চৌগাছার প্রধান বাজারে শীতের সবজির ব্যাপক সমারোহ, দাম আকাশ ছোঁয়া

যশোরের চৌগাছার মানুষ নিত্যপন্যের বাজার দরের কাছে এক প্রকার অসহায় হয়ে পেড়েছে। গত ৭/৮ মাস ধরে বাজারের প্রতিটি পন্যের দাম উর্দ্ধমুখি হওয়ায় নাজেহাল তারা। বিশেষ করে মহামারি করোনা ভাইরাসের কারনে কর্মহারা ব্যক্তিরা পরিবার পরিজন নিয়ে নিদারুন কষ্টে দিন পার করছেন।

শহর থেকে প্রত্যান্ত গ্রামাঞ্চলের নিন্ম আয়ের মানুষের কষ্ট সব থেকে বেশি। বর্তমান পরিস্থিতিতে বাজার মনিটরিং করে নিত্যপন্য সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আনার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীসহ সচেতন মহল।

কৃষি প্রধান উপজেলা হিসেবে খ্যাত যশোরের চৌগাছা। এমন কোন ফসল নেই যে, অত্র উপজেলাতে উৎপাদন হয়না এমনটিই জানালেন এ অঞ্চলের কৃষকরা। ধান,পাট শাক, সবজি, ফল ফলাদিসহ সব ধরনের ফসল উৎপন্নের এক স্বর্গরাজ্য হিসেবে খ্যাত চৌগাছা। সেই চৌগাছার মানুষ প্রায় ১ বছর ধরে নিত্যপন্যের বাজার দরের কাছে অসহায় হয়ে পড়েছে।

কখনও পোঁয়াজ কান্ড আবার কখনও আলু, এর সাথে আছে কাঁচামরিচ। এ সব পন্যের অতিরিক্ত দাম দিতে যেয়ে আজ অনেকেই নাজেহাল।

সোমবার চৌগাছা সাপ্তাহিক হাটের দিনে প্রধান কাঁচা বাজার ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ খুচরা দোকানে পন্য বিক্রি নিয়ে ক্রেতা বিক্রেতার মধ্যে অহেতুক তর্ক লেগেই আছে। বাজারের আড়ৎ থেকে চড়া মূল্যে প্রতিটি পন্য কিনতে হচ্ছে খুচরা ব্যবসায়ীদের। তারা এর সাথে আরও কিছু দাম যোগ করে সাধারন ক্রেতার নিকট বিক্রি করছেন। এ নিয়ে ক্রেতা বিক্রেতার মধ্যে বাকবিতান্ড এখন যেন নিয়মে পরিনত হয়েছে।

এদিন বাজারে ১ কেজি আলু বিক্রি হয়েছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকায়। একই ভাবে ১ কেজি পেঁয়াজ ৭৫ থেকে ৮০, কাঁচামরিচ ১৫০ থেকে ১৭০, ফুল কপি ৪৫ থেকে ৬০, মুলা ৪০, মিষ্টি কুমড়া ৫০, বেগুন ৫০, শশা ৩০, টমেটো ৮০, করল্লা ৫০, পেঁপে ৩০, কাঁচাকলা ৫০, পুল্লা ২০, পটল ৫০, দস্তাকচু ৫০, সারোকচু ৪০, ওল ৫০, ভেন্ডি ৪০, ঝিঙে ৩৫, বরবটি ৪০, সিম ১০০, বাঁধাকপি ৪৫ থেকে ৬০, কুশি ৪০,পাতা কপি ৪০ থেকে ৬০টাকা, কচুরলতি ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। শীতের আগমন না ঘটলেও শীতের সব ধরনের সবজি বাজারে আসতে শুরু করেছে, এই সময়ে সবজির দাম ক্রেতা সাধারনের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকার কথা থাকলেও এ বছর ভিন্ন। প্রায় এক বছর ধরে সবজির বাজার চড়া থাকায় দিশেহারা মানুষ।

সোমবার হাটে বাজার করতে আসা উপজেলার এক গ্রাম পুলিশ নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, অল্প বেতনে চাকুরী করে পরিবার পরিজন নিয়ে এই উর্দ্ধগতির বাজার দরের কাছে হেরে যাচ্ছি। সোমবার থানায় সাপ্তাহিক হাজিরা দিতে আসতে হয়। প্রতি সোমবারের মত আজও বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় বাজারের ফদ্দ হাতে ধরিয়ে দেয় গৃহীনি। কিন্তু ৫০০ টাকার সবজি কিনেছি তাতে বাজারের প্যাকেট অর্ধেকও হয়নি। এখন বাধ্য হয়ে বাজার তালিকা কিছুটা ছাটকাট করে কেনাকাটা শেষে বাড়ি ফিরবো। এই অবস্থা চলতে থাকলে কিভাবে বেঁচে তাকবো ভেবে পাইনা।

প্রত্যান্ত গ্রাম এলাকা থেকে বাজার করতে আসা একাধিক নিন্ম আয়ের মানুষের সাথে কথা হলে তারা বলেন, শাক সবজির বাজার যে এতো চড়া এর আগে কখনও দেখেনি। গ্রাম থেকে গ্রাম এলাকার স্বল্প আয়ের মানুষ নিদারুন কষ্টে আছেন। নুন আনতে পান্ত ফুরাই এ ধরনের পরিবারে কবে আবার স্বচ্ছলতা ফিরে আসবে তা কেউ বলেতে পারেনা।এমতাবস্থায় বাজার মনিটারিং করে সব ধরনের পন্য ক্রেতা সাধারনের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আনার জোর দাবি জানিয়েছেন উপজেলার সচেতন মহল।

০২ নভেম্বর, ২০২০ at ১৯:৫৪:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এইচকে/এমএআর