গাইবান্ধার রেলওয়ে স্টেশনটি দীর্ঘ ২০ বছর বন্ধ

গাইবান্ধার ভরতখালী রেল স্টেশনটি দীর্ঘ ২০ বছর ধরে বন্ধ থাকায় এতদঞ্চলের যাত্রীদের ট্রেনে যাতায়াত ও মালামাল পরিবহনে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

উল্লেখ্য, বৃটিশ আমল থেকে ভরতখালি রেলওয়ে স্টেশনটি ছিল এতদঞ্চলের একটি ব্যস্ততম রেলস্টেশন। এই স্টেশন ছিল তিস্তামুখঘাট রেলওয়ে ফেরীঘাটের পরবর্তী অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ রেলওয়ে স্টেশন। যে কারণে এই রেলওয়ে স্টেশনের গুরুত্ব ছিল অনেক বেশী।

ফুলছড়ি উপজেলার তিস্তামুখ রেলওয়ে ফেরিঘাট বন্ধ হওয়ায় এ রেলওয়ে স্টেশনটিও একপর্যায়ে বন্ধ করে দেয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। বোনারপাড়া জংশন ও তিস্তামুখ ঘাটের মাঝখানে অবস্থিত ভরতখালী রেলওয়ে স্টেশন।

এতে একদিকে ওই এলাকার যাত্রীসহ হাজারো কর্মজীবী মানুষ যেমন বেকার হয়েছে, অন্যদিকে রেলওয়ের প্রায় কোটি কোটি টাকার সম্পদ এবং বোনারপাড়া জংশন ভরতখালী হয়ে সাবেক তিস্তামুখঘাট পর্যন্ত বসানো রেললাইনটিও দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এছাড়া চুরি হয়ে যাচ্ছে মূল্যবান রেলওয়ের লোহার পাত। কিন্তু সেদিকে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের কোন নজর নেই।

রেলওয়ে সুত্র জানায়, ঊনিশ শতকের প্রথমার্ধে তিস্তামুখ ঘাটে রেলওয়ে মেরিন বিভাগ প্রতিষ্ঠা হয়। রেলের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হতে থাকে যমুনা নদীর উপর দিয়ে রেলযাত্রী ও পণ্যবাহী ওয়াগন পারাপার। তৎকালিন তিস্তামুখঘাট, বাহাদুরাবাদ ঘাটের মধ্যে যাত্রী পারাপার ব্যবস্থা চালুর মাধ্যমে মেরিন বিভাগের কার্যক্রম শুরু করা হয়।

নব্বই দশকের মাঝামাঝি যমুনা ও ব্রহ্মপুত্রের নাব্যতা হ্রাস পাওয়ায় তিস্তামুখঘাটটি বন্ধ করে দেয় রেল কর্তৃপক্ষ। প্রায় ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে স্থানান্তরিত বালাসীঘাট চালুর পরপরই নির্মিত হয় বঙ্গবন্ধু সেতু। তখন থেকেই বন্ধ হয়ে যায় এ রুটটি।

তিস্তামুখ ফেরিঘাট বন্ধ ঘোষণা করায় তার সাথে এ রুটের ভরতখালী রেল স্টেশনটিও বন্ধ করে দেয়া হয়। সংযোগ বন্ধ ঘোষণা করে যাত্রী পারাপার ব্যবস্থার চুড়ান্ত ইতি টানা হলে রংপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারীর লোকজন যমুনার পূর্বপাড়ের জামালপুর, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, শেরপুরের বিশাল জনগোষ্ঠীর সাথে রেল যোগাযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়।

২৫ আগস্ট, ২০২০ at ১৬:৪৭:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এসকেবি/এমএএস