রাণীশংকৈলের প্রাচীন স্থাপত্য রাজবাড়িটি ধ্বংসের মুখে

ঠাকুরগাঁওয়ে রাণীশংকৈল উপজেলার একমাত্র প্রাচীন স্থাপত্যের নিদর্শন মালদুয়ার রাজা টংকোনাথের রাজবাড়িটি ধ্বংশের পথে। ১৪ নভেম্বর শনিবার সরেজমিনে গিয়ে দেয়া যায় জরাজীর্ণ ও অবহেলিত অবস্থায় দন্ডায়মান রাজবাড়িটি।

দেখে মনে হয় বনজঙ্গল, চামচিকার অবাদ বিচরণ ও অনেক স্থান ধ্বসে পড়ার মর্মান্তিক দৃশ্য। সংস্কার ও সংরক্ষণের নেই কোন সরকারি উদ্যোগ বলে অভিযোগ সুসিল সমাজের। এটি উপজেলার পৌরশহরের শেষ প্রান্তে কুলিক নদীর তীরে অবস্থিত। ১৯১৫ সালে রাজবাড়িটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। টংকনাথের পিতার নাম বুদ্ধি নাথ চৌধূরী, বুদ্ধিনাথ চৌধূরী ছিলেন মৈথিলি ব্রাক্ষণ এবং কাতিহারের ঘোষ বাগোয়ালা বংশীয় জমিদারের শ্যামরাই মন্দিরের সেবায়েত।

নিঃসন্তান বৃদ্ধগোয়ালা জমিদার কাশিবাসে যাওয়ার সময় সমস্ত জমিদারি সেবায়েতের তত্ত্বাবধানে রেখে যান এবং তাম্রপাতে দলিল করে যান । তিনি কাশি থেকে ফিরে না এলে শ্যামরাই মন্দিরের সেবায়েত এই জমিদারির মালিক হবেন। পরে বৃদ্ধ জমিদার ফিরে না আসার কারণে বুদ্ধিনাথ চৌধুরী জমিদারী পেয়ে যান। তবে অনেকে মনে করেন এই ঘটনা বুদ্ধিনাথ চৌধুরীর দু-এক পুরুষ পূর্বেরও হতে পারে বলে অনেক প্রবীণেরা ধারনা করেন।

রাজবাড়ি নির্মাণের কাজ বুদ্ধিনাথ চৌধূরী শুরু করেলও শেষ করতে পারেনি । এটির কাজ সমাপ্ত করেন রাজা টংকনাথ। বৃটিশ সরকারের কাছে টংকনার্থ রাজা উপাধী পান। উনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগে রাজ বাড়িটি নির্মিত হয়। স্বাধীনতা যুদ্ধের পর পর থেকেই ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়় রাজবাড়িটি। যা কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে ইতিহাসের পাতা থেকে ।

অযন্তে অবহেলায় পড়ে রয়েছে রাজবাড়ীটি সংস্কারের অভাবে এখন ধ্বংসস্তূপ প্রায়। স্থানীয় সুশীল সমাজের দাবী রাজা টংকনাথের ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে এটির সংস্কার ও সংরক্ষণ করা অতি জরুরী । তা নাহলে উপজেলার পরবর্তী প্রজন্মের কাছে এটি বইয়ের পাতায় শুধুই ইতিহাস হয়ে রইবে।

১৪ নভেম্বর, ২০২০ at ২০:২৮:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এইচকে/এমএআর