এরশাদ শাসনামলে দেশে কোন ধর্ষণ ছিল না : জিএম কাদের

জাতীয় পার্টির আমলে দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত ছিল। ব্যবসা বাণিজ্যে ব্যপক উন্নতি সাধন হয়েছিল। অর্থনৈতিক ও অবকাঠামো উন্নতির পথে ছিল, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত ছিল। এখন এগুলোর খুবই অভাব। দেশে খুন, ধর্ষণ, রাহাজানির সংখ্যা বেড়ে গেছে।

আমাদের এসব সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসতে হবে। জাতীয় পার্টির উপর মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস রয়েছে। সে আস্থা ও বিশ্বাসের উপর ভর করে জাতীয় পার্টি আবার ক্ষমতায় আসবে। দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হবে। এ দেশে যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক না কেন জাতীয় পার্টির সমর্থন লাগবে। কারন এ সরকার একটি সফল সরকার ছিল।

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে সোনারগাঁয়ের সাংসদ লিয়াকত হোসেন খোকার সহধর্মিনী ডালিয়া লিয়াকতকে জয়যুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের। গতকাল শনিবার বিকেলে সোনারগাঁ উপজেলা ও পৌর জাতীয় পার্টির ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে পৌরসভার আমিনপুর মাঠে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।

তিনি আরো বলেন, দেশে অনেক দল আছে কিন্তু সব দলের নাম মানুষ জানেনা। দল বলতে আওয়ামীলীগ এরপর বিএনপি তারপর জাতীয় পার্টিকেই বুঝেন। এরপর কোন দেশে কোন সংগঠন ও তার নেতাকর্মী খুঁজে পাবেন না। এ তিনটি দলের উপরই নির্ভর করে দেশের আগামী দিনের রাজনীতি। আওয়ামীলীগ দীর্ঘদিন ক্ষমতায় আছে।

দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকলে অনেক ভাল কাজে মনোযোগী হওয়া যায় আর ভাল কাজের সাথে মন্দ কাজগুলোর তালিকা উঠে আসে। মানুষ ভাল কাজের চেয়ে মন্দ কাজগুলো বেশী মনে রাখে। বড় দল হিসেবে আওয়ামীলীগেও সমস্যা আছে। এরপর বিকল্প দল হিসেবে রয়েছে বিএনপি। যারা নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত।

সেখানে নেতা ও নেতৃত্বের ঘাটতি রয়েছে। বিএনপির কে নেতা সেটা এখনও পরিস্কার নয়। সামনে কে নেতৃত্ব দিবেন তারও কোন সুনিদিষ্ঠ দিক নির্দেশনা নাই। তবে তাদের অনেক সমর্থণ রয়েছে। কিন্তু নেতা বিহিত কোন সমর্থণ নিয়েও কোন সংগঠন টিকে না। নেতৃত্বের অভাবে আজ বিএনপির মধ্যে হতাশা নেমে এসেছে। নেতাকর্মী অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে আছে। তাই দলটি ধীরে ধীরে নিচে নেমে যাচ্ছে বলে ধারনা করেন তিনি।

এরপর তিনি জাতীয় পার্টির কথা উল্লেখ করে বলেন, এদেশের মানুষ মনে করেছিল এরশাদ মানে জাতীয় পার্টি আর জাতীয় পার্টি মানে এরশাদ। আজ এরশাদ নেই কিন্তু তার ৯ বছরের শাসন আমলে দেশে যে পরিমান উন্নয়ন হয়েছে সে উন্নয়ন আজও মানুষ মনে রেখেছে। তার আমলে কোন ধর্ষণ ছিল না কোন অনিয়ম ছিলনা খুন খারাবি ছিলনা। তবে সে সময় এসিড মারার সংখ্যা বেড়ে গিয়েছিল। সে জন্য তিনি কঠোর আইন পাশ করে তা নিয়ন্ত্রন করেছেন। সে জন্য দলটি তুলনামুলক ভাবে নিচে নামেনি।

তবে বড় দু’টি দলের চাপে কিছুটা সংকুচিত হলেও সেই দু’টি দল ক্ষমতায় যেতে হলে জাতীয় পার্টিকে বিকল্প শক্তি হিসেবে ব্যবহার করতে হয়। সেজন্য জাতীয় পার্র্টি আছে, ছিল এবং থাকবে। ভবিষ্যতে এ দল আরো শক্তিশালী হয়ে দেশকে পরিচালিত করবে। আপনারা ঐক্যবদ্ধ থাকবেন। আগামী পৌরসভা নির্বাচনে ডালিয়া লিয়াকতকে মেয়র হিসেবে জয়যুক্ত করবেন।

(নারায়ণগঞ্জ-৩) আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকার সভাপতিত্বে সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন, জাতীয় পার্টির মহাসচিব জিয়াউদ্দিন বাবলু। এসময় অন্যান্যের মধ্যে সোনারগাঁ পৌরসভার মেয়র সাদেকুর রহমান, জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আবু নাঈম ইকবাল, সোনারগাঁ থানা জাতীয় পার্টির নেতা এম এ জামান, পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বিডিআর, সংসদ সদস্যের সহধর্মিনী ডালিয়া লিয়াকত প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

এছাড়া সম্মেলনে শম্ভুপুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রউফকে সভাপতি ও বিএনপির উপজেলা কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি জাতীয় পার্টিতে যোগদানকারী পিরোজপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বিডিআরকে সিনিয়র সহ-সভাপতি এবং আবু নাঈম ইকবালকে সাধারণ সম্পাদক করে জাতীয় পার্টির উপজেলা কমিটি ঘোষনা করা হয়। এসময় এম এ জামানকে সভাপতি ও শফিকুল ইসলাম শফিকে সাধারন সম্পাদক করে সোনারগাঁ পৌরসভা জাতীয় পার্টির কমিটি ঘোষনা করা হয়। এমসয় এমপি পত্মী ডালিয়া লিয়াকতকে সোনারগাঁ পৌরসভার আসন্ন নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হিসেবে অনানুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ঘোষনা করা হয়।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক পার্টির যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক জাবেদ রায়হান জয়, সাদিপুর ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সভাপতি আবুল হাসেম, ফজলুল হক মাষ্টার, মাহবুবুর রহমান কামালসহ জাতীয় পার্টির অন্যান্য নেতা-কর্মীরা।

১৭ অক্টোবার, ২০২০ at ২১:৫১:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/টিআর/এমএআর