এখনো সবুজ সংকেত পায়নি বিসিবি

যতই দিন যাচ্ছে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার সিরিজের অনিশ্চয়তা যেন ততই বাড়ছে। মূলত এখন বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার টেস্ট সিরিজটি ঝুলে আছে শ্রীলঙ্কার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কড়াকড়ির কারণে। দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে শ্রীলঙ্কায় মাঠে নামার আগে বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের বাধ্যতামূলকভাবে ১৪ দিনের জন্য কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। আর এই ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনের সময় টাইগাররা কোনো প্রকার অনুশীলনতো করতে পারবেই না। এমনকি বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা হোটেল রুম থেকেও বের হতে পারবে না।

তবে শ্রীলঙ্কার স্বাস্থ্য বিভাগ ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন নিয়ে গো ধরে বসে থাকলেও লঙ্কান ক্রিকেট বোর্ড চাইছে বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজটি হোক। কিন্তু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আদেশকেও আবার উপেক্ষা করতে পারছেন না তারা। কারণ তারাও চান না দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে হুমকির মুখে ফেলে দিতে। দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলো যখন করোনার থাবায় নাকাল তখন শ্রীলঙ্কাতে করোনার পরিস্থিতি বেশ ভালোই। আর বাংলাদেশে যেহেতু করোনার প্রভাবটা একটু বেশি তাই বাংলাদেশের ক্ষেত্রে একটু বেশিই কড়াকড়ি দেখাচ্ছে শ্রীলঙ্কার স্বাস্থ্য বিভাগ।

ক্রিকেটবিষয়ক সংবাদমাধ্যম ক্রিকইনফোর সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের ভাইস প্রেসিডেন্ট রাভিন বিক্রমারত্নে বলেন, ‘কোভিড-১৯ টাস্কফোর্সের সঙ্গে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের ইতিবাচক বৈঠক হয়েছে। সবাই একমত যে এই সফরটা হওয়া উচিত। তবে চিকিৎসকদের পরামর্শও বিবেচনায় আনতে হবে আমাদের।

আর তাই তো গত পরশু দিন বাংলাদেশের কাছে আরেকটি প্রস্তাব পাঠায় শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট বোর্ড। আর সেটি হলো ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনের ৭ দিন বাংলাদেশে আর ৭ দিন শ্রীলঙ্কায় করার জন্য। তবে এই প্রস্তাবে বিসিবি গতকাল পর্যন্ত কোনো হ্যাঁ বা না উত্তর জানায়নি। বিসিবির এই প্রস্তাবে রাজি না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। কারণ ঘুরিয়ে ফিরিয়ে শ্রীলঙ্কা তাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের শর্তই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে মানতে বলছে। কিন্তু বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন আগেই জানিয়ে দিয়েছেন শ্রীলঙ্কার শর্ত অনুযায়ী দ্বীপ রাষ্ট্রটিতে সফর করবে না টাইগার ক্রিকেটাররা।

শ্রীলঙ্কার ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনের প্রস্তাবে এখন পর্যন্ত বিসিবির রাজি না হওয়ার পেছনে কারণ আছে যথেষ্ট। এই সময়টায় খেলোয়াড়রা হোটেলের বাইরে যেতে পারবেন না। বিসিবি মনে করছে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের মতো এত গুরুত্বপূর্ণ একটা সিরিজের আগে দীর্ঘ সময় খেলোয়াড়রা অনুশীলনের বাইরে থাকলে দলের পারফরমেন্সে তার প্রভাব পড়বে।

শ্রীলঙ্কায় বড় স্টেডিয়ামগুলোর সঙ্গে লাগোয়া হোটেলও নেই, যেমনটা সাউদাম্পটন এবং ম্যানচেস্টারে ইংল্যান্ডের আছে। ফলে কোয়ারেন্টাইন মানেই হোটেলে ক্রিকেটারদের বন্দি থাকা। আর বন্দিদশা মুক্ত হওয়ার পরই যদি সিরিজের প্রস্তুতি নিতে হয়, তবে অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ের আগে মাঠে নামার উপায় থাকবে না টাইগারদের।

আর খেলা যেহেতু শুরু হবে ২৪ অক্টোবর থেকে। ফলে টাইগাররা সব মিলিয়ে শ্রীলঙ্কায় গিয়ে মাত্র ১০ দিনের মতো অনুশীলন করতে পারবে। আর ৩টি টেস্ট ম্যাচ খেলার আগে মাত্র ১০ দিনের অনুশীলন অপর্যাপ্তই বটে।

১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০ at ২২:৫৪:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/ভক/এমএআর