যশোরে বিএনপি’র পোলিং এজেন্টদের বের করে দেয়ার অভিযোগ

যশোর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ জানিয়েছে বিএনপি।

অভিযোগে তারা বলছেন, ১৫০টি কেন্দ্রে ধানের শীষ প্রতীকের পোলিং এজেন্টদের প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। এ সময় পুলিশ নীরব ভূমিকা পালন করছিল উল্লেখ করে সেখানে আরও জানানো হয়, পৌরসভার ভতরে কয়েকটি কেন্দ্রে বোমারও বিস্ফোরণ ঘটেছে।

তবে ভিন্ন কথা বলছেন আইনশৃঙ্খল বাহিনীসহ জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। অনিয়ম নিয়ে তাদেরকে কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি।

দুই একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া যশোর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে শেষ হয়েছে। সকাল ৯টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। সকালে ভোটারের উপস্থিতি থাকলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে উপস্থিতি কিছুটা বাড়ে। কেন্দ্রে নৌকার কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে উৎসবের আমেজ লক্ষ্য করা গেছে।

তবে দেড় শতাধিক কেন্দ্র থেকে ধানের শীষের পোলিং এজেন্টদের বের করে দেয়ার অভিযোগ করছে বিএনপি। যশোর জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা ও উপ-নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার বরাবর এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। অভিযোগ দিয়েছেন ধানের শীষ প্রার্থীর প্রধান এজেন্ট ও জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন।

এতে তিনি উল্লেখ করেছেন- ১৫০ কেন্দ্রে ধানের শীষ প্রতীকের পোলিং এজেন্টদের প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। এ সময় পুলিশ নিরব ভূমিকা পালন করে। অভিযোগে আরও বলা হয়েছে পৌরসভার মধ্যে সেবাসংঘ স্কুল, সম্মেলনী স্কুল ও চুরিপটি কেন্দ্রে থেমে থেমে বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।

মঙ্গলবার (২০ অক্টেবর) সকাল ৯টা থেকে এই উপজেলার উপ-নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়। বিরতিহীনভাবে চলে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। শুরুতে ভোটার উপস্থিতি কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ে ভোটার।

নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যশোর সদর উপজেলার সিরাজসিংহ গ্রামে ধানের শীষের কর্মী সমথর্ক ও নৌকা প্রতীকের সমথর্কের মধ্য সংঘর্ষে ধানের শীর্ষের তিনজন আহত হন। তাদেরকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

যশোর শহরের সেবাসংঘ বালিকা বিদ্যালয়ে ভোটকেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। এ কেন্দ্রে বেলা সাড়ে ১১ টায় ভোট দেন যশোর সদর আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ, যশোর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুজ্জাম পিকুল, আওয়ামী লীগের প্রাথী নুর জাহান ইসলাম নীরা।

এ কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার নাজমুল হাসান জানান, নারী ও পুরুষ ভোটার মিলে এই কেন্দ্রের ভোটার ৬২০০। এখানে প্রায় ৮০ ভাগ ভোট কাস্ট হয়েছে।

যশোর শহরের তারাপ্রসন্ন মহাবিদ্যালয়ের ভোটকেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার আজমির হোসেন জানান, এ কেন্দ্রে ভোটার তিন হাজার ৭০০ জন। এখানে ১২টি বুথ রয়েছে। সকাল ৯ টা থেকে বেলা সাড়ে ১২ পর্যন্ত ১১০০ ভোট পড়ে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটার আরও বাড়ে।

যশোর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার থাকায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ হয়েছে।

বোমা বিস্ফোরণের অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ রকম কোনো ঘটনা ঘটেনি।

জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান জানিয়েছেন, কোথাও অপ্রীতিকর ঘটনার তথ্য পাওয়া যায়নি। যদি কোনো প্রার্থীর লোকজন ভোট চলাকালে বা পরে বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করে তার বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন ও সরকারের কঠোর নির্দেশনা রয়েছে।

সদর উপজেলার ১৭৫টি কেন্দ্রে পাঁচ লাখ ৬০ হাজার ৫২৪ জন ভোটার রয়েছে। ভোট গ্রহণের দায়িত্বে ১৭৫ জন প্রিজাইটিং অফিসার ও এক হাজার ১৩ জন পোলিং অফিসার রয়েছে।

যশোর সদর উপজেলার তৎকালীন চেয়ারম্যান শাহীন চাকলাদার পদত্যাগ করে কেশবপুর সংসদীয় উপ-নির্বাচনে অংশ নিয়ে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। ফলে চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি যশোর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের পদ শূন্য হয়।

২০ অক্টোবার, ২০২০ at ১৯:০১:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এমএআর/এমএআর