যশোর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে কিশোরের মৃত্যু, পরিবারের দাবী পরিকল্পিত হত্যা

যশোরের কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে শিবগঞ্জের কিশোর নাঈম’র অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। মৃত্যুর পর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্র দাবি করছে, কিশোর নাঈম নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে মারা গেছে। তবে কিশোর নাঈমের পরিবারের অভিযোগ, কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্র নির্যাতন করে তাদের হত্যা করা হয়েছে।

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে যশোর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রের সহকারি পরিচালকসহ ১২ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেনের কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানাগেছে। ওই কেন্দ্রে গত বৃহস্পতিবার বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার নান্নু প্রামাণিকের ছেলে নাঈম হোসেনর মৃত্যু হয়।

উপজেলার তালিবপুর গ্রামের কিশোর নাঈম হোসেন তার সাত বছর বয়সী আপন চাচাতে বোনকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলার আসামি সে। এই মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত বছরের ২৯ জানুয়ারি শিবগঞ্জের তালিপুরে ধর্ষণের পর শিশু সাদিয়া খাতুনকে (৭) ছুরি দিয়ে জবাই করে হত্যা নিশ্চিত করে তারই আপন চাচাতো ভাই নাঈম হোসেন (১৭)। পরে তাকে পাশের আলু ক্ষেতে ফেলে পালিয়ে যায় নাঈম।

এ ঘটনায় গত বছরের ৩০ জানুয়ারি মামলা হয়। ওই দিনই তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাকে আদালতে পাঠানো হয়। এই মামলায় গ্রেপ্তার নাঈম বগুড়ার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। বয়স ১৮ বছরের কম হওয়ার বিচারক তাকে যশোরের কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়।

সংবাদ মাধ্যমের খবরে নাঈমের পরিবার জানতে পারেন, নাঈম কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে মারা গেছেন। কিন্তু পরিবারের দাবি নাঈমকে সেখানে হত্যা করা হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে নাঈমের মা শান্তনা বেগম জানান, আমার ছেলে মারামারি করে মারা যায়নি। তাকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে, আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।

তবে কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে তিনজন মারা যাওয়ার পর পুলিশ জানায়, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে বন্দি কিশোরদের দুই গ্রুপের মধ্যে কথা কাটাকটি হয়। এরই জেরে রড ও লাঠিসোটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে তারা। এতে মারাত্মক জখম হয় বেশ কয়েকজন। তাদের উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক নাঈমকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ বিষয়ে সংশোধনাগারের প্রশিক্ষক মুশফিক বলে আসছেন, কয়েকদিন আগে সংশোধনাগারে কিশোরদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হয়। ওই ঘটনার জের ধরে বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার পর থেকেই সংঘর্ষের সূত্রপাত। বাঁশ, লাঠি-সোটা এবং পরিত্যক্ত জিনিজপত্র নিয়ে তারা সংঘর্ষে জড়ায়।

যশোর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক অমিয় দাস গণমাধ্যমকে বলেন, কিশোরদের গায়ে আঘাতের চিহ্ন ছিল। তবে কি কারণে মারা গেছে তা ময়নাতদন্ত রিপোর্টের পর নিশ্চিত হওয়া যাবে।

দেশদর্পণ/আক/এএ/এমএএস