নেসকোর অনিয়ম দুর্নীতি ও ভূতুড়ে বিল বন্ধের দাবিতে রাজশাহীতে বিক্ষোভ

উত্তরবঙ্গে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সেবা সংস্থা ‘নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানী’র (নেসকো) গ্রাহক সেবা নিশ্চিত করে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ্ ও ভুতুড়ে বিলের ভোগান্তি বন্ধের দাবিতে রাজশাহীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টা নেসকো’র প্রধান কার্যালয়ের সামনে থেকে ঘণ্টাব্যাপী এ কর্মসূচির আয়োজন করে রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদ। কর্মসূচি থেকে অবিলম্বে নেসকোর ভৌতিক বিল আদায় বন্ধ, নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সেবা নিশ্চিত ও দুর্নীতি, অনিয়ম ও হয়রানী বন্ধেরও দাবি জানানো হয়। একই সাথে কর্মসূচি থেকে এসব দাবিতে বুধবার বিদ্যুৎ ও জালানী মন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ করা হবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়। স্মারকলিপির অনুলিপি প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠানোর হবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়। কর্মসূচি থেকে অবিলম্বে ভুতুড়ে বিলের ভোগান্তি বন্ধ, গ্রাহক সেবা নিশ্চিত করে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে নেসকো কার্যালয় ঘেরাও করার হুশিয়ারি দেওয়া হয়।

মানববন্ধন ও সমাবেশ বিভিন্ন পেশাজীবীরাও অংশ নিয়ে নেসকোর বিদ্যুৎ পরিচালন সেবায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন। বক্তারা বলেন, কোম্পানীতে রূপান্তরিত হওয়ার পর থেকে জবাবদিহীতা ছাড়ায় চলছে নেসকোর কার্যক্রম। আর বিদ্যুৎ বিলের ভোগান্তি সবচেয়ে অসহনীয়। ঘরে বসেই ইচ্ছেমত বিল তৈরীর কারনে নাজেহাল হচ্ছে সাধারণ মানুষ।

বক্তারা বলেন, করোনাকালে নেসকোর উর্ধতন কর্তৃপক্ষের ইশারায় ভোগান্তি চরমে পৌঁচেছে। মিটার রিডিং না দেখে অফিস থেকে মনগড়া বিদ্যুতের বিল করার জন্য হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে গ্রাহকদের। এতে কারো কারো ১০ গুন পর্যন্ত বিদ্যুতের বিল দেখানো হয়েছে। তারা বলেন, প্রতিনিয়ত ভৌতিক বিলের ঘটনা ঘটলেও তার কোনো সুরাহা হচ্ছে না। গ্রাহকরা একের পর অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না। নগরীর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও ঘন্টায় ঘন্টায় লোড শেডিং হচ্ছে। আর বিদ্যুৎ বিল করা হয়েছে কয়েকগুন। এরই মধ্যে ডিজিটাল প্রিপেইড মিটার স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যা গ্রহকসেবায় আরো হয়রানীর মুখে পড়বে হলে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়।

তারা আরও বলেন, সবচেয়ে বাজে সেবা সংস্থা নেসকো প্রতিষ্ঠার পর থেকেই দুর্নীতি ও ভুলে ভরা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। তারা বলেন, বিদ্যুৎ বিল কমবেশি হতে পারে। কিন্তু এতো কমবেশি মেনে নেয়ার মত না। বক্তারা বলেন, অফিস থেকেই মনগড়াভাবে বিল দেয়া হচ্ছে।
রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি মো. লিয়াকত আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মসূচিতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান, সাংঠনিক সম্পাদক দেবাশিষ প্রমাণিক দেবু, ডা. আব্দুল মান্নান, রাজশাহী চেম্বারের সাবেক পরিচালক হারুনার রশিদ, ন্যাপ নেতা মুস্তাফিজুর রহমান খান আলম, বিএফইউজে সহ-সভাপতি মামুন-অর-রশিদ, আইনজীবী নেতা এন্তাজুল হক বাবু, বাপা, রাজশাহীর সহসভাপতি সেলিনা বেগম, মুক্তিযোদ্ধা রবিউল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা হাকিম আতাউর রহমান, আলতাব হোসেন, আব্দুল মতিনম বজলুর রহমান, সেভ দি ন্যাচার চেয়ারম্যান মিজানুর রজমান, উন্নয়ন কর্মী সুব্রত পাল, ওয়েব সভাপতি আঞ্জুমান আরা লিপি প্রমুখ।