বগুড়ায় যৌন হয়রানি নির্মূলকরণ নেটওয়ার্কের স্মারকলিপি প্রদান

বগুড়া জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছেন জেলা যৌন হয়রানি নির্মূলকরণ নেটওয়ার্ক বগুড়া। ১৩ অক্টোবর মঙ্গলবার প্রদানকৃত স্মারকলিপিতে বলা হয়, আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, দেশব্যাপী নারী-শিশু ধর্ষণ ও নির্যাতন দিনদিন বেড়েই চলছে। সাম্প্রতিক সময়ে নোয়াখালীতে ঘটে যাওয়া নারী নির্যাতনের নৃশংসতম ঘটনা বরাবরের মতই আমাদেরকে স্তম্ভিত করেছে। সরকারের নানামুখী উন্নয়ন কর্মকান্ডের কারণে দেশ যখন এগিয়ে চলছে তখন এই ধরনের ঘটনা আমাদের জন্য উদ্বেগ ও দুশ্চিন্তা তৈরি করে।

আমরা আরও উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, তথ্য-প্রযুক্তির আধুনিক সব বাহনকে ব্যবহার করে নারীর প্রতি যৌন হয়রানি ও সহিংসতার ঘটনা বেড়ে যাচ্ছে। মোবাইল ফোনে ফোন করে ভয়-ভীতি দেখানো, উত্ত্যক্ত করা, অশ্লীল এসএমএস পাঠানো, গোপনে মোবাইল ফোনে চিত্র ধারণ করে সেই চিত্র ছড়িয়ে দেওয়া বা ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি প্রদান, ইন্টারনেট, ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তা ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা বর্তমানে আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে।

এছাড়া আমরা অত্যন্ত ক্ষোভের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, আমাদের দেশের গণমাধ্যম (ইলেকট্রনিক ও পিন্ট মিডিয়া উভয়ই) নির্যাতনের শিকার বিশেষ করে ধর্ষণের শিকার নারীর নাম প্রকাশসহ নির্যাতনের বর্ণনা এমনভাবে উপস্থাপন করছে, ফলে ঐ নারীরা আরও বেশি অপমানের শিকার হচ্ছেন।

এছাড়া আমাদের দেশে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রচার মাধ্যমগুলো বিনোদন এবং বিজ্ঞাপনের নামে নারীর প্রতি অসংবেদনশীল ও নেতিবাচক নাটক, গান, বিজ্ঞাপন ও বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান প্রচার করে। নারীকে স্রেফ যৌনবস্তু বা ভোগের সামগ্রি হিসেবে উপস্থাপন করার এই প্রবণতা নারীর নির্যাতিত হওয়াকে ত্বরান্বিত করে এবং নারীর প্রতি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির প্রসার ঘটায়।

নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সমাজের সকল মানুষই বর্তমানে এই ভয়ংকর অমানবিক পরিস্থিতি থেকে মুক্তি চায়। কেননা নারীর প্রতি সহিংসতা, নির্যাতন, নিপীড়ন, যৌন হয়রানি, ধর্ষণ, এসিড নিক্ষেপ, মৌখিক হয়রানি, মানসিক নির্যাতন চূড়ান্ত বিচারে সমাজের সকল নারী-পুরুষ-শিশুকে সমানভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এ অবস্থা কোনো সুস্থ সমাজের জন্য কাম্য নয়। আমরা দৃঢ়ভাবে এমন অবস্থার অবসান চাই। ৮টি শুপারিশ সংযোজিত করে স্বারক লিপি প্রদান করেন। স্বারকলিপি প্রদানের সময় উপস্থিত ছিলেন যুগ্মআহবায়ক আশরাফুন নাহার স্বপ্না কার্যনিবাহী কমিটির সদস্য প্রদীপ শংকর ভট্টাচার্য, জিয়াউর রহমান, রাকিবুল হক খান কানিজ রেজা, ও বাবলী সুরাইয়া প্রমূখ।

১৩ অক্টোবার, ২০২০ at ২০:৪৬:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/আরআই/এমএএস