ধুতরা ফল বিষাক্ত হলেও আছে অনেক ঔষাধিগুন

গ্রাম বাংলার একটি অতি পরিচিত গাছ ধুতরা। এটি ভেষজ উদ্ভিদ। ধুতরা গাছের সমস্ত অংশই বিষাক্ত। প্রতি বছর বাংলাদেশে বহু লোক ধুতরা বিষে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। তবে ধুতরার গুনাগুনও আছে। ভেজষ চিকিৎসায় এর ব্যবহার আছে। ধুতরা বা ধুতুরা এর বৈজ্ঞানিক নাম ধুতরা মেটাল।

ধুতরা গাছে বর্ষাকালে ঘণ্টা আকারে ফুল হয়। ধুতরা গাছের ফুলের সৌন্দর্য অত্যন্ত আকর্ষনীয় ও মনরম। বর্ষকালে ধুতরা গাছে ফুল ফোটা শুরু হলেও হেমন্তকাল জুড়ে গাছে ফুল দেখা যায়। গাছের শাখা প্রশাখার অগ্রভাগে ফুল ধরে।

ধুতরা গাছের ফুলের সৌন্দর্য অত্যন্ত আকর্ষনীয় ও মনোরম।

দেখতে ঘণ্টার মত লম্বাকৃতির। সাদা জাতের গাছে সাদা ফুল আর কালো জাতের গাছে সাদা-বেগুনি মিশ্র রঙের ফুল ফোটে। উধ্বমুখি ফুল ফোটে। ফুলে মৃদু গন্ধ আছে। পড়ন্ত বিকাল থেকে সন্ধ্যায় গাছে ফুল ফোটে। দিনের আলোয় ফুল সংকুচিত হয়। সন্ধ্যায় আবার পাপড়ি মেলে।

ধুতরার ফল নাড়ুর মত গোল দেখতে। ফলের চারিদিকে ছোটছোট কাটা থাকে। ফল পাকলে ফেটে যায়। ধুতরা গাছের অপর নাম কণ্টকফল। কোন পশু-পাখি এই গাছের পাতা, ফল, ফুল খায় না। ধুতরা প্রচলিত মতে গাছের সমস্ত অংশেই আছে বিপদজনক মাত্রার বিষ। এর ডালপালা, শিকড়, ফুল ,পাতা সবই বিষাক্ত। নাকে গন্ধ নিলেও নাকি পাগল হয়ে যেতে হব। ট্রেনে-বাসে অচেতন করে যাত্রীদের সব কিছু হাতিয়ে নেয়ার জন্য ধুতরা ছিল অবধ্য।

তাই অজ্ঞান পার্টির কাছে ধুতরা ব্যবহারে কদর ছিলো। এর বিষক্রিয়ায় মানুষ বা পশুপাখির মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

ধুতরা একটি গুল্ম জাতীয় গাছ। এশিয়া মহাদেশের প্রায় সব জায়গাতে ধুতরা গাছ দেখা যায়। দুই জাতের ধুতরা গাছ দেখা যায়, সাদা ও কালো। ধুতরা একটি বিষাক্ত গাছ তা সবার জানা। কিন্তু ধুতরার উপকারিতা সম্পর্কে বেশীর ভাগ মানুষের অজানা। ধুতরার ফুল, ফল, পাতা, শিকড়, কাণ্ড সব কিছুতে উপকারিতা রয়েছে।

ধুতরা পাতায়; কৃমি, টাক, ঘাড় ও পিঠের ব্যাথা ভাল হয়, ফুলে; উন্মাদনা জনিত সমস্যা, পাগলা কুকুর ও শিয়ালে কামড়ালে, গলা ব্যথা ভালো হয়, কণ্টক ফল তেলে; ছলি, পা ফাটা, কানে যন্ত্রণা, ফোড়া, বাত বা গিটের ব্যথা হলে নিরাময় হয়।

ধুতরা গাছটি খুবই বিষাক্ত। ব্যবহারের নিয়ম না জানলে হাত না দেওয়ায় ভালো। তাই সতর্কতার সহিত ব্যবহার করতে হব। খুব অভিজ্ঞতা না থাকলে ব্যবহার না করাই উত্তম।

তথ্য সংগ্রহে: ইমদাদুল হক, পাইকগাছা, খুলনা।