নওগাঁয় ক্লিনিকে চিকিৎসকের ভূলে দুইবার অপারেশন করায় মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছে রোগী

নওগাঁয় হাসপাতালের সার্জারী বিশেষজ্ঞ ডাক্তার মুক্তার হোসেন পাইলস রোগী আসমা খাতুন (২৫)কে ভুল করে পিত্তথলী পাথরের অপারেশন করার অভিযোগ উঠেছে। পুনরায় আবারও পাইলস অপারেশন করায় মৃত্যুর সাথে আসমা এখন পাঞ্জা লড়ছে। ঘটনাটি ঘটেছে শহরের প্রাইম ল্যাব এন্ড জেনারেল হাসপাতালে।

আসমা খাতুন জেলার বদলগাছী উপজেলার কাষ্টডোব গ্রামের হাবিবুর রহমানের কন্যা ও ২ সন্তানের জননী বলে জানা গেছে। রোগীর ভাই আতোয়ার রহমান জানান, তার বোন আসমা খাতুন পাইলসের রোগী। তাকে আপারেশন করার জন্য ১২আগস্ট দুপুরে ভর্তি করান শহরের প্রাইম ল্যাব এন্ড হাসপাতালে। ওই দিন ১টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত নওগাঁ হাসপাতালের সার্জারী বিশেষজ্ঞ ডাক্তার মুক্তার হোসেন ওই হাসপাতালের অজ্ঞান বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ও ক্লিনিকের স্বত্বাধিকারী ডাক্তার ইসকেন্দার হোসেন আসেন অপারেশন থিয়েটারে। সেখানে ছিল ৩জন পিত্তথলীতে পাথরের রোগী এবং আসমা খাতুন ছিল পাইলসের অপারেশনের রোগী।

আরও পড়ুন:
যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে সংঘর্ষে তিন কিশোর নিহত
লালপুরে ২৮৩ পিচ ইয়াবাসহ আটক-১

সেখানে ভূল করে তাকে পিত্তথলীতে পাথরের জন্য অপারেশন কার্যক্রম শুরু করেন। আসমা খাতুন বাধা দিলেও ডাক্তার কোন কথা না শোনে অজ্ঞান করে কেটে দেখে পিত্তথলীতে পাথর নাই। পরে সেলাই করে ৬তলার ১৫নং কেবিনের বেডে নিয়ে আসে। পরে ৩ রোগীকে পিত্তথলীর অপারেশান করার পর পাইলস রোগী না পেয়ে অনেক খোঁজাখুজির পর আবারও আসমা খাতুনকে নিয়ে পুনরায় পাইলস অপারেশন করে। একই ব্যক্তিকে দুটি অপারেশন করায় বর্তমানে রোগী মুত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। বিষয়টি জানাজানি হলে ক্লিনিকের মালিক ইসকেন্দার ও মুক্তার হোসেন পালিয়ে যান। রোগীর তেমন কোন চিকিৎসা হচ্ছে না বলে জানান রোগীর স্বজনরা।

এ বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তদন্ত পূর্বক ডাক্তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানান তারা। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা কোন ফোন রিসিভ করে নাই। এ বিষয়ে নওগাঁর সিভিল সার্জন ডা: আ.ম. আখতারুজ্জামান আলালের সাথে কথা বললে তিনি ঘটনাটি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান।

উল্লেখ্য, নওগাঁর শহরের হাসপাতাল রোডে প্রাইম ল্যাব লিঃ ২০শয্যার অনুমোদন নিয়ে ক্লিনিক চালু থাকলেও প্রকৃতপক্ষে সেখানে ২০০শয্যা চালু আছে। কয়েক ডজন সুন্দরী নার্স থাকলেও হাতে গোনা ২/১ জন ডিপ্লোমা ধারী নার্স আছে। প্যাথলজী বিভাগ থাকলেও প্যাথলজিষ্ট নেই। এক্সেরে মেশিন থাকলেও বিধি সম্মত অনুমোদন নেই। এক কথায় কোন নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে এই ক্লিনিকটি তার কার্যক্রম চালিয়ে প্রতিনিয়ত দূর্ঘটনা ঘটিয়ে আসছে। ক্লিনিকের স্বতাধিকারী ডাক্তার ইসকেন্দার হোসেন নওগাঁর সদর আধুনিক হাসপাতালেই কয়েক যুগ কাটিয়ে দিলেন কিন্তু তিনি কোথাও বদলি হন না। অপরদিকে ক্লিনিকের পাশাপাশি চলছে নামমাত্র অনুমোদন নিয়ে নাসিং ইনষ্টিটিউট। ওই ইনষ্টিটিউট নার্সদের শিক্ষা দেওয়ার মত কোন ডাক্তার নেই। এত কিছু হবার পর ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কারো কোন নজরদারি নেই। এলাকাবাসী জরুরী ভিত্তিতে ক্লিনিকের কার্যক্রম তদন্ত পূর্বক বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য জোর দাবি জানিয়েছেন।

আগস্ট ১৩, ২০২০ at ২২:৫৩:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এমএআর/তআ