ম্যাক্সওয়েল-ক্যারির সেঞ্চুরিতে রোমাঞ্চকর সিরিজ অস্ট্রেলিয়ার

বিপর্যয়ের মুখে অসাধারণ এক সেঞ্চুরিতে ইংল্যান্ডকে বড় পুঁজি এনে দিয়েছিলেন জনি বেয়ারস্টোর। তবে তার ব্যাটিংকেও ছাপিয়ে গেলেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ও অ্যালেক্স ক্যারি। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে অস্ট্রেলিয়া যখন খাদের কিনারে, তখন এই দুজন ষষ্ঠ উইকেটে গড়লেন রেকর্ড জুটি। সেঞ্চুরি এলো দুজনের ব্যাটেই। তাতে রোমাঞ্চকর ম্যাচটিতে শেষ পর্যন্ত বিজয়ীর হাসি অস্ট্রেলিয়ার।

বুধবার সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে ৩ উইকেটে জয় পেয়েছে অজিরা। সুবাদে ২-১ এ সিরিজ নিজেদের করল সফরকারী দলটি।

তিন ম্যাচের এই ওয়ানডে সিরিজটা নিশ্চিতভাবেই দর্শকদের মনে থাকবে অনেকদিন। প্রথম ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়ার ১৯ রানে জয়ের পর দ্বিতীয় ওয়ানডে স্বাগতিক ইংল্যান্ড জিতে নেয় ২৪ রানে। যেভাবে তারা দ্বিতীয় ওয়ানডে জিতেছিল সেটিও ছিল দারুণ রোমাঞ্চের। সব মিলে সিরিজটাই হয়ে থাকল স্মরণীয়। ২০১৫ সালের পর এই প্রথম ইংল্যান্ডের মাটিতে ওয়ানডে সিরিজ জিতল অস্ট্রেলিয়া।

ম্যানচেস্টারে টস জিতে আগে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ৩০২ রান করে ইংল্যান্ড। জবাবে ৭৩ রানে ৫ উইকেট হারানো অস্ট্রেলিয়া ম্যাক্সওয়েল-ক্যারি দৃঢ়তায় ২ বল হাতে থাকতেই জয় পায়। শেষ দিকে যদিও দুজনকেই ফিরিয়ে ইংলিশ বোলাররা নাটকের রসদ জুগিয়েছিল। তবে প্যাট কামিন্সকে নিয়ে মিচেল স্টার্ক সেই চাপ সামাল দিয়ে বিজয়ীর হাসি নিয়ে মাঠ ছাড়েন।

এদিন ষষ্ঠ উইকেটে ২১২ রানের জুটি উপহার দেন ম্যাক্সওয়েল ও ক্যারি। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে যা সর্বোচ্চ। ওয়ানডেতেই সব মিলে ষষ্ঠ উইকেটে এটি তৃতীয় সর্বোচ্চ জুটি। ৯০ বলে ৪ চার ও ৭ ছক্কায় ১০৮ রান করেন ম্যাক্সওয়েল। ক্যারি ১১৪ বলে ৭ চার ও ২ ছক্কায় করেন ১০৬ রান।

৮৪ বলে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি পূরণ করেন ম্যাক্সওয়েল। অন্যদিকে ক্যারি তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি পূরণ করেন ১০৬ বলে। অথচ মাত্র ৯ রানেই ফিরতে পারতেন তিনি। জোফরা আর্চারের বলে ক্যাচ হয়েছিলেন। কিন্তু ওভারস্টেপিংয়ের কারণে সেই আউট বাতিল হয়।

ম্যাচের ১৫ বল হাতে থাকতে ম্যাক্সওয়েল ফিরে যান আদিল রশিদের শিকার হয়ে। ক্যারি ফেরেন ৪৯তম ওভারের শেষ বলে। তাতে শেষ ৬ বলে ৩ উইকেট হাতে নিয়ে ১০ রান প্রয়োজন পড়ে অস্ট্রেলিয়ার।

এ অবস্থায় রশিদকে ছক্কা হাঁকিয়ে চাপ অনেকটাই দূর করেন স্টার্ক। চতুর্থ বলে দারুণ এক সুইপ শটে চার হাঁকিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেন তিনিই। ৩ বলে একটি করে চার ও ছক্কায় অপরাজিত ১১ রান করেন স্টার্ক। কামিন্স ৫ বলে অপরাজিত ৩ রান করেন। ইংল্যান্ডের পক্ষে ক্রিস ওকস ও জো রুট ২টি করে উইকেট নিয়েছেন।

এর আগে ইংল্যান্ড ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের প্রথম দুই বলে জ্যাসন রয় ও জো রুটকে হারিয়ে বসে। দুজনকেই ফেরান স্টার্ক। পরে জাম্পার আঘাতে ৯৬ রানে ৪ উইকেটে পরিণত হয় ইংল্যান্ড। সেখান থেকে দলটিকে লড়াইয়ে ফেরান বেয়ারস্টো। তুলে নেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারে নবম সেঞ্চুরি। ১২৬ বলে ১২ চার ও ২ ছক্কায় ১১২ রান করেন তিনি।

এ ছাড়া স্যাম বিলিংস ৫৭ ও ক্রিস ওকস অপরাজিত ৫৩ রান করেন। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে স্টার্ক ও জাম্পা সর্বাধিক ৩টি করে উইকেট নেন। ম্যাচসেরা হয়েছেন ম্যাক্সওয়েল। সিরিজ সেরাও তিনি।

১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০ at ১১:০০:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/দেরু/এমএআর