লালপুরে অজ্ঞাত নারী হত্যা রহস্যের উদঘাটন করলো পুলিশ

নাটোরের লালপুর উপজেলার এবি ইউপির একটি লিচু বাগান থেকে অজ্ঞাত পরিচয়ে উদ্ধার হওয়া নরীর নাম পরিচয়সহ হত্যার রহস্যের উদঘাটন করলো পুলিশ।

বোনের সংসারে শান্তি ফিরিয়ে আনতে শ্যালক-দুলাভাই মিলে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে অজ্ঞাত পরিচয়ে দাফন করা সেই নারী লাকী বেগম (৩৫) কে। ঘটনার তিনদিন ঘর প্রযুক্তির সহায়তায় মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে নাটোর জেলা পুলিশ। এই ঘটনায় লালপুর উপজেলার আড়বাব মধ্যপাড়া এলাকার মানিক আলীর ছেলে টুটুল আলী (২৫) কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা এসব তথ্য জানান।

পুলিশ সুপার জানান, গত ৭ অক্টোবর লালপুর উপজেলার অর্জনপুর বরমহাটি ইউনিয়নের ডহরশৈলা এলাকার লিচু বাগানের ভিতর থেকে অজ্ঞাত (৩৫) বছরের একটি নারীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ওই নারীর লাশ সনাক্তের জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়। কিন্তু কেউ লাশ সনাক্ত করতে পারে না। পরে লালপুর থানায় একটি মামলার দায়ের করা পুলিশের পক্ষ থেকে।

এরপর বড়াইগ্রাম সার্কেলের দায়িত্বে থাকা সহকারী পুলিশ সুপার জামিল আক্তারের নেতৃত্বে নারীর পরিচয় সনাক্তে নামে পুলিশ। শনাক্তের জন্য ভিকটিমের ছবি, আঙ্গুলের ছাপ সংরক্ষণ করা হয়। পরে সিআইডি এবং এনআইডি সফটওয়ারের মাধ্যমে ওই নারীর পরিচয় নিশ্চিতের পাশাপাশি হত্যা করার বিষয়টি নিশ্চিত হয় পুলিশ।

এরপর লালপুর থানার ২টি টিম সহ ৪টি টিম অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ডের সাথে টুটুল আলীকে মাগুড়া জেলার সদর থানাধীন শিমুলের ঢাল নামক স্থানে নির্মাণাধীন ভবনের লেবারের শেড হতে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে আসামী টুটুল জানায়, ‘তার দুলাভাই আসাদুল ইসলামের পরামর্শে তারা শ্যালক-দুলাভাই মিলে লাকী বেগমকে হত্যা করে।’

পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেন, ‘ভিকটিম লাকীর সাথে হাবিবপুর গ্রামের ইসমাইলের সাথে প্রথম বিবাহ হয়। পরবর্তীতে আসাদুলের সাথে লাকী বেগমের পরকীয়ায় একাধিকবার বিয়ে এবং বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। এনিয়ে আসামী টুটুলের বোনের সংসারে কলহ লেগেই থাকতো।
পরবর্তীতে গত ৬ অক্টোবর আসাদুল তার শ্যালক টুটুল এবং লাকী বেগমকে ফোন দিয়ে ঈশ্বরদী বাইপাসে আসতে বলে। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী আসাদুল ও টুটুল বাইপাস হতে হাঁটতে হাঁটতে ডহরশৈলার দিকে যেতে থাকে। সে ময় গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছিল। এরপর ঘটনাস্থলে পৌঁছামাত্রই পরিকল্পনা মোতাবেক আসাদুল ভিকটিমকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় এবং গলা চেপে ধরে। আসামী টুটুল ভিকটিমের হাত ধরে রাখে এবং শ্বাসরোধ করে মৃত্যু নিশ্চিত করে মৃতদেহ রাস্তার পাশে লিচু গাছের নিচে রেখে পালিয়ে যায়।

১৫ অক্টোবার, ২০২০ at ২০:৫৫:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এআরটি/এমএআর