গান শুনে ফেরার পথে ধর্ষণের অভিযোগে এক ব্যক্তি গ্রেপ্তার

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় গান শুনে বাড়ি ফেরার পথে স্বামী পরিত্যক্তা এক নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় পুলিশ অভিযুক্ত ধর্ষককে গ্রেপ্তার করেছে। সোমবার (১২ অক্টোবর) রাতে উপজেলার আদাবাড়িয়া ইউনিয়নের ধর্মদহ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে বলে থানায় দায়ের করা অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ধর্মদহ গ্রামের একটি বাড়ির অাঙিনায় সোমবার রাতে পালা গান অনুষ্ঠিত হয়। সেই গান শুনে সেখান থেকে কয়েক বাড়ি দূরে নিজের বাড়ি ফিরছিলেন স্বামী পরিত্যক্তা এক নারী (২৭)। তিনি ধর্মদহ মাধ‌্যমিক বিদ‌্যালয়ের পাশে অানেছা খাতুন নামে এক মহিলার বাড়ির কাছে পৌঁছলে স্থানীয় লোকজন ওই বাড়ির ভেতর থেকে নারী কণ্ঠের চিৎকার শুনতে পান। এ সময় স্থানীয়রা এগিয়ে গেলে অভিযুক্ত ধর্ষক ওই বাড়ি থেকে দৌড়ে পালিয়ে যায়। টর্সলাইটের আলো জ্বালালে পালানো ব্যক্তিকে চিনে ফেলেন তারা। তার নাম রুস্তম আলী (৪৫)। তিনি একই গ্রামের চমৎকার মণ্ডলের ছেলে। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় বাড়ি ফিরে ‘ধর্ষিত’ নারী তার পিতার কাছে ঘটনাটি খুলে বলেন।

স্বামী পরিত্যক্তা দুই সন্তানের জননী ‘ধর্ষণের শিকার’ ওই নারীর পিতা জানান, রাতে তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় তেকালা পুলিশ ক্যাম্পের আইসিকে মোবাইল ফোনে ঘটনাটি অবগত করা হয়। স্থানীয় মহিলা মেম্বার আম্বিয়া খাতুনকে জানানো হয়। পরে রাতেই পুলিশ ও জনপ্রতিনিধির উপস্থিতে তার মেয়ে (‘ধর্ষিতা’) নিজেই ধর্ষণের ঘটনা খুলে বলেন। তবে পুলিশ ঘটনা জানার পরেও সেই সময় অভিযুক্ত ধর্ষককে আটক করেনি বলে তিনি জানান।

মহিলা মেম্বার আম্বিয়া খাতুন বলেন, ঘটনাটি ঘটার পর রাত ১২টার পরে আমি সেখানে পৌঁছে দেখি তেকালা পুলিশ ক্যাম্পের আইসিসহ স্থানীয় অনেক মানুষ উপস্থিত রয়েছেন। অভিযু্ক্ত রুস্তমও ছিলেন। সবার সামনে মেয়েটি ধর্ষণের বর্ণনা দেন। কিন্তু অভিযুক্ত রুস্তম আলী তার বিরুদ্ধের এই অভিযোগ অস্বীকার করেন। আম্বিয়া খাতুন আরো বলেন, অসহায় মেয়েটি পিতার সঙ্গে মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) সকালে আমার কাছে আসেন, আইনি সেবার জন্য তাদেরকে চেয়ারম্যানের কাছে যেতে বলি।

এদিকে ঘটনার রাতে সববিছু শোনার পরেও ক্যাম্প আইসি তাৎক্ষণিক কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। তেকালা পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (আইসি) এসআই ফসিউর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার ওপর থানা থেকে যে নির্দেশ এসেছে সেটাই পালন করেছি। এর বাইরে কিছু করার সুযোগ নেই।

দৌলতপুর থানার ওসি (তদন্ত) নিশিকান্ত সরকার জানান, মঙ্গলবার থানায় ধর্ষণের বিষয়ে অভিযোগ করা হলে তাৎক্ষণিক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। অভিযুক্ত রুস্তম আলীকে গ্রেপ্তার করা করেছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এখনো অভিযোগ স্বীকার করেননি। অভিযোগকারীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

ওসি নিশিকান্ত সরকার বলেন, গতরাত ২টা পর্যন্ত অফিসে ছিলাম। পুলিশ ক্যাম্প থেকে এ বিষয়ে আমাকে কোনো তথ্য দেয়া হয়নি। রাতে জানলে তখনই ব্যবস্থা গ্রহণ করতাম। এটি অাসলেই ধর্ষণ নাকি ধর্ষণের নামে সাজানো ঘটনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তদন্ত চলছে। এই মুহূর্তে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।