ঢাবি ছাত্রীকে ‘দুশ্চরিত্রা’ বলায় নুরের বিরুদ্ধে মামলা

ফেসবুক লাইভে এসে অশালীন মন্তব্য করায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে এবার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে। বুধবার (১৪ অক্টোবর) ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আসসামছ জগলুল হোসেনের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন পূর্বে ধর্ষণ মামলা করা সেই ঢাবি ছাত্রী।

গত ৮ অক্টোবর রাত থেকে নুর-মামুনসহ আরও চারজনকে গ্রেফতারের দাবিতে ধর্ষণের অভিযোগ করা ছাত্রী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অনশনে বসেন। এরপরই গত রোববার ফেসবুক লাইভে এসে বক্তব্য দেন নুর। ভিডিওতে নুর বলেন, ‘আমি তদন্ত করে দেখেছি, ছাত্র অধিকার পরিষদের আব্দুল্লাহ হিল বাকি, নাজমুল হুদা ও সাইফুল ইসলামের এই ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা নেই। নাজমুল কিংবা সোহাগের সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ছাত্রীর ভাই বলেছিল নাজমুল হাসান সোহাগ তাদের বাসায় যাওয়া-আসা করতো। তাদের সঙ্গে বিয়ের কথাবার্তাও হয়েছিল। নাজমুল সোহাগের সঙ্গে ওই ছাত্রীর লঞ্চের কেবিনে হাসি-খুশি যে একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে, যে লঞ্চের কেবিনে ধর্ষণের অভিযোগ করা হয়েছে, একেবারে হাস্যরসাত্মক। ছিঃ! আমরা ধিক্কার জানাই, এত নাটক যে করছে, দুশ্চরিত্রা।’

এদিকে নুরের এসব বক্তব্যের প্রেক্ষিতে ওই ছাত্রী মঙ্গলবার রাতে গণমাধ্যমকে বলেন, তিনি (নুরুল হক নূর) যা বলেছেন সব বানোয়াট, মনগড়া কথা। এরপরেও তার কথার পরিপ্রেক্ষিতে যদি ধরেও নেই আমি দুশ্চরিত্রা, তাহলে তার সহযোগী সোহাগ বা মামুন কী? তারা কি চরিত্রবান? নূর তো শুরুতে বলেছেন, তাদের বিরুদ্ধে আমি ষড়যন্ত্র করেছি। ধর্ষককে রক্ষার জন্য আন্দোলন করেছে তারা। এখন আবার মামুন-সোহাগের দায় নেবে না বলছে।

তিনি বলেন, ডাকসুর ভিপি হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীর চরিত্র নিয়ে তিনি যে মন্তব্য করেছেন, তা ডাকসুর ইতিহাসে কলঙ্ক হয়ে থাকবে। তার এই বক্তব্যই প্রমাণ করে তিনি কতটা জঘন্য চরিত্রের মানুষ। আমি তার এই বক্তব্যের বিচার চাই। আমি আর কত মামলা করব? প্রতিনিয়ত তারা আমার চরিত্র নিয়ে কটূক্তি ও অপপ্রচার করছে। আমি যথাপোযুক্ত বিচার চাই।

ফেসবুক লাইভে নুর আরও বলেছিলেন, ‘ধর্ষণের পর তারা লঞ্চে ছিল, নিচে নামেনি? মানুষের কাছে বলতে পারত না যে, সোহাগ আমাকে ধর্ষণ করেছে? ধর্ষণ হয়েছে জানুয়ারি মাসে, এতদিন মামলা করতে পারেনি? বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন-প্রক্টরের কাছে একটা লিখিত অভিযোগ দিতে পারেনি। থানায় একটা মামলা করতে পারেনি? এমন অনেক বিষয় আছে।’

উল্লেখ্য, গত ২০ সেপ্টেম্বর রাতে ধর্ষণ ও ধর্ষণে সহযোগিতার অভিযোগে রাজধানীর লালবাগ থানায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্রী মামলা করে। এতে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর এবং ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুনসহ ছয় জনকে আসামি করা হয়। পরে ওই ঘটনায় কোতায়ালি থানায় আরও একটি মামলা করে ওই ছাত্রী।

এই মামলায় গত রোববার দুই জনকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। তারা হলেন, ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সাইফুল ইসলাম এবং ঢাবি শাখার সহ-সভাপতি নাজমুল হুদা।

১৪ অক্টোবার, ২০২০ at ১৪:২০:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/মাক/এমএআর