পাইকগাছায় ১৫ বছর ধরে কবর স্থানে বসবাস ভ্যান চালক মামুন ও তার পরিবারের

পাইকগাছার ভূমি ও গৃহহীন ভ্যান চালক আল-মামুন গাজী পরিবার পরিজন নিয়ে কবর স্থানে বসবাস করছে। কোন জায়গা-জমি না থাকায় কবর স্থানের এক শতক জমির ওপর খুবড়ে ঘর বেঁধে ১৫ বছর যাবৎ পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে।

এমন খবর পেয়ে শনিবার সকালে মামুন যেখানে বসবাস করছে সেখানে ছুটে যান সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুহাম্মদ আরাফাতুল আলম। মামুনের পরিবারের সাথে কথা বলে বসবাসের সু-ব্যবস্থা করার আশ্বাস দিয়েছেন এসিল্যান্ড আরাফাতুল আলম। মামুন পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ড বান্দিকাটি গ্রামের মৃত্যু আব্দুর রহিম গাজীর ছেলে। দরিদ্র পরিবারে জন্ম হলেও মামুনদের পারিবারিকভাবে পৈত্রিক ভিটা ও কিছু জায়গা জমি ছিল।

অসুস্থ পিতা জীবিত থাকা কালীন সময়ে পারিবারিক সকল সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করা হয় মামুনকে। সেই থেকে স্ত্রী ও ৩ সন্তান নিয়ে পারিবারিক কবর স্থানের ১ শতক জায়গার ওপর একটি খুবড়ে ঘর তৈরী করে সেখান বসবাস করে আসছে মামুন ও তার পরিবার।

এ ব্যাপারে মামুন জানায়, আমি পেশায় একজন ভ্যান চালক, ভ্যান চালিয়ে কোন রকম সংসার চালাছি। কোন জমি কেনার সামর্থ আমার নাই। কবর স্থানের এক কোনায় একটি খুবড়ে ঘর তৈরী করে কোন রকম বসবাস করে আসছি। অল্প জায়গার মধ্য থাকা, খাওয়া ও বাথরুম সহ প্রয়োজনীয় সকল কাজ সম্পন্ন করতে হয়। এভাবে কোন মানুষ বসবাস করতে পারেনা।

অনেকটাই নিরুপায় হয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি। শুনছি মানবতার জননী প্রধানম্ত্রী শেখ হাসিনা যাদের ঘর নাই, তাদের পাঁকা ঘর তৈরী করে দিচ্ছে। এমন একটি ঘর তৈরী করে দিলে জীবনের পড়ন্ত বেলায় এসে পরিবার পরিজন নিয়ে একটু শান্তিতে বসবাস করতে পারতাম।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুহাম্মদ আরাফাতুল আলম জানান, এমন একটি খবর শুনে মামুন যেখান বসবাস করছে সেখানে গিয়ে তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। দেখে মনে হয়েছে সত্যিই মামুন ও তার পরিবার মানবেতর জীবন যাপন করছে। প্রকৃত পক্ষে সে ভূমিহীন কিনা সেটা যাচাই বাছাই করে দেখা হচ্ছে।

সে যদি ভূমিহীন হয়ে থাকে মুজিব শতবর্ষে মাননীয় প্রধানম্ত্রী শেখ হাসিনা যে ঘোষণা দিয়েছেন দেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না। এ কর্মসূচির আওতায় মামুনকে অন্তরভুক্ত করা যায় কিনা বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে ভূমি প্রশাসনের এ কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

১৪ নভেম্বর, ২০২০ at ২০:২৩:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/আইএইচ/এমএআর