় ৪৭ বান্ডিল টিন তারা রাতের আধারে লুটে নেয় এবং নির্মিত স্থাপনায় ভাঙচুর চালায়।

এলাকাবাসী জানায়, গত ১৪ নভেম্বর ইব্রাহিম সানি’র নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী গোলাপ মিয়ার বাড়িতে দেশীয় অস্ত্রসহ হামলা চালায়। এসময় তারা গোলাপ মিয়াকে মারধর করে তার বাড়ি বন্ধক মুক্ত করার উদ্দেশ্যে সংগ্রহ করা ৫ লাখ টাকা লুটে নেয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী গোলাপ মিয়া টঙ্গী পশ্চিম থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অর্থ লুটের বিষয়ে সোমবার বিচার হওয়ার কথা ছিল। বিচারটি নস্যাৎ করার লক্ষেই রাতে বাড়িঘরে ভাঙচুর ও টিন লুটের ঘটনা ঘটিয়েছে বলে এলাকাবাসী মনে করছে।

সরোজমিনে এলাকায় গিয়ে জানাযায়, এর আগে গত ২৫ অক্টোবর রাতে একই এলাকায় এক গৃহবধূকে ধর্ষণের চেষ্টাকারি এক যুবককে আটক করে পুলিশের সহায়তার জন্য ৯৯৯ এ ফোন দেয় ইব্রাহিম সানি। পুলিশ ঘটনাস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা দিলে বিষয়টি সমাধানের কথা বলে সানি মাঝ পথ থেকে ফিরিয়ে দেয় পুলিশ সদস্যদের। পরে অভিযুক্তের নগদ অর্থ ও গার্মেন্ট প্রশিক্ষণের মেশিনপত্র হাতিয়ে নেয়। এরপর থেকে এখনও পর্যন্ত সেই যুবকের কোন হদিস পাওয়া যায়নি।

এসব ঘটনায় এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে মঙ্গলবার সকালে ইব্রাহিম সানি ও তার সাহযোগীদের গণধোলাই দেয়। এ সময় টুম্পা ও শিরু মিয়া নামে আরও দুইজন আহত হয়। সানি’র বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলাও চলমান রয়েছে।

এই ব্যাপারে সানি বলেন, আমার কাছে পাওনা টাকার কারণে আমার ওপর হামলা হয়েছে। এ ব্যাপারে কোন আইনি ব্যবস্থা নেইনি।

এ বিষয়ে টঙ্গী পশ্চিম থানার এস আই আবুল হাসান জানান, মারামারির খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। তবে এ ঘটনায় অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

টঙ্গী পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি এমদাদুল হক মারামারির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।