অ্যান্টিবডি তৈরিতে সক্ষম বাংলাদেশি ভ্যাকসিন: বায়ো আর্কাইভ

বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান গ্লোব বায়োটেক ব্যানকভিড নামের যে ভ্যাকসিন তৈরি করছে সেটি নভেল করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি তৈরিতে সক্ষম বলে জানিয়েছে কোল্ড স্প্রিং হারবার ল্যাবরেটরি পরিচালিত বায়ো আর্কাইভ জার্নাল। প্রিলিমিনারি অ্যানিমেল ট্রায়াল এবং ‘রেগুলেটেড অ্যানিমেল ট্রায়ালের’ ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে নিবন্ধটি বৃহস্পতিবার প্রকাশ করেছেন গ্লোব বায়োটেকের বিজ্ঞানীরা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গ্লোব বায়োটেকের শীর্ষস্থানীয় একজন বিজ্ঞানী বৃহস্পতিবার রাতে নাম প্রকাশ না করার শর্তে দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমি এই মুহূর্তে বিস্তারিত কিছু বলতে চাচ্ছি না। রবি-সোমবার আমাদের একটা সংবাদ সম্মেলন হওয়ার কথা। তার আগে বললে সংবাদ সম্মেলনের আকর্ষণটা নষ্ট হয়ে যাবে।’

বায়ো আর্কাইভের তথ্য অনুযায়ী, পৃথিবীতে এই মুহূর্তে বেশ কয়েকটি ভ্যাকসিন তৈরির উদ্যোগ নেয়া হলেও করোনার জটিল ভ্যারিয়েন্ট বলে পরিচিত ডি৬১৪জি ভিত্তিক কোনো ভ্যাকসিন তৈরির কথা শোনা যায়নি। ভাইরাসটির এই জিনোটাইপ সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের জন্য দায়ী।

কোনো গবেষণার ফলাফল প্রকাশের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের বিজ্ঞানীদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে থাকে এই বায়ো আর্কাইভ প্রিপ্রিন্ট সার্ভার। অন্য সব জার্নালে প্রকাশ করতে গেলে বেশি সময় লেগে যায়। কিন্তু এখানে বেশ দ্রুত প্রকাশ করা যায়। মডার্না থেকে শুরু করে অ্যাস্ট্রাজেনেকা পর্যন্ত তাদের প্রথম ফলাফল এখানে প্রকাশ করে।

কনটেন্ট প্রকাশের আগে এখানে লেখা জমা দিতে হলেও শতভাগ পিয়ার রিভিউড (স্কলারলি বা রেফারিড) জার্নাল বলতে যা বোঝায় বায়ো আর্কাইভ তা নয় বলে ফলাফল নিয়ে কিছুটা প্রশ্ন থেকেই যায়।

যেকোনো গবেষণার জন্য পিয়ার রিভিউড (স্কলারলি বা রেফারিড) জার্নাল খুব গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এখানে বিশেষজ্ঞদের যেসব আর্টিকেল প্রকাশ করা হয়, তা প্রকাশিত হওয়ার আগে এই বিষয়ের একাধিক বিশেষজ্ঞ (রেফারি হিসেবে যারা কাজ করেন) বার বার পরীক্ষা নিরীক্ষা করেন। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে এই ধরনের জার্নালে প্রকাশিত আর্টিকেলকে ‘সর্বোচ্চ’ মানের ধরা হয়।

গ্লোব বায়োটেক জুনের ১০ তারিখ থেকে ২৮ তারিখ পর্যন্ত পাঁচটি খরগোশের ওপর প্রিলিমিনারি ট্রায়াল চালায়। অ্যানিমেল মডেলের এই ট্রায়ালে কভিড-১৯ প্রতিরোধী অ্যান্টিবডি পাওয়ার দাবি করেন তারা। কয়েক সপ্তাহ পর রেগুলেটেড অ্যানিমেল ট্রায়ালে যায় প্রতিষ্ঠানটি।

ওই সময় গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের রিসার্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ডিপার্টমেন্টের প্রধান ডা. আসিফ মাহমুদ এই প্রতিবেদককে বলেছিলেন, ‘আমরা প্রিলিমিনারি অ্যানিমেল ট্রায়ালে অ্যান্টিবডির প্রমাণ পেয়েছি। এখন এটাকে রেগুলেটেড ট্রায়ালে কনভার্ট করা দরকার। কারণ হিউম্যান ট্রায়ালের অনুমোদন পাওয়ার জন্য আমাদের এটা নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানের কাছে জমা দিতে হবে।’

ডিসেম্বর নাগাদ হিউম্যান ট্রায়ালের তিনটি ধাপ শেষ করার আশা করেছিলেন তিনি।

গ্লোব বায়োটেকের গবেষকেরা পরীক্ষার জন্য সারফেইস প্লাজমন রিসোনেন্স (এসপিআর) মেথড অনুসরণ করেছে। বাংলাদেশসহ গোটা পৃথিবীর সিকোয়েন্স বিশ্লেষণের পর তারা ‘ভালো অ্যান্টিবডি’ পাওয়ার দাবি করছেন।

০১ অক্টোবার, ২০২০ at ২৩:১৩:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/দেরু/এমএআর