যৌতুকের জন্য পুত্রবধুর মাথার চুল কেটে দিয়েছে স্বজনেরা

সিরাজগঞ্জে যৌতুকের দাবিতে নার্গিস খাতুন (৩২) নামে এক গৃহবধুকে শারীরিক নির্যাতনের পর বটি দা দিয়ে মাথার চুল কেটে দিয়েছেন শ্বশুর বাড়ীর স্বজনেরা। আহত অবস্থায় ওই গৃহবধূকে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

নার্গিস খাতুন উল্লাপাড়া উপজেলার উধুনিয়া ইউনিয়নের মহেশপুর গ্রামের ইব্রাহিমের মেয়ে ও একই গ্রামের শফিকুল ইসলামের স্ত্রী। সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নার্গিস খাতুন শ্বশুড় ও তার স্বজনদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেন। এ সময় তার পাশে স্বামী শফিকুল ইসলামও উপস্থিত ছিলেন।

নার্গিস খাতুন অভিযোগ করে বলেন, ১ যুগ আগে ভালবেসে বিয়ে করেছিলেন তারা। স্বামী শফিকুলের ইচ্ছা না থাকলেও শ্বশুড় হাবিবর রহমান, ভাসুর জামাল ও শাহাদত যৌতুকের জন্য গৃহবধু ও তার পরিবারকে চাপ প্রয়োগ করে। যৌতুক দিতে অস্বীকার করায় প্রায়ই তাকে নির্যাতন সইতে হতো।

রবিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাতে যৌতুক হিসেবে বাবার বাড়িটি লিখে দেবার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন শ্বশুড়সহ তার স্বজনেরা। অস্বীকার করায় শ্বশুড় হবিবর রহমান ও দুই জা’সহ বাড়ির অন্যান্যরা তাকে মারপিট করে। এক পর্যায়ে বটি দা দিয়ে নার্গিসের চুল কেটে দেয়া হয়।

নার্গিসের স্বামী শফিকুল ইসলাম বলেন, ভালবেসে নিজের পছন্দের মেয়েকে বিয়ে করার কারণেই তার বাবা তার উপর ক্ষুব্ধ। এ কারণে তাদের উপর প্রায়ই নির্যাতন চালায় বাবাসহ পরিবারের অন্যান্যরা।

উধুনিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল বলেন, নার্গিসের শ্বশুড়বাড়ীর পাশে বাবা ইব্রাহিমের একটি বাড়ি রয়েছে। যৌতুক হিসেবে সেটি লিখে দেয়ার জন্য দীর্ঘদিন ধরেই চাপ প্রয়োগ করছে হাবিবুর রহমান। বাড়িটি লিখে না দেয়ায় মাঝে মধ্যেই নার্গিস ও তার স্বামী নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এমনকি নিজের ছেলের বিরুদ্ধে ডাকাতির মামলাও দায়ের করেছিলেন হাবিবুর।

এসব বিষয় নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে শালিসী বৈঠকও হয়েছে। কিন্তু হাবিবুর কোন বিচার মানেন না। উল্লাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক কুমার দাস বলেন, পুত্রবধুকে নির্যাতনের বিষয়টি জানতে পেরেছি। ওই গৃহবধু হাসপাতালে রয়েছেন বলে জেনেছি। তিনি সুস্থ্য হয়ে ফিরে এসে অভিযোগ করলে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০ at ২০:৪০:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এআর/এমএএস