“বাবার কাঁধে পুত্রের লাশ সত্যিই খুবই হৃদয়বিদারক দৃশ্য বা ঘটনা”। নারায়নগঞ্জের সিনিয়র সাংবাদিক মোঃ সেকান্দার মাস্টারের নিখোঁজ বুদ্ধি প্রতিবন্ধি পুত্র জুম্মানের লাশ অবশেষে উদ্ধার করা হয়েছে শীতলক্ষ্যা নদী থেকে।
উল্লেখ্য, গত ৮ জুলাই বাসা থেকে রাগ করে বেড়িয়ে যায় জুম্মান। তবে বাসায় আর জীবিত ফেরা হলো না তার, ফিরেছে সে লাশ হয়ে। দু’দিনের মাথায় ১০ জুলাই শহরের ৩নং মাছঘাট এলাকার শীতলক্ষ্যা নদী থেকে তার লাশ উদ্ধার করে নারায়নগঞ্জ নৌ-থানা পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) হাফিজুর রহমান। তিনি লাশটি মর্গে পাঠিয়ে একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেন সদর মডেল থানায়। এই লাশ উদ্ধারের ঘটনা নিখোঁজ জুম্মানের বাবা-মা বা পরিবারের কাউকেই অবহিত করেনি সদর মডেল থানা পুলিশ।
এদিকে নিখোঁজ ছেলেকে হন্যে হয়ে অনেক খোঁজাখুঁজি করেছেন পরিবারের সদস্যরা। এ মর্মে নারায়নগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি সাধারন ডায়েরিও করেছেন তার পিতা মো. সেকান্দার মাস্টার।
সিনিয়র সাংবাদিক সেকান্দার আলী মাস্টার দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে বলেন, আমার ছোট মেয়েটি জানতে চেয়েছিল সদর থানায় একটি লাশ উদ্ধার হয়েছে শুক্রবার। ভাইয়ের সন্ধানে সদর থানায় গেলে ডিউটি অফিসার রোকসানা আমার মেয়েকে তাড়িয়ে দেয়। ফলে আমরা ছেলের মৃত্যুর খবর পাইনি। আমি সদর মডেল থানা পুলিশের এমন অমানবিক আচরনের বিচার চাই।
শনিবারও আমি জিডির সাথে ছেলের একটি ছবি দিয়ে আসি ফতুল্লা মডেল থানায়। রোববার আমার মেয়ে খবর পায় শহরের জিমখানায় একটি লাশ উদ্ধার হয়েছে। আমি সেখানে যাচ্ছিলাম, এমন সময় মেয়ের জামাই ফোনে জানায় জুম্মানের লাশ পাওয়া গেছে। আমরা ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে যাই, সেখানে গিয়ে লাশ শনাক্ত করি। আরেকটু দেরী হলেই আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলাম বা অন্য সেচ্ছাসেবী সংগঠন এসে বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে দাফন করে ফেলত।
তিনি আরও বলেন, শুক্র ও শনি দু’দিন অফিস বন্ধ থাকায় লাশ মর্গে রেখেছিল, লাশ ফুলে গিয়েছিল, আঘাতের চিহ্ন ছিল। নৌ থানা পুলিশের এস আই হাফিজুর রহমান লাশের সুরতহাল করেছে। লাশ পোস্ট মর্টেম করা হয়েছে। নিজের কাঁধে লাশ নিয়ে আমার হারিয়ে যাওয়া ছেলে জুম্মানের লাশ দাফন করেছি। কি বলব? আমার ভাষা নাই। তবে দুঃখ অনেক। কেউ একটু খোঁজও নেয়নি। তবে নারায়ণগঞ্জ সদর থানার অপদার্থ পুলিশকে জানাই ধিক্কার, ওদের জন্যই আমার ছেলের লাশ বেওয়ারিশ হিসাবে দাফন হতে যাচ্ছিল। আমার ছোট মেয়েটা তার ভাইয়ের খোঁজে থানায় গিয়ে খবর জানতে গেলে তার সাথে অমানবিক আচরন করেন ডিউটি অফিসার রোকসানা। আমি একজন গনমাধ্যম কর্মী হয়ে কোনপ্রকার সহযোগীতা পাইনি।
এদিকে রোববার আমলাপাড়া বড় মসজিদে বাদ আসর নামাজে জানাজার পর মাসদাইর কবরস্থানে জুম্মানের লাশ দাফন করা হয়।
জুলাই ১৩, ২০২০ at ২১:৩৭:১৬ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/সক/এমএআর