বেনাপোল বন্দরের দুইদিন বন্ধ, বিপাকে পেয়াজ ব্যবসায়ীরা

ফাইল ছবি।

নিষেধাজ্ঞায় আটকে পড়া পেঁয়াজের একটি অংশ ভারত সরকার ছেড়ে দেওয়ার সম্মতি জানালেও বিশ্বকর্মা পুজা ও সাপ্তাহিক ছুটির কারণে টানা দুইদিন বন্দরের কার্যক্রম বন্ধের কবলে পড়ায় ওপারের রাস্তায় দাড়িয়ে আছে ৭০ ট্রাক আমদানিকৃত পেয়াজ। এছাড়া দুই পারে প্রবেশের অপেক্ষায় শত শত ট্রাক আমদানি ও রফতানি পণ্য নিয়ে আটকা পড়েছে পচনশীল বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্যসহ শিল্পকারখানার জরুরী কাজে ব্যবহৃত কাঁচামাল।

ভারতের পেট্রাপোল কাস্টমস ক্লিয়ারিং এন্ড ফরওয়ার্ডিং স্ট্যাফ এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, বৃহস্পতিবার বিশ্বকর্মা পুজা ও শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির কারণে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরের পার্কিং ও রাস্তার উপরে দাড়িয়ে আছে ৩৫ ট্রাক পেয়াজ। এছাড়া ঘোজাডাঙ্গা এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে আছে আরো প্রায় ৩৫ ট্রাক আমদানীকৃত পেয়াজের চালান।

এছাড়াও দুই পারে প্রবেশের অপেক্ষায় শত শত ট্রাক আমদানি ও রফতানি পণ্য নিয়ে আটকা পড়েছে পচনশীল বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্যসহ শিল্পকারখানার জরুরী কাজে ব্যবহৃত কাঁচামাল। শনিবার সকাল থেকে প্রবেশ করবে বলে তিনি জানান।

এদিকে টানা দুইদিন দেশের সবচেয়ে বড় রাজস্বদাতা বেনাপোল স্থলবন্দরের সাথে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরের আমদানি-রফতানি ও পণ্য খালাস কার্যক্রম বন্ধ হয়ে পড়ায় চরমভাবে বিপাকে পড়েছে ভারতের পেট্রাপোল বন্দর ও ঘোজাডাঙ্গা এলাকায় আটকে থাকা পেয়াজ ব্যবসায়ীরা। তারা চরমভাবে ক্ষতির আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় পেঁয়াজ আমদানি কারক খুলনার হামিদ এন্টার প্রাইজের প্রতিনিধি সরোয়ার জনি জানান, টানা দুই দিন বন্ধের কবলে ওপারের রাস্তায় আটকে থাকা ট্রাকভর্তি পেয়াজের চালান গরমের ভিতর পঁচে-গলে সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যাবে। বেনাপোল বন্দরের সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ এ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারী সাজেদুর রহমান ভারতীয় ব্যবসায়ীদের উদ্ধৃতি দিয়ে বাণিজ্য বন্ধের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বেনাপোল কাস্টমস কার্গো শাখার রাজস্ব কর্মকর্তা আকসার উদ্দীন মোল্লা জানান, বুধবার সকাল থেকে ভারত থেকে পেঁয়াজ ঢোকার কথা ছিল। আমরা দিনভর অপেক্ষায় ছিলাম। কিন্তু বাংলাদেশ অংশে কোন গেটপাশ না আসায় গত দুই দিনে কোন পেঁয়াজ আমদানি হয়নি। এছাড়া বৃহস্পতিবার বিশ্বকর্মা পূজা ও শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির কারণে ওপারে সব ট্রাক আটকে আছে।

এদিকে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য বন্ধ হয়ে পড়ায় বন্দরের দুই পারে প্রবেশের অপেক্ষায় শত শত ট্রাক পণ্য নিয়ে আটকা পড়েছে। এসব পণ্যের মধ্যে পচনশীল বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্যসহ শিল্পকারখানার জরুরী কাজে ব্যবহৃত কাঁচামাল রয়েছে। তবে, এপথে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে নানা নিয়মের মধ্যদিয়ে পাসপোর্ট যাত্রী চলাচল সচল রয়েছে। শনিবার ১৯ সেপ্টেবর সকাল থেকে পূনরায় আমদানি-রফতানি কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানা গেছে।

এদিকে, পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ থাকায় খোলা বাজারে হু হু করে বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। দুই দিন আগে যে পেঁয়াজের দাম ছিলো কেজি প্রতি ৪০ টাকা, তা বেড়ে দাড়িয়েছে ৮০ টাকায়। বাজার নিয়ন্ত্রণ না থাকায় আরো বেড়ে চলেছে বাজার দর।

জানা যায়, গত ১৪ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ সরকার পূজা উপলক্ষে ভারতকে ইলিশ দেওয়ার পরপরই এদিন সংকট দেখিয়ে বাংলাদেশে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেয় ভারত। গত বছরেও ২৯ সেপ্টেম্বর একই অযুহাত দেখিয়ে ইলিশ নিয়ে বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশিদের অতি প্রয়োজনীয় খাদ্য দ্রবের অংশ পেঁয়াজ।

১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০ at ২১:২৯:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এসকেইউ/এমএএস