লাল ফিতার দৌরত্ব দুর করে ই-ফাইলে খরচসহ হয়রানি ও দূর্ণীতি কমেছে : যশোরে পলক

২৬ মার্চের পর যখন সারাদেশে করোনা মহামারির কারণে সরকারের দপ্তরগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হলো, সারাদেশ লকডাউন ঘোষণা করা হলো। কিন্তু জননেত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রযুক্তির কল্যাণে একটা দিনের জন্যও কিন্তু প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ হয়নি। আমাদের একেবারে উপজেলা পর্যায় থেকে সচিবলয় পর্যন্ত, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত সকল ফাইল লাল ফিতার দৌরত্ব দুর করে ই-ফাইলের মাধ্যমে মাত্র ৭ মাসে ১০ লক্ষেরও বেশি ই-ফাইল নিষ্পন্ন করেছি। এর ফলে খরচ কমেছে, হয়রানি কমেছে, দূর্ণীতি কমেছে। একই সাথে সেবার মান বেড়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) বেলা ১২ টায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, এমপি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) আভিযানিক কার্যক্রমকে আধুনিক, যুগোপযোগী ও গতিশীল করার লক্ষ্যে বিজিবি রিজিয়ন সদর দপ্তর, যশোরের আওতাধীন যশোর ব্যাটালিয়ন (৪৯ বিজিবি) এ একটি অত্যাধুনিক ডাটা সেন্টার ডিজাস্টার রিকভারী সাইট’ শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ সব কথা বলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে জুনাইদ আহমেদ পলক আরও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার দূরদর্শী, সাহসী এবং সৎ নেতৃত্ব এবং মাননীয় প্রধান সুযোগ্য সন্তান জাতির পিতা শেখ মুজিবর রহমানের দৌহিদ্র তরুণ প্রজন্মের গর্ব প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা সজিব ওয়াজেদ জয়ের সুপরামর্শ এবং নেতৃত্বে আজকে বাংদেশের একেবারে ইউনিয়ন থেকে গ্রাম পর্যন্ত ইন্টারনেট কানেকটিভিটি পৌঁছে গেছে।

তিনি আরও বলেন, সারাদেশে সর্বত্র ৪ জি মোবাইল নেটওয়ার্ক আছে। এমনকি আমাদের ফাইবার অপটিক্যাল কেবল ৩ হাজার ৮ শ ইনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছেন সজীব ওয়াজেদ জয়।

জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সজীব ওয়াজেদ জয় বিশ্বের ৫৭ তম দেশ হিসেবে মহাকাশে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট সফলভাবে উৎক্ষেপন করেছেন। যার সুফল আজকে শুধু যশোর নয় প্রত্যন্ত দ্বীপ, চর, দূর্গম পাহাড় সেখানেও কিন্তু বাংলাদেশের নাগরিকরা ইন্টানেটে সংযোগ পাচ্ছে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট থেকে। আজকে বাংলাদেশে ৪৩ হাজার সরকারী ওয়েবসাইট তৈরী হয়েছে। যেখান থেকে প্রায় ১ হাজারেরও বেশী সরকারী সেবা প্রদান করা হচ্ছে। ই-নথির মাধ্যমে বাংলাদেশের সাড়ে ৮ হাজার দপ্তরকে সংযুক্ত করা হয়েছে। আমরা বিগত ৭ মাসে ১০ লক্ষেরও বেশি ই-ফাইল সম্পূর্ণ করেছি।

তিনি আরো উল্লেখ করেন, ২৬ মার্চের পর যখন সারাদেশে করোনা মহামারির কারণে সরকারের দপ্তরগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হলো, সারাদেশ লকডাউন ঘোষণা করা হলো। কিন্তু জননেত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রযুক্তির কল্যাণে একটা দিনের জন্যও কিন্তু প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ হয়নি। আমাদের একেবারে উপজেলা পর্যায় থেকে সচিবলয় পর্যন্ত, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত সকল ফাইল লাল ফিতার দৌরত্ব দুর করে ই-ফাইলের মাধ্যমে মাত্র ৭ মাসে ১০ লক্ষেরও বেশি ই-ফাইল নিষ্পন্ন করেছি। এর ফলে খরচ কমেছে, হয়রানি কমেছে, দূর্ণীতি কমেছে। একই সাথে সেবার মান বেড়েছে।

এ সময় বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোঃ সাফিনুল ইসলাম, বিজিবিএম (বার), এনডিসি, পিএসসি, জেনারেল অফিসার কমান্ডিং, ৫৫ পদাতিক ডিভিশন, বিজিবি’র উর্দ্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দসহ অন্যান্য স্বনামধন্য আইটি প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক ও ফিনান্সিয়াল প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

আন্তর্জাতিক ভাবে ডাটা সেন্টার নির্মাণের গাইড লাইন্স অনুযায়ী প্রাকৃতিক দূর্যোগ বা অন্য যে কোন ধরনের দূর্ঘটনাবশত ডাটা সেন্টারের ডাটা ক্ষতিগ্রস্থের হাত থেকে রক্ষা করার লক্ষ্যে ভিন্ন সিসমিক জোন এ আরও বৃহৎ কলেবরে এই ডাটা রিকাভারী সাইট স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়।
উক্ত পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ২৯ জুন ২০১৮ তারিখে বিজিবি মহাপরিচালকের নির্দেশক্রমে যশোর রিজিয়ন এলাকায় ডাটা সেন্টারের জন্য আপদ কালীন ব্যবস্থা হিসেবে ডিজাস্টার রিকভারী সাইটের প্রাথমিক পর্যায়ে একটি স্থান নির্বাচন করা হয়। সে মোতাবেক অবকাঠামো ও ইনফার্স্টাকচার এবং বিভিন্ন ইকুইপমেন্ট স্থাপন/সংযোজনের মাধ্যমে পরিকল্পনা অনুযায়ী ডিআর সাইট এর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। বর্তমানে উক্ত ডিজাস্টার রিকভারী সাইটের অবকাঠামো ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি স্থাপনের কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে।

ডিজিটাল বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে ডাটা সেন্টার জগতে বিজিবি ডিজাস্টার রিকভারী সাইট একটি অনন্য মাইল ফলক হিসেবে বিবেচনা করা যায়। এই ডিজাস্টার রিকভারী সাইট এ কার্যক্রম সম্পন্নের মাধ্যমে বিজিবি একটি বিরাট সাফল্য অর্জন করতে সামর্থ হয়েছে এবং অন্যান্য বাহিনী ও সংস্থার সাথে তুলনা করলে এটি একটি অনন্য মাইলফলক হিসেবে বিবেচ্য হবে। এসকল তথ্য বিজিবি‘র জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরিফুল ইসলাম।

তথ্যানুযায়ী, যে কোন দূর্যোগ বা দূর্ঘটনায় ডাটা সেন্টারের সকল ডাটা সমূহ উক্ত ডিজাস্টার রিকভারী সাইট এ অধিক নিরাপত্তার সাথে সুরক্ষিত থাকবে। এছাড়াও, ডাটা সেন্টারে রক্ষিত সীমান্ত ব্যাংকের ডাটা সংরক্ষণ ছাড়াও বাংলাদেশের ডিজিটাল ডাটা নিরাপত্তায় যে কোন সংস্থার জন্য অগ্রণী ভূমিকা রাখবে।