ফারইস্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা ও অনিয়মের অভিযোগ

ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানীর রাজশাহী সার্ভিস সেন্টারের ভাইস প্রেসিডেন্ট (উন্নয়ন) মফিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা, ক্ষমতার অপব্যবহার ও নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। তার ভয়ে ফারইস্টের রাজশাহী কার্যালয়ের অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নির্বিঘ্নে কাজ করতে পারেন না। চাকরিচ্যুতি ও বদলির হুমকি দেয়াসহ নানা হয়রানি করে থাকেন অধ্বস্তন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের।

একটু ভালো থাকার জন্য ভবিষ্যৎ সঞ্চয়ের আশায় আর বীমা কোম্পানির লোভনীয় চটকদার কথায় বিশ্বাস করে খালেদ হাসান পলিসি নং- ০৬০০০১৬৯৭৩, শহিদুল ইসলাম পলিসি নং- ০৬০০০২১৬৫১, মাহাবুবুল হক পলিসি নং- ০৬০০০২৩৫৯২, শফিকুল ইসলাম পলিসি নং-০৬০০০২৯৪৭৪, আইয়ুব আলীসহ পলিসি নং- ০৬০০০২০৭০৩ আরো অনেকে বিভিন্ন মেয়াদে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানী রাজশাহী অফিসে বীমা প্রকল্পের গ্রাহক হন। এক বছর আগে তাদের বীমার মেয়াদ শেষ হয়েছে।

এরপর প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ বীমা দাবির জন্য আবেদন করেন কোম্পানিটিতে। বাংলাদেশ বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষর (আইডিআরএ) আইন অনুযায়ী বীমা শেষ হওয়ার সর্বোচ্চ ৯০ দিনের মধ্যে গ্রাহকগণকে তাদের বীমা দাবির অর্থ পরিশোধ করতে হবে। তবে বছর পেরিয়ে গেলেও তারা বীমা দাবির অর্থ পাচ্ছেন না। গ্রাহকেরা বীমা দাবির অর্থ না পাওয়ার ক্ষেত্রে মফিজুল ইসলাম অনেকাংশে দায়ী বলে মনে করছেন তারা। অথচ রাজশাহী-নওগাঁর দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভাইস প্রেসিডেন্ট মফিজুল ইসলাম প্রধান কার্যালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নাম ভাঙ্গিয়ে দুর্নীতির মাধ্যমে এরইমধ্যে কোটি টাকার মালিক হয়ে গেছেন।

এদিকে বীমা দাবীর টাকা না পেয়ে মাঠকর্মীদের ওপর ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা। প্রায়ই গ্রাহকদের মারধর ও নাজেহালের শিকার হচ্ছেন কোম্পানিটির বীমাকর্মীরা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বীমাকর্মীরা অভিযোগ করে বলেন, বীমা গ্রাহকরা টাকার জন্য আমাদেরকে চাপ দিচ্ছেন। ক্ষুব্ধ এসব গ্রাহক আমাদেরকে মারধর পর্যন্ত করেছে। তারা বলেন, মানুষ কাজ করে জীবন-জীবিকার জন্য, একটু ভালো থাকার জন্য। কিন্তু ফারইস্ট লাইফে কাজ করে এখন আমাদের পরিবার নিয়ে পালানোর উপক্রম। রাস্তায় বের হতে পারি না, গ্রাহকরা টাকার জন্য ঘিরে ধরে। আমাদের পরিবারের লোকজনও এর শিকার হচ্ছেন। মেয়াদপূর্তির পর গ্রাহকের টাকা ফেরত না দেয়ায় কোম্পানির রাজশাহী অফিসের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার ধর্ণা দিয়েও কাজ হচ্ছেনা, বরং আমাদের বিভিন্ন ভাবে ভয়-ভীতি দেখানো হচ্ছে।

তারা অভিযোগ করে বলেন, আমাদের অফিসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মফিজুল ইসলামের স্বেচ্ছাচারিতা, অস্বচ্ছতা, অবহেলা এবং দুর্নীতির কারণে সুনাম অর্জনকারী ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্সুরেন্সের রাজশাহী অফিসটি আজ দুর্নামে জর্জরিত হয়ে পড়েছে। অথচ তিনি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনেছেন।

সূত্র জানায়, চাপাঁইনবাবগঞ্জ পৌরসভার ১০ নং ওয়ার্ডের হেলালপুর টিকটিকিপাড়ার নামোশংকরবাটি এলাকার নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান হয়েও শুধুমাত্র একটি লাইফ ইন্স্যুরেন্সের কর্মকর্তা হয়ে রাজশাহী নগরীর উপশহর এলাকায় অবস্থিত ২৩২/২ নং একটি বহুতল ভবনে প্রায় ১ কোটি শেয়ারে নির্মাণ করেছেন মফিজুল ইসলাম ইসলামসহ কয়েকজন। এছাড়া নামে বেনামে রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে বহু সম্পদ গড়েছেন। এ নিয়ে খোদ নিজ এলাকা এবং নিজ দফতরে নানা জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে।

নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানায়, বিকেলে অন্যসব কর্মকর্তা-কর্মচারীর অফিস সময়সূচি শেষ হলেও মফিজুল ইসলামের অফিস শেষ হয়না। একজন অবিবাহিত নারী কর্মকর্তাকে সাথে নিয়ে তিনি প্রায় দিন রাত ১১টা পর্যন্ত অফিস করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে অফিসের অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে অনেক দিন ধরেই বিভিন্ন ধরণের গুঞ্জন চলছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্সুরেন্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং রাজশাহী ও নওঁগা অফিসের নির্বাহী কর্মকর্তা মফিজুল ইসলাম সব অভিযোগ অস্বীকার করলেও নিউজ না করার জন্য বিভিন্ন মাধ্যমে তদ্বির শুরু করেন। ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্সুরেন্সর ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং নওগাঁ অফিসের নির্বাহী কর্মকর্তা মফিজুল ইসলামের আরো গুরুত অভিযোগ জানতে আরেক পর্বের নিউজ শীঘ্রই প্রচারিত হবে চোখ রাখুন।

২ সেপ্টেম্বর, ২০২০ at ১৯:১৯:৪৯ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এমআরআর/এনআফটি