আম্পানে সড়কে উপড়ে পড়া গাছের গুড়ি অপসারণ হয়নি আজও

চৌগাছার গুরুত্বপূর্ণ সড়কসহ গ্রামাঞ্চলের সড়ক গুলোর পাশে এখনও পড়ে আছে ঘূর্ণিঝড় আম্পানে উপড়ে ও ভেঙ্গে পড়া বিশাল বিশাল গাছের গুড়ি। ঘটনার পরপরই স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের উদ্যোগে ও এলাকাবাসি স্বেচ্ছায় সড়ক থেকে গাছ কেটে চলাচলের উপযোগী করেন।

তবে এখনও বেশ কিছু সড়কের চলাচলের অংশে গাছের গুড়ি আগের মতই পড়ে থাকায় ঝুঁকি নিয়ে চলতে হচ্ছে পথচারীসহ সব ধরনের যানবাহনের। এলাকাবাসি সরকারী এই গাছ দ্রুত অপসারনের জন্য সংশ্লিষ্ঠদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

২০ এপ্রিল উপকুলীয় জেলা গুলোর মত যশোর জেলার সীমান্তবর্তী উপজেলা চৌগাছাতে তান্ডব চালায় ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় আম্পান। মারা যায় মা ও মেয়ে, তছনছ হয়ে যায় বসতবাড়ি, ব্যাপক ক্ষতি হয় কৃষকের উঠতি ফসলের আর বৃক্ষ তরুলতার। প্রায় সাড়ে চার মাস অতিবাহিত হলেও সেই ঝড়ের তান্ডব আজও ভুলতে পারেনি এ জনপদের সব বয়সের মানুষ। মুহুর্তের মধ্যে নিজের চোখের সামনে সব কিছুই হয়ে যায় এলোমেলো।

আম্পানে উপজেলার প্রতিটি সড়কের উপর উপড়ে ও ভেঙ্গে পড়ে বড় বড় গাছ গাছালি। ঝড়ের পরের দিন বিভিন্ন এলাকার জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসির নিজ উদ্যোগে সড়কের উপরে পড়ে থাকা গাছ সরিয়ে কোন রকম চলাচলের উপযোগী করেন। কিছু কিছু এলাকার সড়কের পাশের বিশাল আকৃতির গাছের ডালপালা কেটে চলাচলের উপযোগী করা হয়, তবে প্রধান গুড়ি পড়ে থাকে পাকা সড়ক গুলোর অর্ধেক জায়গা নিয়ে। ঘূর্ণিঝড়ের সাড়ে চার মাস পার হতে যাচ্ছে অথচ আজ পর্যন্ত সেই গাছ অপসরণ করা হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। সড়কর বেশির ভাগ জায়গা নিয়ে গাছ পড়ে থাকায় ঝুঁকি নিয়ে চলতে হচ্ছে সকলকে।

এমনই একটি ঝুঁকিপূর্ণ সড়ক হচ্ছে চৌগাছা-কোটচাঁদপুর সড়ক। আম্পানে অন্য সড়ক গুলোর মত এই সড়কও গাছে গাছে ঢাকা পড়ে যায়। পরের দিন গাছ ও গাছের ডালপালা পরিস্কার করে চলাচলের উপযোগী করেন এলাকাবাসি। তবে আজও বেশ কিছু স্থানে বিশাল আকৃতির গাছের সেই গুড়ি সড়ক জুড়ে পড়ে আছে। সড়কটির মুক্তদাহ মোড় পার হলে এই দৃশ্য দেখা মেলে। একই অবস্থা হাকিমপুর ইউনিয়নের স্বরুপপুর এলাকাতেও। গতকাল সরেজমিন দেখা যায়, গাছের বিশাল গুড়ি পাকা সড়কের বেশির ভাগ জায়গা জুড়ে পড়ে আছে। স্থানীয়রা গাছের ডালপালা কেটে সড়কটি চলাচলের উপযোগী করেন। ঝড়ের পর দীর্ঘ সময় পার হলেও আজও গাছের গুড়ি গুলো সরিয়ে নেয়া হয়নি।

পথচারী শফিকুল ইসলাম বলেন, প্রতি নিয়ত তিনি এই সড়ক দিয়ে চলাচল করেন। সড়কের বেশি জায়গা নিয়ে ওই গাছ পড়ে থাকায় ছোট খাটো দূর্ঘটনা লেগেই আছে। ঝুঁকি নিয়ে সকলকে চলাচল করতে হয়। এলাকাবাসী জানান, যে সব গাছ সড়কে পড়ে আছে তা হচ্ছে জেলা পরিষদের। সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষ এই সব দেখে গেছেন কিন্তু আজও সরিয়ে নেয়ার কোন ব্যবস্থা করেনি। যার কারনে পথচারীসহ সব ধরনের যানবাহন চালককে ঝুঁকি এই সড়কে চলাচল করতে হচ্ছে।

হাকিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসুদুল হাসান বলেন, ঝড়ের পরে বেশ কয়েক দিন নিজ উদ্যোগে সড়ক থেকে গাছ সরিয়ে চলাচলের উপযোগী করা হয়। ডাল পালা সরিয়ে ফেলা হলেও গাছ ও গুড়ি কিন্তু পড়ে আছে। দীর্ঘ সময় পার হলেও কর্তৃপক্ষ এই গাছ অপসারনের কোন উদ্যোগ নেয়নি। এতে মানুষের দূর্ভোগ বাড়ছে। এ বিষয়ে জানার জন্য জেলা পরিষদের সদস্য দেওয়ান তৌহিদুর রহমানের ০১৭১১৩৬৩৬৯৮ নম্বর মোবাইলে ফোন দিলেও তিনি রিসির্ভ করেননি।

০৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০ at ২১:১৭:২৬ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এমআই/এনএফটি