নদী খননে স্থায়ী পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

ফাইল ছবি

নদী খননের জন্য স্থায়ী পদক্ষেপ গ্রহণে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে বৃষ্টির পানি ধরে রাখার জন্য বাফার জোন গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন তিনি।

মঙ্গলবার রাজধানীর শেরে-বাংলা নগরের এনইসি সভাকক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এই অনুশাসন দেন।

একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সভায় যুক্ত হন তিনি।

সভা শেষে পরিকল্পনা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আসাদুল ইসলাম ব্রিফিংয়ে বলেন, একনেক সভায় ২ হাজার ৪৫৯ কোটি ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ৪টি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

এসব প্রকল্পের সরকারি অর্থায়ন ১ হাজার ৬৬৯ কোটি ৩১ লাখ টাকা, সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ১৮২ কোটি ১৪ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক উৎস হতে প্রকল্প সাহায্য পাওয়া যাবে ৬০৭ কোটি ৭০ লাখ টাকা।

অনুমোদিত প্রকল্পের মধ্য দু’টি নতুন ও দু’টি সংশোধিত প্রকল্প রয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

একনেকে অনুমোদন হওয়া সিরাজগঞ্জ জেলার কাজিপুর উপজেলাধীন সিংড়াবাড়ী, পাটাগ্রাম ও বাঐখোলা এলাকা সংরক্ষণ প্রকল্পের বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য মো. জাকির হোসেন আকন্দ জানান, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড অক্টোবর ২০২০ থেকে জুন ২০২৩ মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।

প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো- যমুনা নদীর ডান তীরে প্রকল্প এলাকায় অবস্থিত আবাসিক ভবন, স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসা, হাট-বাজার, ইউনিয়ন পরিষদ অফিস, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, সরকারি বেসরকারি অবকাঠামো, ফসলি ও কৃষি জমি, রাস্তা ঘাট রক্ষাসহ আনুমানিক ৪ হাজার ৩৪৪ কোটি ২৫ লাখ টাকার সম্পদ নদী ভাঙন হতে রক্ষা করা।

জাকির হোসেন বলেন, প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে ৬ কিলোমিটার নদীর তীর সংরক্ষণ, ১২ দশমিক ৪০ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ পুনরাকৃতিকরণ এবং ১ দশমিক ১৫ কিলোমিটার ক্ষতিগ্রস্ত নদী তীর সংরক্ষণ কাজ পুনর্বাসন ও শক্তিশালীকরণ।

প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে সিরাজগঞ্জ জেলা বন্যা হতে রক্ষা পাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

মাছের আহরণোত্তর অপচয় হ্রাস করার লক্ষ্যে আধুনিক পদ্ধতিতে মানসম্পন্ন শুঁটকি মাছ উৎপাদন বৃদ্ধি, সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরণ ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে একনেক সভায় ১৯৮ কোটি ৭৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘কক্সবাজার জেলায় শুঁটকি প্রক্রিয়াকরণ শিল্প স্থাপন’ প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া অনুশাসনের বিষয়ে পরিকল্পনা সচিব জানান, প্রধানমন্ত্রী নদী খনন ও বড় বড় নদীর নাব্যতা রক্ষায় সময়োপযোগী পরিকল্পনা গ্রহণের নির্দেশ প্রদান করেন। একই সঙ্গে তিনি নদীতে বালু চর চিহ্নিত করে তা খননের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ারও নির্দেশ দেন।

তিনি জানান, বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পানি ধরে রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী বাফার জোন গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী আগামীতে একনেকে নদী খনন প্রকল্প উপস্থাপন ও নদী খননের জন্য স্থায়ী পদক্ষেপ গ্রহণে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন। তিনি পুনরায় নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা বলেন।

আসাদুল ইসলাম জানান, সামনের শীত মৌসুমে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আসতে পারে এই আশঙ্কা ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এই ঢেউ মোকাবিলার প্রস্তুতি গ্রহণ ও মাস্ক পরার বিষয়ে জনসচেতনতা তৈরির জন্য সরকারি কর্মকর্তাদের কাজ করতে হবে।

একনেকে অনুমোদিত অন্য দু’টি প্রকল্প হলো- মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘দোনা-ডাঙ্গা-ঘোড়াশাল জেলা মহাসড়কে এক স্তর নিচু দিয়ে উভয় পার্শ্বে পৃথক সার্ভিস লেনসহ ৪-লেনে উন্নীতকরণ (ডাঙ্গা বাজার-ইসলামপুর লিংকসহ) (১ম সংশোধিত) এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘আমিনবাজার-মাওয়া-মোংলা ৪০০ কেভি সঞ্চালন লাইন (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্প।

০৩ নভেম্বর, ২০২০ at ২০:৪৪:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/দেরু/এমএআর