পাইকগাছার গদাইপুর বাজারে ভোরবেলার চারার হাট জমতে শুরু করেছে

পাইকগাছার গদাইপুর বাজারে ভোরবেলার চারার হাট জমে উঠতে শুরু করেছে। পরিবেশ সুরক্ষায় বৃক্ষের অবদান অপরিসীম।বৃক্ষ ছাড়া পরিবেশ সুরক্ষা অসম্ভব। বর্ষাকাল বৃক্ষরোপনের উপযুক্ত সময়। ভোরের হাট সকাল ১০টার মধ্যেই শেষ হয়ে যায়। তবে স্থানীয় ক্রেতাদের জন্য বিকাল বেলাও আংশিক এলাকায় চারার হাট বসে। তবে বাধ ভেঙ্গে উপক’ল এলাকা লবন পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় চারার চাহিদা কিছুটা কম। এ কারনে চারা রোপন করার সময়ও পিছিয়ে যাচ্ছে।

এ হাটে ফলদ, বনজ, ঔষধী, ফুল সহ নানা প্রজাতির বৃক্ষের চারা পাইকারী ও খুচরা বিক্রি হচ্ছে। পাইকগাছা, কয়রা, আশাশুনি, দাকোপ সহ দক্ষিণ অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ী ও খুচরা ক্রেতারা ভোরবেলার হাট থেকে পছন্দমত বিভিন্ন প্রজাতির চারা ক্রয় করছে। ভোরবেলার গদাইপুরে চারার হাটে দক্ষিণ অঞ্চলের মানুষের মধ্যে সাড়া ফেলেছে।

পাইকগাছার গদাইপুর দক্ষিণ অঞ্চলের একটি ঐতিহ্যবাহী বাজার। এ বাজারে সপ্তাহে শুক্রবার, সোমবার ও বুধবার হাট বসে। হাটে পাইকারী ও খুচরা বিভিন্ন মালামাল বিক্রয় হয়। বিগত বছর থেকে গদাইপুর বাজারে ভোরবেলা চারার হাট দক্ষিণ অঞ্চলে ব্যবসায়ী ক্রেতাদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। গদাইপুর নার্সারীর জন্য বিখ্যাত। গদাইপুরের নার্সারীর চারা দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হচ্ছে। দেশ ব্যাপি গদাইপুর নার্সারীর নাম ছড়িয়ে পড়েছে। গদাইপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে ৪শ থেকে ৫শ নার্সারী প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। এ সকল নার্সারীতে উৎপাদিত বিভিন্ন চারা ও কলম নার্সারী মালিকরা ভোরবেলা গদাইপুর হাটে তুলছে। ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা খুব ভোরে এসে পছন্দমত চারা ক্রয় করে দক্ষিণ অঞ্চলের বিভিন্ন হাটে বিক্রয় করছে। হাটে আম, কাঁঠাল, জাম, জামরুল, লিচু, কদবেল, বিভিন্ন জাতের কুল, পেয়ারা, বাতাবি লেবু, মাল্টা, কমলা লেবু, দেশী বিদেশী নারিকেল চারা, সুপারী, মেহগনি, সিরিশ, লম্বু, আকাশমনি, বিভিন্ন প্রজাতির দেশী বিদেশী ফুলের চারা হাটে ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে। ক্রেতারা বাজার ঘুরে পছন্দমত গাছ কিনছে। সর্বনিম্ন ২০ টাকা থেকে ৬শ টাকা দরে কলম বিক্রি হচ্ছে। মাল্টা ও কমলা লেবুর চারা ও বিদেশী নারিকেলের চারা দম সব থেকে বেশী। বিদেশী নারিকেলের চারা ৫শ টাকা, বড় মাল্টা ও কমলা লেবুর চারা প্রায় ৬শ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তাছাড়া চারা বড় ও মানের উপরে বিভিন্ন দামে চারা বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতা কয়রা উপজেলার বড়দল গ্রামের রঞ্জন সানা ও মোস্তফা গাজী জানান, বেড়ি বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় লবন পানিতে এলাকা তলিয়ে গেছে । চারারোপন করার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি হয়নি। এ জন্য চারার চাহিদা কম। গদাইপুর গ্রামের চারা বিক্রেতা রবিউল ইসলাম জানান,বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় ফলে এলাকা লবন পানিতে তলিয়ে গেছে। এ কারনে চারার চাহিদা ও দাম অনেক কম। গত বছর সকাল ৮ টার মধ্যে সব চারা বিক্রি হয়ে যেত। এ বছর চারা অবিক্রিত থেকে যাচ্ছে। বিক্রি না হওয়ায় ক্ষেত ভরা চারা রয়েছে। এর ফলে নার্সারী মালিকরা আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেঁ।

বাজারে প্রচুর পরিমানে গাছের চারা উঠেছে। বাজার ঘুরে পছন্দমত চারা ক্রয় করা যাচ্ছে এবং বাজারের চারা দামও কম। পাইকগাছা উপজেলা নার্সারী মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অশোক কুমার পাল জানান, গদাইপুর এলাকায় প্রায় সাড়ে ৪শ নার্সারী রয়েছে। এ সকল নার্সারী থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় চারা সরবরাহ করা হয়। তবে গদাইপুর বাজারে ভোরবেলার হাটে প্রচুর পরিমাণ চারা উঠছে। ক্রেতারা তাদের পছন্দমত চারা ক্রয় করতে পারছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম জানান, পরিবেশ সু-রক্ষায় বৃক্ষের অবদান অপরিসীম। সরকারিভাবে প্রচুর পরিমাণে বৃক্ষরোপন করা হচ্ছে। তাই সবাইকে বৃক্ষরোপন করতে হবে। গদাইপুরে ভোরবেলা হাট থেকে ক্রেতারা চারা ক্রয় করে সূর্যের তাপ ছাড়াই চারা গন্তব্যস্থানে নিয়ে যেতে পারে।এতে চারার মান ভাল থাকে। ভোরবেলা ক্রেতারা চারা ক্রয় করে সূর্যের তাপ ছাড়াই সুস্থ্য ও সবল চারা বাড়ি নিতে পারছে। এ কারণে ক্রেতাদের ভোরবেলার হাটে চারা ক্রয়ে আগ্রহ বাড়ছে।

১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০ at ১২:০৪:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/ইএইচ/এমএআর