নওগাঁর সীমান্তবর্তী ৩ উপজেলায় খামারীরা গবাদী পশু নিয়ে হতাশা

প্রতিবছর কোরবানীর ঈদ মৌসুমে সীমান্তবর্তী সাপাহার উপজেলা দিয়ে বানের পানির মত ভারত থেকে গবাদী পশু আসলেও এবারে ব্যতিক্রম ঘটেছে । বর্তমানে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি ও ভারতীয় বিএসএফ’র কঠোর নজরদারীতে গবাদি পশু আমদানী বন্ধ থাকলেও এলাকার খামারীরা তাদের পালিত গবাদি পশু নিয়ে দারুন বিপাকে পড়েছে। বৈশ্বিক করোনা মহামারী ও বন্যার কারণে এবারে কোরবানী দাতার সংখ্যা কমে গেছে । খোলা মেলা ভাবে পশুর হাট না বসলেও যে টুকু সময় নিয়ে হাট বসছে সেখানে গরু ছাগল বিক্রেতার তুলনায় ক্রেতার সংখ্যা একেবারে নগন্য বললেই চলে।

দেশের সীমান্ত ঘেঁষা সাপাহার, পোরশা ও নিয়ামতপুর উপজেলার সাধারণ খামারীদের পাশাপাশি অনেক দরিদ্র পরিবারের লোকজন লাভের আশায় অন্তত দু’একটি করে পশু পালন করেছিলেন। তাদের ধারণা সারা বছর গরু পালন করে কোরবানীর সময় হয়ত একটু লাভের মুখ দেখবেন। এখন তাদের সে আশায় গুড়ে বালি। সাধারণ খামারীদের পাশাপাশি তারাও লোকশানের মুখে পড়ে হতাশায় ভুগছেন। তিনটি উপজেলার প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তাগনের নিকট থেকে জানা গেছে সাপাহার উপজেলায় ছোট বড় ৩ হাজার টি খামারে কোরবানীর জন্য প্রায় ১৪হাজার ৬৮২টি গরু প্রস্তুত রয়েছে, এছাড়া পোরশা ও নিয়ামত উপজেলায় ৩হাজার৪১২টি খামারে রয়েছে ১৮হাজার ৭১২টি গরু।

যা এই তিন উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে অর্ধেকের চেয়েও বেশী প্রাণী জেলার বাইরে পাঠানো যাবে। এরই মধ্যে আনেকেই কোন রকমে খরচ সহ তাদের আসল দামেই গরু বিক্রি করছেন। অনেকে আবার কিছু লোকশান করে তাদের পোষা গরু বিক্রি করছেন। এছাড়া বাজার মুল্যে কম থাকায় অনেকে পরবর্তীতে লাভের আশায় তাদের গরু খামারেই রেখে দিচ্ছেন।

চলতি বছর গরু পালনকারী খামারীরা যে ভাবে লোকশানের মুখে পড়েছে তাতে করে গরু পালন পেশা টি আগামীতে হুমকীর মুখে পড়বে বলে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. আশীষ কুমার দেবনাথসহ অনেক খামারীরা জানিয়েছেন।

এজন্য ভবিষ্যতে তারা গবাদী পশু পালন ও খামার টিকিয়ে রাখতে সরকারের পক্ষ থেকে সরাসরি খামারীদের জন্য প্রণোদনা সহযোগীতা কামনা করেছেন। এছাড়া দেশে কৃষি দপ্তরে যে রকম কৃষি বিপণন উইং রয়েছে এ অঞ্চলের প্রাণীসম্পদের এনিম্যাল বিপণন উইং খোলার জন্য খামারীগণ সরকারের নিকট আকুল আবেদন জানিয়েছেন।