কমছে পানি, বাড়ছে নতুন দুর্ভোগ

দেশে বন্যা পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি হচ্ছে। কমতে শুরু করেছে পানি, বাড়ছে নতুন দুর্ভোগ। ঘরে এখন বেড়া, মাথার ওপর চাল, খাবার, ওষুধ কিছুই নেই বন্যার্তদের। গরু-ছাগল, পুকুরের মাছ, ক্ষেতের ফসল সব ভেসে গেছে। আয়-রোজগার বন্ধ। সব মিলিয়ে বন্যার্তরা নিরুপায় হয়ে পড়েছেন। কুড়িগ্রাম, জামালপুর ও গাইবান্ধার বানভাসিরা জানিয়েছেন–এবারের বন্যায় আউশ ধান, আমনের বীজতলা ও সবজি ক্ষেত ভেসে গেছে। অনেকের বাড়িঘর পানিতে ডুবে আছে। হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগল নিয়ে বিপাকে পড়ে কম দামে বেচে দিয়েছেন কেউ কেউ।

জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার বেলাল মিয়া বলেন, পানি কমতে শুরু করায় ঘরে ফিরেছি। কিন্তু বাড়িতে বসবাসের কোনো উপায় নেই। ঘরের খুঁটির গোড়ার মাটি সরে গেছে। বেড়া পানিতে বিলীন। সব নতুন করে বানাতে হবে। কিন্তু হাতে তো কোনো টাকা-পয়সা নেই। মাঠের ফসল তলিয়ে গেছে। মাছের চাষ করেছিলাম, তাও ভেসে গেছে। হাঁস-মুরগি আগেই বেচে দিয়েছি। আয়ের কোনো পথই খোলা নেই। ঘর-দুয়ার ঠিক করবো কী দিয়ে তা ভেবে পাই না। বন্যার পানি কমলেও রোগবালাই দেখা দেয়ায় বিপদে আছি। ওষুধপত্র নিতে পারছি না টাকার অভাবে। ৫ আগস্ট সকাল থেকে পানি কমতে শুরু করায় পরদিন বাড়ি ফিরেছি। কিন্তু ঘরে থাকার তো কোনো উপায় নেই। বেশিরভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। তাছাড়া রোগ-ব্যাধি তো আছেই।

রোগ-ব্যাধি দেখা দেয়ার বিষয়টি নজরে আছে বলে জানালেন জামালপুরের সিভিল সার্জন ডা. প্রণয় কান্তি দাস। তার দাবি, বিভিন্ন উপজেলা থেকে সামান্য রিপোর্ট পাচ্ছি। তবে রোগবালাই এখনও প্রকট আকার ধারণ করেনি। আমরা প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। পর্যাপ্ত পরিমাণে ওরস্যালাইন সরবরাহ করেছি। এর বাইরে বিভিন্ন প্রকার চর্মরোগের ওষুধ রয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রের তথ্যানুযায়ী, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর পানি কমছে। এটি আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। গঙ্গা নদীর পানি স্থিতিশীল রয়েছে। পদ্মা নদীর পানিও কমছে, যা আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উজানে মেঘনা অববাহিকায় প্রধান নদীর পানি কমছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। রাজধানীর আশপাশের নদীগুলোর পানি স্থিতিশীল রয়েছে, যা আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।

০৭ আগস্ট, ২০২০ at ২০:৪৬:০২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/ভোকা/তআ