ঝিকরগাছার অগ্নিদদ্ধ শিশু আল-আমিনের মৃত্যু

দীর্ঘ ১৫ দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন শিশু আল-আমিন(৫)। শুক্রবার বিকাল তিনটার দিকে যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার বাকুড়া গ্রামের নিজ বাড়িতে শিশুটি মারা যায়। দুই পরিবারের রশি টানাটানিতে একটি শিশুর করুণ মৃত্যুতে এলাকা জুড়ে ব্যাপক শোক ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

গত ৭ অক্টোবর রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় বাকুড়া গ্রামের নিজ বাড়িতে রহস্যজনক ভাবে অগ্নিদগ্ধের শিকার হয়েছিল শিশু আল-আমিন। রাতেই তাকে পরিবারের লোকজন যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেলে স্থানন্তর করেন দায়িত্বরত চিকিৎসক। ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত তাকে ঢাকা মেডিকেলের বান ইউনিটে চিকিৎসাধীন ছিল। কিছুটা সুস্থ হলে গত ১৮ অক্টোবর শিশুটির নানী সকিরন নেছা তাকে বাড়িতে নিয়ে আসেন এবং শুক্রবার বিকালে শিশুটি মারা যায়। দীর্ঘ ১৫ দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন শিশু আল-আমিন। দুই পরিবারের রশি টানাটানিতে একটি শিশুর করুণ মৃত্যুতে এলাকা জুড়ে ব্যাপক শোক ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে বিজ্ঞ আদালতে পিতা দাউদ সরদার ও নানী সকিরন নেছার দায়ের করা পৃথক মামলা থাকায় শিশুটিকে ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হচ্ছে বলে বাঁকড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের দায়িত্বরত অফিসার এস আই হাফিজুর রহমান জানিয়েছেন।

এদিকে শিশুটির জন্মের পর অপহরণ ও হত্যার ঘটনায় ২০১৫ সালে সকিরন নেছার দায়ের করা মামলায় দাউদ সরদার ৮ মাস ও তার স্কুল শিক্ষিকা মেয়ে রোকেয়া খাতুন ২৩ দিন জেল-হাজত খেটেছে। জামিনে মুক্তি পেয়ে শংকরপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান ধাবক ও ইউপি সদস্য মহসিন আলীর মাধ্যমে ৬ লক্ষ টাকার মাধ্যমে মীমাংসা হয়েছিল। এ ঘটনার প্রায় তিন বছর পর ওই শিশু বেঁচে আছে মর্মে তার পিতৃত্বের দাবিতে আবারো মামলা করেন নানী সকিরন নেছা। এ সময় দাউদ সরদার তার সন্তান দাবি করলে নানী সকিরন নেছা তাকে দিতে রাজি হয়নি। ফলে শিশুটির বয়স ১২ বছর পর্যন্ত তার নানীর হেফাজতে থাকবে মর্মে বিজ্ঞ আদালত দাউদ সরদারকে এককালিন ৫ লক্ষ টাকা দেয়ার নির্দেশ দেন। সে মোতাবেক চলতি বছরের ফেব্রুয়ারীতে দাউদ সরদার বিজ্ঞ আদালতে ৫ লক্ষ টাকা জমা দেন। দাউদ সরদার ও তার পরিবার জানান, দু’দফায় তিনি ১১ লক্ষ টাকা দিয়েছেন। শিশুটিকে নিয়ে তার নানা-নানী যশোর সদরের এড়েন্দা এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে। তারা কেউ গ্রামে থাকেন না। শিশুটির মায়ের অন্যত্র বিয়ে হয়েছে। আগামী ১ নভেম্বর মামলার রায় হওয়ার কথা রয়েছে।

এদিকে শিশুটি অগ্নিদদ্ধ হওয়ার পর বাবা দাউদ হোসেন আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। তাতে তার নানী সাকিরন নেছা ও মা তামান্না খাতুনকে আসামী করা হয়েছিল। এ ব্যাপারে শিশু আল-আমিনের নানী সাকিরন নেছা ০১৩০৪-৩৬২৪৮৭ যোগাযোগ করা হলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

২৩ অক্টোবার, ২০২০ at ১৯:২৩:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এমএ/এমএএস