জয়পুরহাটে চাল বিতরনের নয় দিন পর কার্ড পেলেন সুবিধাভোগীরা

জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার বড়াইল ইউনিয়নে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১০ টাকা মূল্যের ৩০কেজি চাল বিতরনে স্থানীয় ইউপি সদস্য, ডিলার ও খাদ্য বিভাগের অনিয়মের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ উঠেছে। তবে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য, ডিলার এবং খাদ্য বিভাগ সংশ্লিষ্টরা আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে পরস্পরকে দায়ী করেছেন।

ভ’ক্তভোগী ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় ১০ টাকা মূল্যের ৩০ কেজি করে চাল গত ৩০ সেপ্টেম্বর বিতরণ করা হয়েছে। কিন্তু অনেক ভুক্তভোগী তাদের সুবিধাভোগীর কার্ড পেয়েছেন চাল বিতরনেরও অন্তত ৯ দিন পরে। অর্থাৎ অক্টোবর মাসের ৯, ১০ ও ১১ তারিখে। ওই কার্ডে তাদের স্বাক্ষর জাল করে কে বা কারা চাল তুলে নিয়েছেন, তা তাদের অজানা। কিন্তু তারা কোন চাল পায়নি। এমনও দু’একজন লোক আছেন যারা জানেন না যে, তাদের নামে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির কার্ড প্রস্তুত হয়েছে। তারা চাল বা কার্ড কোন কিছুই পাননি। অথচ তাদের নামেও চাল উত্তোলন করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে উপজেলার বড়াইল ইউনিয়নের প্রতাপপাড়া গ্রামের মৃত মঈন উদ্দিনের ছেলে মজিবর রহমান (কার্ড নং-৭৫১), একই গ্রামের রইছ উদ্দিনের ছেলে মুমিন মণ্ডল (কার্ড নং-৭৫২) এবং মোজাফ্ফর হোসেন (কার্ড নং-৭৬৪), বিনাই গ্রামের মৃত আব্দুল মালেকের ছেলে মাছুম প্রামানিক (কার্ড নং-৭৫৪) একই গ্রামের মোস্তফার স্ত্রী রহিমা জানান, তারা সকলেই স্থানীয় ইউপি সদস্যের মাধ্যমে অক্টোবর মাসের ৫ থেকে ৭ তারিখে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির সুবিধাভোগেীর কার্ড পেয়েছেন। কিন্তু চাল পাননি তারা কেউই। তাদের অভিযোগ, প্রত্যেকের স্বাক্ষর জাল করে ৩০ সেপ্টেম্বর তারিখে কে বা কারা চাল উত্তোলন করেছেন। স্থানীয় মেম্বার তাদেরকে কার্ড দিয়েছেন ,তাই তিনিই বলতে পারবেন তাদের চালগুলো কে তুলেছেন। উপজেলার উত্তর বিনাই গ্রামের মৃত তবিজ উদ্দিন ম-লের ছেলে নাজিমদ্দিন মণ্ডল (কার্ড নং-৫৮৭), জানান, তার নামে যে কোন সুবিধাভোগীর কার্ড হয়েছে, তা তিনি জানেননা। আর গত ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত তিনি কার্ড বা চাল কোন কিছুই পাননি।

আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলার বড়াইল ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সারফুল ইসলাম সাবুর জানান, গত সেপ্টেম্বর মাসের ২৯ তারিখের মধ্যেই তিনি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির সংশোধিত তালিকাভুক্ত সুবিধাভোগীদের কার্ড বিতরণ করেছেন। কেউ চাল না পেয়ে থাকলে তার দায় ডিলার এবং খাদ্য বিভাগের।

ডিলার মাসুদ এবং আনারুল তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাদের দাবি, তারা কোন চাল মজুদ না করে সংশ্লিষ্ট কার্ডের বিপরীতে সেগুলো বিতরণ করেছেন।

বড়াইল ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, আওলাদুল ইসলাম জানান, গত ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে তিনি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। প্রতিস্থাপিত খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ভাতা কার্ড বিতরণে তার কোন সংশ্লিষ্টতা ছিলনা। ডিলাররা সুবিধা ভোগীর কার্ড এবং চাল বিতরণ করেছেন। তাই কোন অনিয়ম হয়ে থাকলে তার দায় ডিলারদের।

ক্ষেতলাল উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. নাজমুল হক জানান, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল বিতরণে যে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে, তার জন্য স্থানীয় ওয়ার্ড পর্যায়ের মেম্বার দায়ী। তবে অনিয়মের বিষয়গুলো ক্ষতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

১৬ অক্টোবার, ২০২০ at ২০:২৬:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এমআই/এমএআর